khaleda_zia_airport

সোহরাওয়ার্দীর উচ্ছ্বাস ছড়াতে তৃণমূল রোডশোতে খালেদা

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বার্তা নিয়ে তৃণমূলে ‘রোডশো’ করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে পরপর তিনটি জনসম্পৃক্ত ‘সফল’ কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বেগম জিয়া নিজেও উজ্জীবিত।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও চাঙ্গা। তাই তিনি সারা দেশে ‘রোডশো’ করার কথা ভাবছেন। এমনটি নিজেই ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন বেগম জিয়া। দলীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বেগম জিয়া সংশ্লিষ্টদের বলেছেন, নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় তিনি সামনে নিজের বিপদাপদ নিয়ে ভাবছেন না। এমনকি নিজের মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তিত নন।

সাধারণ মানুষের ভালোবাসার কাছে এগুলো তুচ্ছ। তাই সাধারণ মানুষের কাছাকাছিই থাকতে চান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। শারীরিক সুস্থতা আর অনুকূল পরিবেশ পেলে এই শীতে প্রাথমিকভাবে বিএনপি-প্রধান বিভাগীয় পর্যায়ে রোডশো করতে পারেন। এরপর পর্যায়ক্রমে জেলা শহরগুলোয় যাবেন তিনি। এমনকি আসন্ন ছয় সিটি করপোরেশনের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোটও চাইতে যাবেন। গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপরসনের পরপর তিনটি কর্মসূচিসহ সর্বোপরি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে মানুষ আশার আলো দেখছে।

নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উজ্জীবিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপি ইতিবাচক। তবে এটা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। তারা যদি ২০১৪ সালের মতো একটি নির্বাচন চায়, তাহলে তো হবে না। ইনক্লুসিভ নির্বাচন করাতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, লন্ডন থেকে বেগম খালেদা জিয়া ফেরার পর পরপর তিনটি কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপি দেশে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় দল।

সর্বশেষ রবিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুধু নেতা-কর্মীদের উদ্দেশেই ছিল না, এটা ছিল দেশের সর্বস্তরের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার একটি বহিঃপ্রকাশ। এজন্যই শুধু নেতা-কর্মীরা নন, সারা দেশের মানুষই উজ্জীবিত। তারা বিএনপি-প্রধানের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন। বেগম জিয়াও জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার সঙ্গেই রয়েছেন। তাই বেগম জিয়ার বক্তব্য ছিল, দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে ঘিরে। জনজীবনের সমস্যাগুলোও উঠে এসেছে তার বক্তব্যে।

এসব সমস্যার মূল কারণ হলো একটি নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকারের অনুপস্থিতি। তাই সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট চেয়েছেন। এজন্য তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন। সরকারকে আবারও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্রে জানা যায়, সংলাপের পথ খোলা রেখেই বিএনপি সামনে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করবে। সহিংস কোনো কর্মসূচিতে না যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে দলের নীতিনির্ধারকরদের। তৃণমূলের রোডশোগুলোয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও জনদাবি তুলে ধরবেন বেগম খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতারা। এ নিয়ে জনমত তৈরি করা হবে।

একই সঙ্গে সরকারের নানা ব্যর্থতার দিকগুলোও তুলে ধরা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টার পাশাপাশি ছাড় দেওয়ার ইচ্ছাও রয়েছে দলটির। তবে বিএনপি চায়, নির্বাচন নিয়ে সরকার বিএনপির সঙ্গে একটি সংলাপ-সমঝোতায় আসুক। সরকার যদি সংলাপের দিকে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে বিএনপিও সর্বোচ্চ ছাড় দেবে। নইলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার যে ঘোষণা বেগম জিয়া দিয়েছেন, সেখানেই অনড় থাকবে বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, বিএনপিকে বাইরে রেখে আগামী সংসদ নির্বাচন কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

এই ভুল সরকারও করবে না। কারণ ৫ জানুয়ারির মতো এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না, এটা আওয়ামী লীগও মনে করে। তাই বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হলে সরকারকে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সভা-সমাবেশ ছাড়াও নির্বাচনী প্রচারে সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আস্থার পরিবেশ পেলেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। সূত্রমতে, সরকার যদি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে একটি সংলাপের ডাক দেয়, তাহলে বিএনপি সেখানে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা তুলে ধরবে। আলোচনার টেবিলে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে রূপরেখা চাওয়া হবে। উভয় দলের রূপরেখা নিয়ে সন্তোষজনক সমাধানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুর স্থায়ী সমাধান চায় বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। এ কারণেই তা স্পষ্ট করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তবে সরকারকে বিএনপি-প্রধান এও বলেছেন, আসুন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক পন্থা বের করি। এজন্য সরকারকে সংলাপ করতে হবে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল এখন বিএনপি। তাই সংলাপ করতে হবে বিএনপির সঙ্গেই। কথা বললেই একটি পথ বেরিয়ে আসবেই। বেগম জিয়া তৃণমূলে যাবেন কিনা, তা নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর। পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বেগম জিয়া তৃণমূলে যাবেন, এটাই স্বাভাবিক।

সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনকেও বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবে না বিএনপি। ছয় সিটিতে জয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিএনপি মনে করে, সিটি নির্বাচনের জয়-পরাজয়ের প্রভাব পড়বে জাতীয় নির্বাচনে। তাই ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার আনতে খোদ দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া নিজেই মাঠে নামবেন। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বস্তরের মানুষের ভোট চাইবেন। পর্যায়ক্রমে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেবেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিমানবন্দরে চেয়ারপারসনকে বিপুল সংবর্ধনা থেকে শুরু করে কক্সবাজারসহ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভায় লাখ লাখ লোকের সমাগমে প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপি একটি জনপ্রিয় দল। এর একটি ইতিবাচক বার্তা তৃণমূলেও পৌঁছেছে। এ ধরনের কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে চলবে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, পরপর তিনটি জনসম্পৃক্ত কর্মসূচির মাধ্যমে এটা বোঝা গেল, সাধারণ মানুষের সঙ্গে বেগম জিয়ার আস্থা ঠিকই আছে। জনগণের কাছাকাছি গিয়ে তিনি যে ভালোবাসা পেয়েছেন, এটা তিনি ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবেন বলেই আমার বিশ্বাস। এ দেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। তাই তিনি বলেছেন, এ দেশই তার ঠিকানা।

উৎসঃ   বিডি প্রতিদিন

খালেদা জিয়ার বক্তব্যের যেসব ব্যাখ্যা করছেন নেতারা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দীর্ঘ বক্তব্যকে আগামী নির্বাচনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করার ইঙ্গিত হিসেবে দেখার কথা জনিয়েছেন জেলা পর্যায়ের একাধিক নেতা। তারা বলছেন, ক্ষমতায় গেলে কী কী করা হবে, সে বিষয়ে অঙ্গীকার করার অর্থ এই একটাই দাঁড়ায়।

বরিবার দীর্ঘ বক্তব্যে সরকারের বিরুদ্ধে গতানুগতিক কিছু অভিযোগের পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন, ক্ষমতায় যেতে পারলে কী করা হবে সে বিষয়ে অনেক কথা তুলে ধরা হয়েছে। পরদিন সংবাদপত্রে এসব বক্তব্য প্রকাশের পর গত সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দলটির নেতা-কর্মীরা এসব বক্তব্যের চুলচেরা ব্যাখ্যা করছেন। খালেদা জিয়া কী বার্তা দিলেন, তা বোঝার চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

বরগুনার বেতাগী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি গত নির্বাচনের মতো নির্বাচন আগামীতে নির্বাচন হবে না। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে সেই ম্যাসেজও আমরা পেয়েছি। চেয়ারপারসনের বক্তব্যে আমরা যে তেজ দেখেছি তাতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আত্মপ্রত্যায়ী হয়েছি। বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে সফল সমাবেশের মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাস জন্মেছে যে আগামীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সফল হবো।’

গত বছরের ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বক্তৃতার পর রবিবারই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করলেন খালেদা জিয়া। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলীকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করা বিএনপি এই দিবসের স্মরণে এই জনসভা করে।

এই বক্তব্যে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রীক নানা দাবির কথা উঠে এসেছে। গত এক বছর ধরে এই সহায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে আসা বিএনপির নেতারা সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়কের দাবি তুলে ধরলেও সমাবেশে খালেদা জিয়া এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি।

বরং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার না করার দাবি করেছেন। বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চ্যালেঞ্জ নিতে। অবশ্য শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-এমন কথাও বলেছেন বিএনপি নেত্রী।

এর পাশাপাশি ক্ষমতায় গেলে কী কী করা হবে তার একটি আগাম ঘোষণাও দেন বিএনপি নেত্রী। এর মধ্যে রয়েছে, এক বছরের বেশি বেকার থাকলে বেকার ভাতার ব্যবস্থা, সবার জন্য বিনামুল্যে চিকিৎসা, পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্য বিমা চালু, কমমূল্যে কৃষি পণ্য দেয়ার পাশাপাশি বেশি মূল্যে কৃষকের কাছ থেকে পণ্য কেনা, বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো প্রভৃতি।

আওয়ামী লীগকে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা আপনাদের মতো ধরবো, মারবো না। আমরা আপনাদের শুদ্ধ করবো। আপনারা যে এই হত্যা, গুম, নির্যাতন করছেন এটা ঠিক না। আমরা সত্যিকারের মানুষ বানাবো আপনাদের।’

এই সমাবেশে যোগ দেয়া বিএনপির জেলা পর্যায়ের ও কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না’- সরাসরি এই ধরনের ঘোষণা না দিয়ে খালেদা জিয়া বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ আগের অবস্থান থেকে তিনি কিছুটা নমনীয় হয়েছেন। আবার দেশবাসীর জন্যও কিছু অঙ্গীকার করেছেন তিনি। বিএনপির প্রতি যেন তারা সমর্থন জানায়, সে জন্যই নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। এর অর্থ গত নির্বাচন বর্জন করলেও আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে দলতে প্রস্তুত করছেন তিনি।

নির্বাচনকালীর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। কিন্তু সরকারের পতনের এক বছর পূর্তিতে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে নেমে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে এই দাবি আর জানাননি নেতারা। এক বছর আগে থেকে তারা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুলে ধরছিলেন। যদিও এই সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে না পারা দলটি এই দাবি আর তুলছে না।

এরই মধ্যে নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরাও রয়েছেন। এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যে এলাকায় বিএনপির পক্ষে প্রচার আরও জোরদার করার কথাও জানাচ্ছেন বিএনপির তৃণমূলের নেতারা।

পিরোজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সরকার পতনের লক্ষ্যে কঠোর কোনো কর্মসূচি না দিলেও সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে আলটিমেটাম দেবেন এমন প্রত্যাশা অনেকের ছিল। কিন্তু তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা মনে এটা রাজনৈতিক পরিকপক্কতার কারণেই দিয়েছেন। কারণ নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু বিবেচনা করে, হিসেব নিকেশ করে দিয়েছেন। তাই তিনি যা বলেছেন যথেষ্ট।’

আলমগীর বলেন, ‘চেয়ারপারসন আগামী দিনে ইতিবাচক রাজনীতির যে কথা বলছেন এটা সামগ্রিক রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে আমরা মনে করি। এ ছাড়া তিনি ঐক্যের কথা বলেছেন। এটা তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ভুমিকা রাখবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শুধু দল নয়, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, সামাজিক নানা সমস্যাকে প্রধান্য দিয়েছেন তার (খালেদা জিয়া) বক্তব্যে। সর্বোপরি দেশে যে সুশাসনের অভাব বিরাজ করছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজন সে বিষয় কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি সরকারের প্রতি কোনো ধরনের আক্রোশের কথা বলেননি। একই সঙ্গে সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকলেও তিনি সেদিকে যাননি।’

তৃণমূলের নেতাদের নানা ব্যাখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘চেয়ারপারসনের বক্তব্যে মূলত আমরা দুটি বার্তা পেয়েছি। প্রথমত. শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়। এর মানে এই নয় যে নির্বাচন বর্জন। পাশাপাশি নির্বাচনে সেনা মোতায়েন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। বিষয়গুলো আগে বললেও আবারো স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া হলো। দ্বিতীয়ত, তিনি ইতিবাচক রাজনীতির ধারা প্রবর্তনের কথা বলে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। এর ফলে ধৈর্য ধারণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার জন্য নেতাকর্মীসহ সবার কাছে বার্তা দেয়া হয়েছে। এটা আগামী দিনের রাজনীতির জন্য অবশ্যই ইতিবাচক বিষয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘চেয়ারপারসন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবি করেছেন এটা জনগণের আকাঙ্ক্ষার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক দাবি। তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, করবেও না। এটা আগামী দিনের রাজনীতির জন্য অবশ্যই ইতিবাচক দিক।’

এই নেতা বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে। আগামী দিনে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে মনে করি।’

সূত্র: ঢাকাটাইমস

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin