বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও গণতন্ত্রের প্রশ্নে ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে। স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্র দেশ থেকে এখন হারিয়ে গেছে। ফলে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলছে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছি। সেই লড়াই সংগ্রামে আমরা সফল হবোই। গণতন্ত্র চর্চা দেশকে আরো সামনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরস্থ শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এইদিনে আমাদের জাতীয় জীবনে এক শোকাবহ দিন। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে পাকিস্তানি দোসররা এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিলো। সেই মেধাবী সন্তানদের আত্মত্যাগ অপূরণীয়। সেই আত্মত্যাগের জন্যই সমগ্র জাতি আজ তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। কারণ শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, যার আদর্শ হবে গণতন্ত্র।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ড আব্দুল মঈন খান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে: খালেদা জিয়া
১৪ ডিসেম্বরকে একটি বেদনাময় দিন অভিহিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খলেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশকে মেধা মননে পঙ্গু করার হীন উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত বিজয়ের ঊষালগ্নে হানাদার বাহিনীর দোসররা দেশের প্রথিতযশা শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক বিজ্ঞানীসহ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে বেগম খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পাক হানাদার বাহিনীর দোসররা মনে করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করলেই এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়ে পড়বে। উন্নয়ন অগ্রগতি রুদ্ধ করে দেয়া যাবে। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার পথে মুখ থুবড়ে পড়বে। কিন্তু তাদের সে লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে।
তার ভাষায়, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে শাহাদৎ বরণকারী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমর বুদ্ধিজীবীগণ দেশের বরেণ্য শ্রেষ্ঠ সন্তান, যারা একটি সমৃদ্ধ এবং মাথা উঁচু করা জাতি দেখতে চেয়েছিলেন। তারা ন্যায়বিচারভিত্তিক শোষণমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক সমাজের প্রত্যাশা করেছিলেন। দেশের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা আন্তর্জাতিক অপশক্তি তাদের সে প্রত্যাশাকে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই অগণতান্ত্রিক শক্তি তাদের মুখোশ খুলে ফেলে দেশের মানুষের সার্বজনীন গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো একের পর এক অমানবিক কায়দায় দমন করে, আর এই কারণেই সীমাহীন রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্ব দিনে দিনে দুর্বল করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে। বিভেদ অনৈক্য এবং সংকীর্ণতার দ্বারা জাতীয় অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে।
বিএনপি প্রধান বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ এবং দেশকে একটি সমৃদ্ধ, স্বনির্ভর ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে। এ ক্ষেত্রে শহীদ বুদ্ধিজীবীগণ আমাদের প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ কারে যাবেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আজকের এ শোকাবহ দিনে আমি দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই, আসুন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা একসাথে কাজ করি।’
rtnn