পিলখানায় বিডিআর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা চলছে। এ পর্যন্ত ১৫০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার পর বিচারপতি শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা চলছে।
এর আগে সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার এ রায় পড়া শুরু করেন। রবিবার বিচারপতি শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলার রায় পড়া শুরু করেন। শুরুতেই রায়ের বিষয়ে সূচনা বক্তব্য দেন বিচারপতি শওকত হোসেন। পরে রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশ পড়েন বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকি।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তৎকালীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করা, দেশে বিদেশে তৎকালীন বিডিআরের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই একটি মহল পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চালায়। ১১ হাজার পৃষ্ঠার মূল রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশ ১ হাজার ৫৫ পৃষ্ঠা।
২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দফতর পিলখানায় বিদ্রোহের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।
‘আদালতের রায় শিরোধার্য’
বহুল আলোচিত বিডিআর সদর দফতরের পিলখানা ট্র্যাজেডির হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায় শিরোধার্য।
তিনি বলেন, রায়ে আমরা আশানুরূপ। সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তা শিরোধার্য। রায় ঘোষণার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্য চাওয়া হলে তিনি এখন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
সোমবার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিশেষ (বৃহত্তর) বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
সোমবার বেলা ২টা ৩৫ মিনিট থেকে আসামিদের দণ্ড ঘোষণা শুরু হয়। প্রথম দফায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের রায় দেয়া হচ্ছে। এক এক করে অভিযুক্তদের নাম ও সাজা ঘোষণা করছেন আদালত।
বহুল আলোচিত বিডিআর সদর দফতরের পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে সাজা বহাল রাখা হয়েছে ১৩৯ জনের। এছাড়া আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের আংশিক আপিল গ্রহণ করে ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে আলোচিত এ মামলায় ৮৫০ আসামির মধ্যে ৫৬৮ জনকে সাজা দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। তাদের মধ্যে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। সে সময় খালাস পেয়েছিলেন ২৭৭ জন।
আজ হাইকোর্টের দেয়া রায়ে নিম্ন আদালতের দেয়া ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে ১৪৬ জনের যাবজ্জীবন ও ১৮২ জনের ১০ বছরের সাজা বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
উৎসঃ jagonews24