লোকজন না আসায় রেগে চলে গেলেন ওবায়দুল কাদের

আজ শুক্রবার স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনিও যথাযথ সময়ে উপস্থিত হন অনুষ্ঠানস্থলে।

কিন্তু উপস্থিত হয়নি শ্রোতারা। এতে নির্দিষ্ট সময়ে লোকজনের উপস্থিতি কম থাকায় প্রোগ্রাম শুরু হতে দেড়ি হচ্ছিল। এতেই রেগে বের হয়ে যান অতিথি মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় জগন্নাথের হলের প্রোভোস্ট, অধ্যাপক মাকসুদ কামাল অনুরোধ করেও তাকে আটকে রাখতে পারেননি।

এরপর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে কমলাপুর চলে যান।

পরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন,রাজনীতি এখন নিষ্ঠুর হয়ে গেছে, একে অপরকে ঘায়েলের রাজনীতি চলছে।

এই শীতে বিএনপির কোনও কার্যক্রম না থাকার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবারের শীত ৫০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের নেত্রী টেলিভিশনের স্ক্রলে যখন পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র শীতের কথা জানতে পারলেন, সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমাকে সেখানে যেতে বললেন শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য। সেদিনই আমরা চলে গেছি। রাতে আমরা প্রচণ্ড শীতের মধ্যে সৈয়দপুরে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছিলাম। আমরা নগদ ৩২ লাখ টাকা ও ৩৭ হাজার কম্বল বিতরণ করি। আমাদের রাজনীতি নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। এটা শুধু প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। রাজনীতি শুধু প্রতিপক্ষকে বিষোদগার নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখিনি। হয়তো আওয়ামী লীগ যাওয়ার জন্য অনেকে যায়। সেটাতো একদিনের জন্য লোক দেখানো সাহায্য।’ শেখ হাসিনার সরকার এ পর্যন্ত শীতার্তদের মাঝে এক কোটি কম্বল বিতরণ করেছে বলে জানান মন্ত্রী।

রাজধানীর নাখালপাড়ায় জঙ্গি দমন অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জঙ্গি দমনে সক্ষমতার দিক থেকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা রোল মডেল। আজও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি অভিযান চালিয়েছে। সেখানে জঙ্গিদের প্রতিরোধ করেছে ও পরাজিত করেছে।’

জামায়াত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে, নিবন্ধিত দল ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘দেখুন এই প্রশ্নের জবাব দেবে নির্বাচন কমিশন। তা আমি দিতে পারি না। আমি যতটুকু জানি এখানে নিবন্ধিত কোনও দল ছাড়া অন্য কেউ অংশগ্রহণ করা কথা নয়। কমিশনের অ্যালাও করা ঠিক না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ভুয়া উকিল নোটিশ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে এবং ‘জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু হচ্ছে’ এমন বক্তব্যের জন্য বিএনপির চেয়ারপারসনকে উকিল নোটিশ দেওয়া হবে। বিএনপিকে অপেক্ষা করতে হবে সেই উকিল নোটিশের জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলছেন পদ্মা সেতুর ডিজাইনে ভুল আছে। তথ্য উপাত্ত নিয়ে প্রমাণ করতে আসুন ডিজাইনের কোথায় ভুল, কোথায় কারিগরি ভুল আছে। যদি না পারেন আপনাকেও উকিল নোটিশ পাঠানো হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২৩ ডিসেম্বর উকিল নোটিশ পাঠান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর করা সাম্প্রতিক বক্তব্যের জের ধরে এই উকিল নোটিশ পাঠানো হয়।

ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে একটি পরিবারের সদস্যদের টাকা বিদেশে পাচার করার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য সংসদের মাধ্যমে জাতিকে জানিয়েছেন। তাদের দুর্নীতির কিচ্ছা রূপকথার কাহিনীকেও হার মানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সৎ সাহস আছে বলেই সত্যকে তুলে ধরে তাদের হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। সে কারণে বিএনপি নেতাদের অন্তর্জ্বালা শুরু হয়ে গেছে।’

আয়োজক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin