সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বাড়িতে গিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার অনিন্দ্র ব্যানার্জী। এসয় তিনি স্থানীয় তিলকপুর সার্বজনীন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখেন।
আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা থেকে সড়ক পথে শ্রীমঙ্গল হয়ে কমলগঞ্জ এসে পৌঁছান তিনি। কমলগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার তিলকপুর সার্বজনীন পুজামন্ডপ, ঘোড়ামারা মণিপুরী থিয়েটার ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বাড়ি ঘুরে দেখেন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার।
এসময় তিনি সবার খোঁজ খবর নেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, ইউএনও মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, সার্বজনীন পূজামন্ডপের সভাপতি কৃষ্ণ কান্ত সিংহ সহ আর অনেকে। পরে তিনি সন্ধ্যায় সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশ্যে কমলগঞ্জ ত্যাগ করেন। কমলগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মোহাম্মদ মাহমুদুল হক এতথ্য নিশ্চিত করেন।
২০১৮ এর পর আর নির্বাচন করতে চাই না – শেখ হাসিনা
আরেকটি নির্বাচনের পর অবসরে যেতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘনিষ্ঠদের তিনি বলেছেন, ‘২০১৮ এর পর আর নির্বাচন করতে চান না।’ অবসর নিয়ে তিনি ঢাকায় নয় থাকতে চান টুঙ্গিপাড়ায়। সেখানে পৈতৃক ভিটায় বাড়িও বানিয়েছেন। ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘আল্লাহ যদি তৌফিক দেন আরেকবার দেশ পরিচালনা করার, তাহলেই শেষ।’
এর মধ্যে বাংলাদেশ একটা মর্যাদার জায়গায় যাবে বলেই বিশ্বাস কর্মঠ এই প্রধানমন্ত্রীর। ২০১৮ এর নির্বাচনে যে দল ক্ষমতায় আসবে তারাই ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে। একই দল ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করবে। শেখ হাসিনা এখন প্রতিটি ঘরোয়া আলোচনাতেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কেন আগামী নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। কেন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়টা জরুরি।
২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করবে বলে আশাবাদ প্রধানমন্ত্রীর। ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, ‘জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজটা প্রায় সমাপ্ত করতে পেরেছি। আমার দায়িত্ব শেষ। নতুন প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব তুলে দিবো। গ্রামে গিয়ে অবসর কাটাবো।`
২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর বয়স হবে ৭৬ বছর। ৭৬ এ বহুদেশে সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছেন। একটু তাড়াতাড়ি হয়ে গেল না? ‘কোথায় তাড়াতাড়ি? ৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। ৩৬ বছর দলের সভাপতি আর কত?’ এভাবেই জবাব দেন। একটা কথা সবসময়ই বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার লোভ আমার নেই।
প্রধানমন্ত্রী হবার শখও আমার ছিল না। দেশ পরিচালনার দায়িত্বও নিয়েছি শুধু জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য। জাতির পিতা চেয়েছিলেন এদেশের মানুষ সুখে থাকুক। দুবেলা পেট পুরে খাক। আমরা দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার কাছাকাছি নিয়ে গেছি। বিশ্বে আজ মর্যাদার আসনে বাংলাদেশ।’ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করেছেন। এখন দারিদ্র মুক্তির দারপ্রান্তে বাংলাদেশ। প্রায়ই ঘনিষ্ঠদের বলেন, ‘আল্লাহ বোধ হয় এজন্যই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।’
আগেও অবসরের কথা বলেছেন। প্রতিবার দলের কাউন্সিলে অবসরের ইচ্ছা জানান। কিন্ত কর্মীদের প্রবল আবেগের কাছে পরাস্ত হন। ‘কর্মীরাই আমার সব। এদেশের মানুষের ভালবাসায় সম্ভবত আমি বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি।’ এমন কথা বলতে বলতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। এজন্যই কর্মীদের আবেদনের কাছে নিজের ইচ্ছার পরিবর্তন করেন। তবে, এবার আর না। সাধারণ মানুষের জীবনে ফিরে যেতে চান।
মালয়েশিয়ার নেতা মাহাথির মোহাম্মদের মতো কি তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়েই তিনি ক্ষমতা ছেড়ে যেতে চান? এমন প্রশ্ন তাঁকে অনেকেই করে, কিন্ত তুলনায় ঘোর আপত্তি তাঁর। তিনি কারো মতো না। তিনি শেখ হাসিনা, অনন্য। মানুষের ভালবাসা উপেক্ষা করে সত্যি কি পারবেন তিনি অবসরে যেতে?
বাংলা ইনসাইডার