এক-এগারোয় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তির বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ খবর তার নির্বাচনী এলাকা যশোরের শার্শায় পৌঁছালে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরণের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। শার্শায় বিএনপির নেতাকর্মীরা আনন্দ জোয়ারে ভাসছে।
গত ১৯ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। এ নিয়ে দলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এদিকে তৃপ্তির বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের খবরে এলাকার বিএনপির নেতা কর্মীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। আবার কোথায় কোথায় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। এতে দশ বছর পর এলাকায় উৎসবের আমেজে রয়েছে তৃপ্তিপন্থি নেতাকর্মীরা। বেনাপোলে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায়।
শার্শা উপজেলার বিএনপির একাংশ মনে করেন বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মত প্রার্থী বিএনপির একমাত্র মফিকুল হাসান তৃপ্তি। তার মত মেধাবী যোগ্য নেতা শার্শা উপজেলায় দ্বিতীয়টি নেই বলে মন্তব্য করেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বেনাপোল পৌর ভবেরবেড় ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, এলাকায় দশ বছর ধরে বিএনপির নেতৃত্ব শূণ্য তৃপ্তি ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলে বিএনপির রাজনৈতিক আরো গতি পাবে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের খবরে নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে।
অপরদিকে শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জহির জানান, আমরা শুনেছি, তবে আমাদের কাছে কোন চিঠিপত্র আসেনি। তারা বলেন, বিগত ১০ বছর তাকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে দেখা যায়নি। তিনি ঢাকায় বসে থাকেন। ঈদ পার্বনে বাড়ি এসে মুষ্টিময় কিছু লোক নিয়ে খাওয়া দাওয়া করে আবার ঢাকায় ছুটে গেছেন।
তৃপ্তির বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না উপজেলা বিএনপি। তাকে নিজ এলাকা শার্শায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তারা। দলীয় হাইকমান্ডের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বিবেচনার জোর দাবিও জানানো হবে বলে জানান তারা।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, শুনেছি বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পায়নি। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নিবে, সেটি বাস্তবায়নে কাজ করবো। পার্টির চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের প্রতি অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। যেটা ভাল হবে, উনারা সেই সিদ্ধান্ত নিবেন। আমরা তাদের সিদ্ধান্তে একমত থাকবো।
দলীয় সূত্র জানায়, এক-এগারোর সময় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন দলের শতাধিক সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। এ অবস্থান নেয়ায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাৎক্ষণিক দলটির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন ও দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বহিষ্কার করা হয়। এ সময় সংস্কারপন্থীদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার আভাসও দেন খালেদা জিয়া।
সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মফিকুল হাসান তৃপ্তির বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে ধারণা। তবে এ বিষয়ে দলীয়ভাবে স্পষ্ট করা হয়নি।বেনাপোল পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা আহাদ হোসেন জানান, তৃপ্তি ভাই দলে ফিরে আসলে আমরা তাকে স্বাগত জানাবো। শার্শা থানায় তৃপ্তির বিকল্প কোন নেতা নেই। গত ১০ বছরে দলের কর্মকাণ্ড নেই। এই জন্য আমরা তৃপ্তিকে দলে চাই। তাকে শার্শায় প্রবেশে কোন শক্তি নেই কোন বাধা দেওয়ার।
poriborton