গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ, এখন ভোট গণনা চলছে।এর আগে সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এদিকে নির্বাচনে নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৪২৫ কেন্দ্রের মধ্যে ২ কেন্দ্রের ফলাফলে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫১১ ভোট। আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১২৬৭ ভোট। এছাড়া অনিয়মের অভিযোগে নয়টি ভোটকেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে।
এই নির্বাচনে অন্তত ১০০টি ভোট কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দীন সরকার। অপরদিকে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, সব শেষ অনিয়মের অভিযোগে নয়টি ভোটকেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। আর একটি কেন্দ্রে আধা ঘণ্টার জন্য ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল।
এছাড়া বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর সিটি নির্বাচন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। প্রায় ১০০ কেন্দ্র থেকে বিএনপির পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে তার দাবি। আমি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ভোট বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। তবে কোন ১০০ কেন্দ্র থেকে তার পোলিং এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি তিনি। ইসির পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, যদি তারা ভোটগ্রহণ বন্ধ না করে, তাহলে আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে লড়ে যাবো।
হাসান উদ্দিন সরকার আরো বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ বন্ধের জন্য আমি লিখিত আবেদন করতে যাচ্ছি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, ভোটে কী হয়েছে তা জাতি দেখেছে, সমগ্র বিশ্ব দেখেছে। নির্বাচন কমিশনের যদি লজ্জা থাকে তাহলে তারা পদত্যাগ করবেন।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে সিল মারা হয়েছে। তাই নির্বাচন বন্ধ করতে হবে।
নির্বাচন বর্জন করবেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আমি নির্বাচন বর্জন করবো না। তবে নির্বাচন কমিশনকে বলছি, তারা যেন নির্বাচন বন্ধ করে। নইলে তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৫৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে ৫৭টির মধ্যে ৫৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন ও সংরক্ষিত ১৯ নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন এবং একটি মেয়র পদের জন্য সাতজন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ৩ পদে ৩৪৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মো. জাহাঙ্গীর আলম, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ।
টঙ্গী ও গাজীপুর পৌরসভাসহ প্রায় ৩৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। ওই বছর ৬ জুলাই নির্দলীয় প্রতীকে হয় প্রথম নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল।
১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন; ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী। নির্বাচনে একজন মেয়র, ৫৭ জন কাউন্সিলর এবং ১৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের ২৭৬১টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হবে। ছয়টি কেন্দ্রে (১৫৪, ১৫৫, ১৭৪, ১৭৫, ১৯১ ও ১৯২) ভোট হবে নতুন ইভিএমে।