প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশ দাঁড়াচ্ছে :
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন এবং সানজামুল ইসলাম।
তিন পেসার দুই স্পিনার নিয়ে নামছে বাংলাদেশ
পরিবর্তিত পরিস্থিতি, পরিবেশ, আবহাওয়া, কনকনে ঠান্ডা এবং ঘন কুয়াশার কারণে ত্রিদেশীয় সিরিজে টিম কম্বিনেশন কেমন হবে তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। আগেই জানা গেছে, ইমরুল কায়েস প্রথম ওয়ানডে খেলতে পারছেন না।
তার পরিবর্তে তামিমের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করবেন এনামুল হক বিজয়। আর তিন নম্বরে অর্থাৎ ওয়ানডাউনে ব্যাট করবেন সাকিব আল হাসান। বিকেলেই অধিনায়ক মাশরাফি এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছিলেন, ঘন কুয়াশা এবং শিশির ভেজা উইকেটের কারণে হয়তো চার পেসার নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
কিন্তু প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই পুরনো ফর্মুলায় ফিরে যাচ্ছে টিম বাংলাদেশ। এই ক’দিন শোনা গিয়েছিল হিমশীতল আবহাওয়া, ঘন কুয়াশার কারণে বাংলাদেশের লক্ষ্য পরিকল্পনা ও লাইনআপে রদবদল ঘটতে পারে। জোর গুঞ্জন ছিল সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নাসির হোসেন এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে স্পিন বিকল্প ধরে চার পেসার নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
তবে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই শেষ পর্যন্ত ওই পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে যাচ্ছে মাশরাফিরা। আজ (রোববার) রাতে টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মাঠে নামবে সাত ব্যাটসম্যান (তামিম, বিজয়, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির ও নাসির) ও তিন পেসার এবং এক স্পেশালিস্ট স্পিনার নিয়ে।
তাহলে একাদশে আসছেন কারা? পেসারের কোটায় অধিনায়ক মাশরাফি অটোমেটিক চয়েজ। সঙ্গে নিজেকে খুঁজে ফিরলেও কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ থাকবেন অনিবার্যভাবেই। বিপত্তি বেধেছে থার্ড সিমার কে, তা নিয়েই। ভাবা হচ্ছিল শিশির ভেজা আবহাওয়ায় আবুল হোসেন রাজু কিংবা সাইফুউদ্দিনদের যে কেউ একজন কিংবা দু’জন খেলবেন; কিন্তু রোববার রাতে টিম মিটিংয়ের পর জানা গেল চমকপ্রদ তথ্য।
আবুল হোসেন রাজু কিংবা সাইফউদ্দিনের কেউই থাকছেন না। জিম্বাবুয়ের সাথে আগামীকাল (সোমবার) তিন জাতি ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে থার্ড সিমার হিসেবে খেলবেন অভিজ্ঞ রুবেল হোসেন।
বাঁ-হাতি সাকিব তো আছেনই। তার সঙ্গে একাদশে স্পিন স্পেশালিস্ট হিসেবে দেখা যাবে আরেক বাঁ-হাতি সানজামুল ইসলামকেও। জানা গেছে, জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপে ডানহাতি ব্যাটসম্যান বেশি থাকায় স্পিনারের কোটায় মিরাজের বদলে বাঁহাতি সানজামুলকে নেয়া হয়েছে। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান বেশি থাকলে মিরাজই হয়তো সাকিবের সঙ্গী হয়ে যেতেন।
টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্র আরও নিশ্চিত করেছে, জিম্বাবুয়েনেরা বরাবরই পেস বল ভালো খেলে। বাংলাদেশের মাটিতে শেষ আট ম্যাচের সবগুলোতে হেরে যাওয়া জিম্বাবুয়েকে বধ করতে স্পিনই অনেক কার্যকর অস্ত্র। তাই প্রচণ্ড শীত আর কুয়াশার মধ্যেও চার পেসার খেলানোর চিন্তা বাদ দিয়ে ক্রেমার বাহিনীকে হারাতে তিন পেসার ও দুই স্পিনার ফর্মুলায় মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এই সিরিজ দিয়েই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন এনামুল হক বিজয়। জাগো নিউজে আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল, তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে যাচ্ছেন বিজয়। জাগো নিউজের পাঠকরা আগেই আরও একটি বিষয় জেনে গেছেন। সেটা হচ্ছে, ওয়ানডাউনে খেলতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। আজ (রোববার) বিকেলে সে তথ্য আবারও নিশ্চিত করে দিয়েছেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
বাংলাদেশ VS জিম্বাবুয়ে LIVE – প্রথম ম্যাচ সরাসরি দেখুন
তামিমের সঙ্গী বিজয়, তিন নম্বরে সাকিব
শেরে বাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আসরের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বিস্ময়কর হলেও সত্য, ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে একটি ওয়ানডেও খেলেনি মাশরাফির দল। ১৫ মাস পর ঘরের মাঠে প্রথম ওয়ানডে দিয়েই শুরু হচ্ছে টিম বাংলাদেশের ২০১৮।
নতুন বছর, নতুন আসর এবং নতুন টিম ম্যানেজমেন্ট। হাথুরুর বদলে দল গোছানোর দায়িত্ব পেয়েছেন সুজন। জিম্বাবুয়ে আর শ্রীলঙ্কার শক্তি-সামর্থ, গঠন শৈলি এবং তাদের গতি প্রকৃতির চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দল সাজানো থেকে শুরু করে লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। বেশ কিছুদিন পর এবার দলগঠনে নির্বাচকরা নিজেদের মতো করে দল সাজিয়েছেন।
অধিনায়ক মাশরাফির মতামতও যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়েছে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন ও অধিনায়ক মাশরাফি মিলেই সাজিয়েছেন প্রথম একাদশ। ১৫ জানুয়ারি প্রথম দিন জিম্বাবুয়ে বধের কৌশলও এঁটেছেন সুওজন মাশরাফি মিলেই। টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে তিন নম্বরে উঠে এসেছেন সাকিব আল হাসান।
আগেই জানা হয়েছে, তামিম ইকবালের সঙ্গে প্রথম দিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ওপেন করতে যাচ্ছেন এনামুল হক বিজয়। ওপেনিংয়ে তামিম একদিকে নিয়মিত ভালো খেলে রান করছেন। তার সঙ্গী হিসেবে কখনো ইমরুল, কোন সময় এনামুল হক বিজয় আবার কোন সময় সৌম্য বা লিটন কাজ চালিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তিন নম্বরে সে অর্থে কার্যকর পারফরমার নেই। তাই বেশ কিছু দিন ধরেই তিন নম্বর পজিশনটি নিয়ে চলছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
ওয়ানডে ক্রিকেটে যে সময়টাকে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বর্ন সময় বলা হয়, সেই সময়ও তিন নম্বর পজিশনই ছিল নড়বড়ে। নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ে যিনি তিন নম্বরে খেলেছেন বেশ কটি ম্যাচ, সেই লিটন দাস এবার ঘরের মাঠে তিন জাতি ক্রিকেটে দলেই নেই। ওদিকে ইমরুলও শতভাগ ফিট নন।
মাঝে ১৪ ম্যাচ ওয়ান ডাউন খেললেও সাম্প্রতিক ফর্মটা তেমন ভালো না। তাই সাব্বির রহমানকে তিন নম্বর থেকে নিচে খেলানো হচ্ছে। আর পাঁচ থেকে উপরে উঠিয়ে ওয়ান ডাউনে নিয়ে আসা সাকিবকে।