১৯ বছর পর এক মঞ্চে দুই ভাই

১৯ বছর পর এক মঞ্চে মিলিত হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। আজ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মিলন মেলা উদযাপন কমিটির আয়োজনে ৭৫ এর বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিরোধ যুদ্ধে জাতীয় মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের মিলন মেলা ২০১৮ তে তারা এক মঞ্চে মিলিত হন।

মিলন মেলার শুরুতে সুচনা বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ প্রায় ১৯ বছর আমরা দু’ভাই পাশাপাশি কোন জনসভায় বসিনি। খুব সম্ভবত: ১ টা জানাযায় আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। তিনি বলেন, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় আমরা প্রতিরোধ গড়েছিলাম। কিন্তু সরকারিভাবে আমাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। আমি বলবো, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের মাধ্যমে যদি জাতির কলঙ্ক মোচন করা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা শুধু সরকারের স্বীকৃতি নয়, জাতীয় স্বীকৃতি চাই। যদি স্বীকৃতি না দেয়া হয় তাহলে আজ ঘোষণা করা হোক আমরা সেদিন প্রতিবাদ করে ভুল করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হোক।

তিনি বলেন, ৭৫ এর প্রতিরোধ সংগ্রামীদের স্বীকৃতি চাই।

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই। যদি না দেয়া হয় তাহলে মুখ বুজে বসে থাকব না। আমি মনে করি এই স্বীকৃতি আদায় হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। একই সঙ্গে বলতে চাই- কোন মানুষ যদি পিতৃ পরিচয় হারিয়ে ফেলে, কেউ যদি পিতৃ পরিচয় অস্বীকার করে, তাহলে তার আর কিছু থাকে না। তাকে কিন্তু সামাল দেয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। এটা মনে রাখতে হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু জেল থকে বের হলে আমরা তার সঙ্গে তখন কথা বলতে পেরেছি। আমার বাবা কথা বলতে পেরেছে। কিন্তু এই প্রথম ১৯ বছর পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য, দেখা করার জন্যে তিন তিনবার চেষ্টা করেছি। তার পিএসদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কোন সাড়া পায়নি। তাকে না পেয়ে শেষে চিঠি দিয়েছি। যেন এই অনুষ্ঠানে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু কোন সহযোগিতা পায়নি।

বরং আজকের এই মিলন মেলায় যেন না আসতে পারে কেউ তার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা ইয়াহিয়ার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু দেশের ভেতর এমন শত্রুতা আগে কখনো দেখিনি।

তিনি বলেন, আজকে সরকারের জয়জয়কার। যেদিকে তাকাই সেদিকে আওয়ামী লীগ। সেদিকে শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাড়াবো জানি না। আল্লাহ কখন কার জন্য কি লিখে রাখেন আমরা কেউ জানি না। তিনি বলেন, আজকে রাজনীতির জন্য এই সভা আহ্বান করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা এটা। রাজনীতি যারা করে তারা শুধু ক্ষমতা দেখে। অনেকের মধ্যে কোন কৃতজ্ঞতাবোধ নেই।

নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন একদিকে শ্রমিক নেতা অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী। তিনি আজকে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর স্যান্ডেল যারা টেনেছে তারা আজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী। যে আওয়ামী লীগের জন্ম দিয়েছে লতিফ সিদ্দিকী। তাকেই বহিষ্কার করা হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে। এখন রাত দিন আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে। আমি কিভাবে যাব। যে মতিয়া চৌধুরী আমার নেতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল তার পাশাপাশি বসে রাজনীতি করব? আমার পক্ষে তা সম্ভব না।

উৎসঃ   mzamin

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin