সিরাজগঞ্জে বিএনপির দুই নেতা গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জে বিএনপি দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন সিরাজগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অমর কৃষ্ণ দাস।

রবিবার দুপুরে শহরের ইবি রোডস্থ পুরাতন শহীদ মিনার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এব্যাপারে ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, রবিবার দুপুরে ইবি রোডস্থ পুরাতন শহীদ মিনার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত বিএনপি নেতা নাজমুল হাসান তালুকদার রানার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে এবং অমর কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে ৬টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এসব মামলায় তাদের গ্রপ্তার করা হয়েছে।

আদালতের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অমর কৃষ্ণ দাসকে কারাগারে পাঠানো হবে বলে ওসি জানান।

ইসলামের ছায়াতলে সিরাজগঞ্জ ও ঝিনাইদহের দুই হিন্দুপরিবারের ১৩ সদস্য
সিরাজগঞ্জ ও ঝিনাইদহের দুই হিন্দুপরিবারের ১৩ সদস্য ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে আনন্দ দাসের পরিবারের ৭ সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বেলকুচি পৌর এলাকার চালা সাতরাস্তা জামে মসজিদে জুম্মা নামাজের পূর্বে কলেমা পরে ৭ জনই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে জুম্মার নামাজ আদায় করে এই নওমুসলিমের দল।

জানা যায়, চালা ইসলামিয়া দারুল হেফজ ও কওমিয়া মাদ্রাসার সুপার হাজী মাওঃ মোঃ রফিকুল ইসলামের কাছে কলেমা পড়ে তারা ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। এসময় ওই পরিবারের প্রধান আনন্দ দাস তার নাম পরিবর্তন করে আনোয়ার হোসেন রাখেন। একই সময়ে তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নামও পরিবর্তন করে ইসলামী নাম রাখা হয়।

আনোয়ার ইসলাম (পূর্বের নাম আনন্দ দাস) পৌর এলাকার চালা গ্রামের গৌউর দাসের ছেলে।

কলেমা পড়ে মুসলমান হওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন- বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ একেএম ইউসুফজী খাঁন, সমাজ সেবক মহের প্রামানিক, হাজী লোকমান হোসেনসহ অসংখ্য মুছুল্লীগণ। আনোয়ার ইসলামসহ তার পরিবারের সদস্যরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় মুসুল্লীরা তাদের স্বাগত জানান এবং সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এদিকে এই ঘটনা এলাকায় জানা জানি হলে তার বাড়িতে শতশত লোকের সমাগম ঘটে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী আনোয়ার ইসলাম বলেন, ইসলাম ধর্ম আমার কাছে অনেক পূর্ব থেকেই ভালো লাগে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমরা স্বামী-স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে জুম্মার নামাজ আদায় করলাম। আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

এর আগে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামের আনন্দ সরকার বর্তমান নাম ওসমান গণি স্বপরিবারে সনাতন ধর্ম ছেড়ে স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

তারা হলেন- আনন্দ সরকার বর্তমান নাম ওসমান গণি (৫০), স্ত্রী দিপালী রানী থেকে রাবেয়া বসরী (৪০), ছেলেদের বর্তমান নাম ওলিউল্লাহ (২৫), সুমন (২২), রানা (১২) ও ওমর আলী (৪)।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ তিন মাস পূর্ব থেকে আনন্দ সরকার স্বপরিবার নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। স্থানীয় বিভিন্ন লোকের কাছে সহযোগিতা চাইলে ধর্ম পরির্বতনের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে হাটফাজিলপুর মানব কল্যাণ দাতা সংস্থার সদস্যদের নিকট যান। ওই সংস্থার সদস্যরা স্থানীয় চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাসকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি এই সংস্থার সদস্যদের উপর সব দায়িত্ব অর্পণ করেন।

দাতা সংস্থার সদস্যরা আনন্দ সরকারের স্বপরিবারের সদস্য নিয়ে গত বছরের ১৬ এপ্রিল ঝিনাইদহ বিজ্ঞ জেলা নোটারী পাবলিকের কার্যলয়ে উপস্থিত হয়ে এভিডেভিটের এর মাধ্যমে সনাতন ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তারা। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস মানব কল্যাণ দাতা সংস্থার সদস্যদের নিয়ে হাটফাজিলপুর বাজার জামে মসজিদের ঈমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ ইদ্রিস আলীকে দিয়ে তওবা ও কালেমা পাঠ করিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করান।

এদিকে এই ঘটনা গ্রামে পৌঁছানোর আগেই এলাকায় জানাজানি হলে তার বাড়িতে শতশত লোকের সমাগম ঘটে।

এ সময় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় মানব কল্যাণ দাতা সংস্থার সদস্যদের মাধ্যমে নব মুসলিম ওসমান গণির পরিবারের সদস্যদেরকে পাঞ্জাবী, পাইজামা, বোরকা, টুপি, তজবী, কুরআন ও চাল ডালসহ পরিবারের সমস্ত আসবাবপত্র কিনে দেয় বলে মানব কল্যাণ দাতা সংস্থার সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক মোল্ল্যা জানান।

এই ব্যাপারে নব মুসলিম ওসমান গণির স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, দীর্ঘ তিন বছর আগে তাদের বাড়িতে হঠাৎ একজন আলেম ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে নামাজ আদায় করতে চায় তখন সে দিশেহারা হয়ে মাটি দিয়ে তার ঘরের বারান্দার এক পাশে লেপে দেয় এবং বাক্স থেকে একটা নতুন চাদর এনে দিয়ে তাকে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করেন।

নামাজ শেষে উপস্থিত আলেম ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বাড়ি ওপারে বলে চলে যায়। চলে যাবার কিছু সময় পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে এলাকার কোথাও পাওয়া যায় না। তখন থেকেই আনন্দ সরকারের সদস্যরা ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুগত হয়ে পড়েন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন।

ঘটনাটি আনন্দ সরকারের স্ত্রী তার সব আত্মীয়-স্বজনদেরকে জানালে তারা কেউই ইসলাম গ্রহণে কোনো বাধা প্রদান করেনি। যে কারণে আনন্দ সরকার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্বেচ্ছায় মানব ক্যলাণ দাতা সংস্থার মাধ্যমে হাটফাজিলপুর বাজারে শতশত লোকের উপস্থিতিতে সনাতন ধর্ম ছেড়ে তওবা ও কালেমা পাঠ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিশ্বাস জানান, আমার উপস্থিতেই তারা স্বপরিবারে মিলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। তখন আমি প্রায় ৩ মণ মিষ্টি উৎসুক জনতার মাঝে বিতরণ করি। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin