বিচার বিভাগ আবারো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী পরিষদ আয়োজিত ঢাবি সিনেটের রেজিস্টার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন ২০১৭ প্যানেল পরিচিতির এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি আচারণের গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগ আবারো প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। বিচার বিভাগ আর স্বাধীন রাখা গেলো না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগ করতে হয়েছে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে বিএনপির ওপর মামলার খড়গ নেমে আসে।
শীর্ষনিউজ
বিচারবিভাগকে ‘মুক্ত’ করা যায়নি: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমরা বহু কথা বলেছি। সংসদে আইনও পাস করা হয়েছে। কিন্তু সেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আবারও প্রশাসনের ওপর গিয়ে পড়লো। কোনভাবেই একে মুক্ত করা গেলো না। দুর্ভাগ্য প্রধান বিচারপতি যখন মুক্তির চেষ্টা করেছেন তখন তাকে পদ হারাতে হলো, পরবর্তীতে দেশত্যাগ করতে হয়েছে। আর আমরা কথা বলতে যাবো, প্রতিবাদ করলে নেমে আসে মামলার খড়গ।
তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বেশির ভাগেই ফলাফল শূন্য। তারপরও আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচন করে যেতে চাই। কারণ আমাদের একটি মাত্র পথ সেটি হচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে সকল সত্যকে ফিরিয়ে আনা।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব হল রুমে এক প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অধিকার আদায় ও অধিকার রক্ষায় সূতিকাগার খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন পুরোপুরিভাবে একদলীয় চিন্তাভাবনার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আপনারা যারা নির্বাচন করছেন তাদেরকে বলছি, ফলাফল কী হবে জানি না। জয় পরাজয় লক্ষ্য হবে না তারচেয়ে বড় লক্ষ্য হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, তবে দুঃখ হয় এখন আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবাদ করা হয় না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোন সোচ্চার কণ্ঠ ধ্বনি উচ্চারণ হচ্ছে না। সেখানেও একটি দলের প্রাধান্য বিস্তারের ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস হয়ে যেতে বসেছে। তারা গণতন্ত্রের নামে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষক ও ছাত্রদেরকেও প্রায় একঘরে রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
যা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক। তাই আমরা ফিরে চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হউক আবারও সকল অধিকার প্রতিষ্ঠায় সূতিকাগার ও প্রতিকৃত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট’স প্রতিনিধি নির্বাচন (২০১৭) কে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী পরিষদ-এর প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অঅয়োজন করা হয়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক প্রফেসর আক্তার আহমেদ খানের পরিচালনায় এবং বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের
সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সভাপতি প্রফেসর এ কে এম আজিজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মামুন আহমেদ, প্রফেসর ওবায়দুল ইসলাম, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ প্রমুখ।
প্রফেসর আক্তার আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, আগামী ৬ ও ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ঢাকার বাইরের কেন্দ্রসমূহে এবং ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রসমূহে দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, ধর্মীয় মূল্যেবোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক জাতীয়তাবাদী পরিষদ মনোনীত প্রার্থীগণ অংশগ্রহণ করছে।
ব্রেকিংনিউজ