হাজী সেলিমের হাতে জিম্মি লালবাগ?

গতকাল রাতে হাজী সেলিমের পুত্রের হাতে একজন নৌ-বাহিনী কর্মকর্তার লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার পর মুখ খুলেছে লালবাগবাসী। লালবাগবাসী বলছে, এই ধরণের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। লালবাগে হর-হামেশাই এই ধরণের ঘটনা ঘটে।

লালবাগের একাধিক বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা যায়, লালবাগবাসী হাজী সেলিমের কাছে এক রকম জিম্মি হয়ে আছেন। হাজী সেলিমের গাড়ি বহর যখন লালবাগ দিয়ে যায় তখন অন্যদেরকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। লালবাগে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধচারন করার কোন ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায় না।  

লালবাগের একজন পুরনো বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা হাজী সেলিমের হাতে এক রকম জিম্মি হয়ে আছি। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই নেমে আসে নানা রকম অত্যাচার ও নিপীড়ন’। কিন্তু হাজী সেলিম কিভাবে লালবাগ থেকে বারবার নির্বাচিত হন এই রকম প্রশ্নের উত্তরে অন্য একজন বাসিন্দা বলেন, এটি হয় তার আধিপত্যবাদী রাজনীতির কারণে। যদি আমরা তাকে ভোট না দেই, ভোটের পর আমাদের উপর নির্মম অত্যাচার নেমে আসবে; এজন্যই অনেকে ভোট দেয়।

জানা গেছে যে, লালবাগে হাজী সেলিমের নিজস্ব লোকজন রয়েছে। এই লোকজনই পুরো লালবাগ নিয়ন্ত্রণ করে। হাজী সেলিমের বাইরে গিয়ে লালবাগে কোন কিছু করা কঠিন ব্যাপার। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এক সময় লালবাগের রাজনীতিতে হাজী সেলিম এবং পিন্টুর দ্বৈরথ ছিল। কিন্তু পিন্টু মারা যাওয়ার পর হাজী সেলিমের একক দৌড়াত্ম শুরু হয়েছে।

লালবাগের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের পুরনো নেতা হলেন মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। কিন্তু পেশীশক্তি ও আধিপত্যবাদের রাজনীতিতে তিনি হাজী সেলিমের কাছে বহু আগেই হেরে গেছেন। হাজী সেলিম এক সময় বিএনপি করতেন। তারপর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

একাধিক ব্যক্তি বলছেন যে, হাজী সেলিমের এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে তা একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে। এই জনপ্রিয়তার বাইরে এক ধরণের পেশীশক্তি আর আধিপত্য দিয়ে হাজী সেলিম লালবাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আর এমনটাই অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রোববারের ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে তারা জানায়, এই রকম ঘটনা লালবাগে হরহামেশাই ঘটে। এমনকি হাজী সেলিমের কর্মচারীদের গাড়ির সাথেও যদি ধাক্কা লাগে; এতে করে তারা মারধর শুরু করেন। এসব মারধরের ঘটনা লালবাগের একটি নিত্য- নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু এসব নিয়ে কেউ কোনদিন কথা বলেনি। এখন এই ঘটনার পর সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছে।

বাংলা ইনসাইডার              

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin