যে কোন সময় মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন!

সারা বছরজুড়ে মন্ত্রিসভার রদবদলের গুঞ্জনের পর অবশেষে মন্ত্রিসভার রদবদলের ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আলাপচারিতায় বলেছেন, ‘মেয়াদের শেষ সময়ে কাজের গতি বাড়াতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই আলাপচারিতায় টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদও উপস্থিত ছিলেন। ঠিক কবে রদবদল হবে তা প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেননি। তবে একাধিক কর্মকতা মনে করছেন, নতুন বছরের শুরুতে মন্ত্রিসভায় একটা রদবদল হতে পারে।

এই আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী আরো বললেন, ‘দেখি মন্ত্রিসভায় একটা ঝাড়া দিতে হবে। আমরা তো বাসায় একরকম থাকলেই একঘেয়েমিতে ভুগি। মাঝে মাঝে সোফাটা টেবিলটা সরিয়ে দিলে বাসায় নতুনত্ব আসে।’

প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং পাট প্রতিমন্ত্রীর ব্যাপারে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় আরও তরুণদের স্থান দেওয়ার কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর একক ক্ষমতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ওদের এখন থেকেই গড়ে তুলতে হবে। যেন ওরা পরে কাজগুলো নিজেরাই করতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রিসভার রদবদল যদি হয়, তাহলে তা হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ মাথায় রেখেই। মন্ত্রিসভা কলেবরে বাড়বে, তবে আচমকা শেষ সময়ে কাউকে বড় ধাক্কা প্রধানমন্ত্রী হয়তো দেবেন না। সংসদীয় রীতিতে মন্ত্রিসভার রদবদল হতে পারে।

দু-একজন যাদের কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজে স্থবিরতা চলছে, তাদের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হতে পারে। কয়েকজন তরুণ যারা দক্ষতার প্রমাণ করেছেন। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে, নির্বাচনের আগে তাদের পূর্ণমন্ত্রী করে পুরস্কৃত করা হতে পারে।

২০১৪ এর ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বর্তমান মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ছোটখাটো পরিবর্তনও হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ২০১৫ সালের ৯ জুলাই তৎকালীন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া। প্রথমে তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়াও ওই মেয়াদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়েছে। নূরুজ্জামান আহমেদকে প্রথমে খাদ্য পরে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী করা হয়। রদবদল বলতে এটুকুই।

২০১৩ তেও বড় রদবদল হয়েছিল। সেসময় তোফায়েল আহমেদ, রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুকে মন্ত্রিসভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের মধ্যে একমাত্র হাসানুল হক ইনু মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন। বাকি দুজন সঠিকভাবে শপথ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এই অজুহাতে তারা শপথ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। সেসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছিল বিএনপি। দুই নেতার ওই সিদ্ধান্ত বিএনপির আন্দোলনে বারুদ জুগিয়েছিল। অবশ্য নির্বাচনের পর দুজনই মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এবার মন্ত্রিসভার রদবদলটা নির্বাচনকেন্দ্রিক রদবদল হতে পারে। এমন কেউ কেউ মন্ত্রী হতে পারেন, যারা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ অথচ নির্বাচনী এলাকায় তাদের অবস্থান সংহত নয়।

rtnn

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin