সিটি নির্বাচন মূল্যায়ন করতে গিয়ে রংপুর থেকে সাবেক এক কাউন্সিলর বলেন- বিগত নির্বাচনে ঝন্টু মেয়র নির্বাচিত হয়ে কোনোদিন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পর্যন্ত আসেননি, দলীয় নেতাকর্মীদেরও মূল্যায়ন করেননি।
তাছাড়া স্থানীয় মানুষজন এখন বলছেন- সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহারের কারণেই ঝন্টুর এই ভরাডুবি।
ওদিকে বিএনপি প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার বিষয়ে মানুষজন বলছেন- তিনি প্রতিবার নির্বাচনের সময় এসে শুধু নির্বাচন করেন, নির্বাচন শেষ হলেই ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন; সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যা পরবর্তীতে তার ভোটের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার জয়ের মূল কারণ হিসেবে মানুষজন বলছেন- গত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থনের বাইরে মোস্তফা নির্বাচন করে ঝন্টুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরেও পাঁচ বছরে সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন, যা তার জন্য বড় প্লাস পয়েন্ট; এতে করে তার ওপর মানুষের ভালোবাসা জন্মেছে।
গতকাল নবনির্বাচিত মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ফুল নিয়ে দোয়া নিতে যান তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ও বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলার বাসভবনে; দুজনের সাথেই আলাদাভাবে কুশল বিনিময়ের পর তিনি রংপুর উন্নয়নের জন্য তাদের কাছে পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাসও চান। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নিশ্চিত শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
সেই দিন আর এই দিন মোটেও এখন আর এক নয়; মানসিকতার পার্থক্য অনেক। আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বাতাসে অনেক জল্পনা-কল্পনা ও অনেক প্রত্যাশার কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে। আমার জানা মতে, সোহেল তাজ আপাতত কোনো নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করবেন না; তাই ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ করার কথাটি শুধুই মানুষজনের আবেগের বহিঃপ্রকাশ ও প্রত্যাশা।
শুনতে পেরেছি, হক বিস্কুটের তমিজুল হক সাহেবের ইংল্যান্ডে বড় হওয়া ছেলে বর্তমানে হক গ্রুপের এমডি আদম তমিজি হক-কে নিয়ে কিছু যুবক শ্রেণির লোকজন বেশ উঠেপড়ে লেগেছেন আওয়ামী লীগের টিকিটের জন্য; সে আওমীমনা, সামনে তাঁর জন্য আরো অনেক সময় পড়ে আছে।
আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তিনি কখনো সার্থক মেয়র মরহুম আনিসুল হক সাহেবের বিকল্প হতে পারেন না, পারবেনও না; বরং জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী এ ক্ষেত্রে হাজারগুণ উত্তম। সাবের হোসেন চৌধুরীকে ঢাকার মানুষ বেশ ভালোমানুষ ও একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেও অন্য দশজন রাজনৈতিক নেতা থেকে বেশ ভাল জানেন এবং এ দেশের ক্রিকেটের অনন্য অবদানের জন্য মানুষজন তাঁকে বেশ ভালোভাবে চেনেন, তাঁর কর্মদক্ষতাও জানেন।
আমার মনে হয়, তাঁর সাধারণ পাবলিক গ্রহণযোগ্যতা ফারুক খাঁন বা রহমতউল্যা বা এইচএমবি ইকবাল বা কামাল মজুমদার বা কবরী সারোয়ার বা অন্য দশজন ঢাকার এমপির চেয়েও অনেক বেশি। ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে পার্থী বাছাইয়ে ভুল করলে আওয়ামীলীগকে হয়তো অনেক বড় খেসারতই গুনতে হবে। অতএব, অবশ্যই বেশ সতর্ক হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন; কারো প্রভাবে, আবেগে বা কোন প্ররোচনায় নয়।
ওয়ালিউল্যাহ ফারুক
লেখকের ফেসবুক থেকে।
উৎসঃ kalerkantho