দলের পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ভাইস-চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, যুগ্ম-মহাসচিবদের সাথে জরুরী বৈঠক ডেকেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপাসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিদেশি মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের ডেকে যা বললো বিএনপি
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়সহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি জানাতে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি।
দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ ও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে বিদেশি গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের ব্রিফ করে দলটি।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ফখরুল সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে।
ব্রীফিংকালে মির্জা ফখরুল বলেন, গভীর নীলনকশার এই রায়ের মূল লক্ষ্য বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। বিএনপিকে পর্যদুস্ত করা। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখা সম্ভব না।
তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে ঘিরে সারাদেশে বিএনপির সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। সরকার বাধা না দিলে তিনি প্রচলিত আইনেই বেরিয়ে আসবেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ রায় ফরমায়েশী, অবৈধ, বেআইনি, আইনের লঙ্ঘন। তাকে যে ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে, সেটা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ধারা নয়। তাই দুর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করা যায়নি।
ব্রীফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির প্রমুখ।
বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন বিবিসির সিনিয়র রিপোর্টার কাদির কল্লোল, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম, জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের ব্যুরো চিফ হারুন উর রশীদ ও ভারতীয় গণমাধ্যম জি মিডিয়ার ব্যুরো চিফ রাজীব খান, কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা, মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা ও পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিনিধিরা।
আইনি দিকগুলো তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেওয়াটা হলো অবৈধ, বেআইনি ও আইনের লঙ্ঘন। দুর্নীতির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনও সংযোগ নেই। এই মামলার বাকি পাঁচ আসামির ক্ষেত্রে দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা হলেও রায়ে খালেদা জিয়ার দুর্নীতির সংযোগের কথা বলা নেই।
তিনি বলেন, সরকারি তহবিলে এতিমদের জন্য কোনও তহবিল নেই। কুয়েত থেকে আসা টাকা লেনদেন করেছেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। টাকা ছাড় করার জন্য তিনি সরকারকে ব্যবহার করেছেন। সেই টাকার কিছুটা খরচ হলেও বাকিটা ব্যাংকে আছে, যা এখন সুদে-মূলে তিনগুণ হয়েছে। ফলে তহবিল তছরুপের কোনও বিষয় এই মামলায় নেই। এই তহবিলে অবৈধ উপায়ে সুবিধা নেওয়া হয়নি।