জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে সাজা দিয়েছে তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সেজন্য তাদের করা আপিলে শুধু রায়ের খালেদা জিয়ার অংশের সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা করা হয়েছে। তাদের মতে, পাঁচ বছরের সাজা অপর্যাপ্ত।
আপিল আবেদনটি মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এর আগে রবিবার (২৫ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল দায়ের করা হয়।
এ মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ঢাকার বকশীবাজার কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিশেষ জজ-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছর ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন।
১০ বছর দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।
রায় ঘোষণার পর থেকে কারাবন্দি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আপিল করার যুক্তি হিসেবে বলেন, এ মামলায় খালেদা জিয়া প্রধান আসামি। অথচ তার চেয়ে সহযোগী আসামি যারা তাদের বেশি সাজা দেওয়া হয়েছে। তাই নিম্ন আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের যে সাজা দিয়েছেন, তা ‘অপর্যাপ্ত’ বলে মনে হয়েছে। এ কারণে পাঁচ বছরের সাজার এই অংশটুকু চ্যালেঞ্জ করে আপিল করা হয়েছে। এটাই যুক্তি।
‘বিচারিক আদালত যদি সবাইকে ১০ বছরের সাজা দিতো তাহলে আমরা এ আবেদন করতাম না।’
এর আগে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা। পাশাপাশি জামিন আবেদনও করেন। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে পরদিন ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।
ওই আবেদনের ওপর দুদকের শুনানি নিয়ে খালেদার জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলেন।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া
এ আদেশ অনুসারে ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল দায়ের করে। এ আপিলের ওপর শুনানি হয় ১৮ মার্চ। শুনানি শেষে আদেশের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আপিলের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ।
একইসঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে আপিলের শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।