jamat-sibir

শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামাত-শিবির

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির নতুন করে শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শোডাউনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মীসভা করছে বলে জানা গেছে। জামাতের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, একটা নির্দিষ্ট দিন বেছে নিয়ে সারাদেশে একযোগে একটা শোডাউন করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী এই রাজনৈতিক দলটি।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর ক্রমশ কোণঠাসা হতে থাকে স্বাধীনতাবিরোধী এই দলটি। আস্তে আস্তে দলের অধিকাংশ শীর্ষনেতা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দণ্ডিত হবার পর সংগঠনের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। এর পাশাপাশি দলটি রাজনৈতিক নিবন্ধন হারায় এবং দলীয় প্রতীকও হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের।

এরপরও বিএনপির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থেকে দলটি নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। সাম্প্রতিক সময়ে গত নির্বাচনে অনেকগুলো আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও সুবিধা করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকার কারণে দলটির কার্যক্রম এক রকম আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক কারণে জামাত সক্রিয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।

১. আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছ।

২. করোনার কারণে সরকারের মনোযোগ অর্থনৈতিক সংকট এবং অন্যান্য সংকটগুলোর দিকে।

৩. অনেকেই মনে করছেন যে এখন স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠী দুর্বল হয়ে পড়েছে। কাজেই এদের দিকে এতো মনোযোগ দেয়ার দরকার নাই।

৪. ২০ দলীয় জোট নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার কারণে এখন অনেকেই মনে করছেন যে জামাত অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

৫. জামায়াতের একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে তারা নতুন করে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে । এর ফলে জামায়াত অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের মজলিসে শুরা এবং একাধিক বৈঠকে তারা মনে করছে তাদের বিকাশের এখনই সময়।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশের অবস্থা তাদের রাজনৈতিক আন্দোলনের অনুকূলে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই জামাত গোপনে সারাদেশেই তাদের কর্মীদের পুর্ণগঠিত করেছে এবং পাশাপাশি ভাবে তারা নতুন কর্মী সংগ্রহের কাজ করছে। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও নেটওয়ার্ক তৈরির সক্ষম হয়েছে।

জামায়াতের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, জামায়াত শেষ হয়ে যায়নি বরং নতুন করে ভয়ঙ্কর রূপে আবির্ভূত হওয়ার চেষ্টা করছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন ঘটনাগুলো ঘটছে সেই ঘটনাগুলো জামাতের হাত থাকতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছে। বিশেষ করে বিভিন্ন মাদ্রাসায় যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সেগুলো সম্পূর্ণভাবে জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় ঘটছে বলে অনেকে মনে করছেন।

এছাড়া জামায়াত পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য কাজ করছে। এসব কর্মতৎপরতাকে কেউ কেউ জামায়াতের রিয়ারর্সেল বলে মনে করছেন এবং খুব শীঘ্রই আসলরূপে প্রকাশ হবে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিচ্ছে।

তবে জামাতের একটি সূত্র মনে করছে, তারা এখনই সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে না বরং তারা নিজেদেরকে সংগঠিত করতে চাচ্ছে । জামায়াত মনে করছে তারা যদি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে টিকে না থাকতে পারে তাহলে একদিকে যেমন সরকার তাদের উপর দমননীতির কৌশল অবলম্বন করবে পাশাপাশি বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল পাত্তা দিবে না।

এ কারণেই নিজের সাংগঠনিক শক্তির গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সাংগঠনিক একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। যাতে জামায়াত বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা ফ্যাক্ট হয়।

জামায়াতের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এরশাদের জাতীয় পার্টি যেমন ক্ষমতায় আসতে পারবে না কিন্তু রাজনৈতি মেরকরণে একটি ক্রীড়নক শক্তি  হিসেবে পরিণত হয়েছে। জামায়াতও সেরকম একটি অবস্থানে যেতে পারে যেখানে রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং ক্ষমতার পালাবদলে জামায়াতের ভূমিকা থাকবে।

একাধিক সূত্র বলছে যে রাজনৈতিক দল নয় বরং সহিংসতার পথে ক্ষমতাসীন দলকে বিব্রত করা ও ব্যতিব্যস্ত করাই এখন জামায়াতের প্রধান কৌশল।

আর দেশে বিদেশে এই কৌশল নিয়ে এগাচ্ছে জামায়াত। আর সেই কৌশলের অংশ হিসেবেই বড় ধরনের একটি শোডাউন করতে পারে বলে অনেকেই জানিয়েছেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin