মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর হুঁশিয়ারি

সরকার দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ ধরনের কথা তিনি প্রায়ই বলে থাকেন।

আজ বুধবার দুপুরে এক মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসলে সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। এর উদ্দেশ্য হলো- দেশনেত্রীকে নির্বাচন থেকে ও রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে ন্যূনতম সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। তিনি মূল মামলা থেকে অনেক আগে জামিন পেলেও সরকারের নির্দেশে তার মুক্তি বিলম্ব হচ্ছে। একটার পর একটা নতুন মিথ্যা মামলা নিয়ে আসছে। কারণ এই সরকার তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রাখতে চায়।

সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে ২০১৪ সালের মতো আবারো একটি একতরফা ও সাজানো নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া। এভাবে তারা ভিন্ন আঙ্গিকে একটি খোলস পড়িয়ে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতে চায়।

তিনি বলেন, আজকে দেশবাসীর কাছে এই সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তাদের দুর্নীতি কোন পর্যন্ত চলে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট পরিদর্শন কার্যক্রমে ভয়াবহ অনিয়মের তথ্য পাওয়া গভীর আশঙ্কাজনক। ৯৬৩ কেজি সোনা যাচাই করে যে গুরুতর অনিয়ম পাওয়া গেছে তা রাষ্ট্রের ক্রমাগত ঝুঁকি এখন চরম দশায় উপণীত হয়েছে।

সোনার চাকতি যদি হয়ে যায় মিশ্র ধাতু। তাহলে বুঝতে হবে আমানত গ্রহণকারিরা দুষ্কর্মের সাথে জড়িত। ভল্টে রাখার পরই এগুলো কারসাজি করে পাল্টে ফেলা হয়েছে। ভল্টে থাকা সোনার আংটি ও চাকতি কিভাবে অন্য ধাতুর মিশ্রণে তৈরী হলো? রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি লুট হওয়াকে অর্থমন্ত্রীর আশকারা দেয়ার কারণেই দেশের আর্থিক খাত এখন ধংসোন্মুখ।

বর্তমান সরকার দেশকে এক খারাপ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি আবারো বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সংঘটিত ভৌতিক নয়ছয়ের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করছি।

কোটা সংস্কার ও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি কোনো রাজনীতি করছি না দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউটার্ন নিয়েছেন। কোটা নিয়ে হাইকোর্ট যা বলেছে সেটা রায় না পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।’

তিনি বলেন, বেকার যুবকদের যে ন্যায়সঙ্গত কোটা সংস্কারের আন্দোলন। কিন্তু রেগেমেগে সংসদে প্রধানমন্ত্রী বললেন- কোনো কোটাই থাকবে না। এখন আপনি বলছেন, হাইকোর্টের রায়ের বাইরে যাওয়া যাবে না। আদালত কি বলেছে? যা বলেছে কোটা নিয়ে সেটা রায় নয়, পর্যবেক্ষণ। এই কথাটা আমরা অনেকেই বলছি না।

আপনি পর্যবেক্ষণকে অ্যাভোয়েড করলেন- ত্রয়োদশ সংশোধনী যেটা পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল হলো সেখান থেকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা আপনি রাখলেন। যেটা আপনার সুবিধা যেটাতে আদালতকে ব্যবহার করছেন আর যেটায় অসুবিধা সেখানে আদালতকে ব্যবহার করছেন না। পরিষ্কার করে বলতে চাই- কোটা এবং বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো রাজনীতি করছি না। যেটা সত্য আমরা সেটা জনগণের কাছে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে তুলে ধরছি।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin