লালমনিহাটে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাফুজার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
লালমনিরহাট: প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান মিয়ার (৪৫) বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী বর্তমানে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাসান সরদার ।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে সিন্দুর্না ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে হাতীবান্ধায় থানায় মামলা করেছেন একাধিকবার ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বাবা।
অভিযুক্ত নুরুজ্জামান মিয়া হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক। তিনি এলাকায় খুবই প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার কিশোরী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে নুরুজ্জামানের প্রতিবেশী। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান।
ধর্ষণের শিকার কিশোরী বলেন, গত বছরের ২১ নভেম্বর নুরুজ্জামান আমাকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান। সেখানে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর থেকে একাধিকবার আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় বিষয়টি অস্বীকার করছেন নুরুজ্জামান।
কিশোরীর বাবা বলেন, নুরুজ্জামান স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তার কাছে আমরা অসহায়। এরপরও ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় হাতীবান্ধায় থানায় মামলা করেছি। এছাড়া আমাদের উপায়ও নাই বলে জানান ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নুরুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাসান সরদার বলেন, আসামি নুরুজ্জামানকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
লালমনিরহাটে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু রাদিয়াতুল জান্নাত
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬ মাসের এক শিশু কন্যা রাদিয়াতুল জান্নাত। সে উপজেলার উত্তর গোতামারী গ্রামের কারখানার শ্রমিক আতাউর রহমানের মেয়ে।
অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে না পারায় তার ভাল হওয়া ছেড়ে দিয়েছে নিয়তির হাতে। সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চিকিৎসার অভাবে নিস্পাপ ওই শিশুটির অবস্থা যত দিন যাচ্ছে অবনতি হচ্ছে। তার পিঠে মেরুদন্ডের উপড়ে টিউমার আকৃতির ক্ষত ও মাথা ফুলে যাচ্ছে।
শিশুটির মা আবদানা বেগম জানান, তার স্বামী ঢাকায় এক কারখানার শ্রমিকের কাজ করেন। হাতের জমাকৃত অর্থ চিকিৎসা করতে ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। শিশুটি বিরল রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিষয়টি তাই এখন ছেড়ে দিয়েছেন নিয়তির কাছে। তাদের বিরল রোগে আক্রান্ত কন্যা শিশু রাদিয়াতুল জান্নাতের চিকিৎসার জন্য সরকারের উচ্চ মহলসহ দেশে বিত্তবানদের নিকট মানবিক সাহায্যের আবেদন জানান।
শিশুটির বাবা আতাউর রহমান জানান, জন্মের পর জান্নাতের পিঠে একটু ক্ষতের দাগ দেখা গেলে প্রথমে চিকিৎসার জন্য হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: নাঈম হাসান নয়নের নিকট নেয়া হয়। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ্য না হওয়ায় রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিউরো সার্জারী বিভাগের ডাঃ মোঃ তোফায়েল হোসেন ভুঞার কাছে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে জানা যায়, শিশুটি ম্যানিগোসেল রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
ইহা মেরুদন্ডের মাঝে একটি ক্ষতের মত মেরুদন্ডটি দু’ভাগে বিভক্ত। পরে তাকে আবারো ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে সেখানেও একই রোগের কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। এ রোগের লক্ষণ দেখা যাওয়ায় চিকিৎসক যত দ্রুত সম্ভব অপারেশন করার জন্য পরামর্শ দেন।
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিউরো সার্জারী বিভাগের ডাঃ তোফায়েল হোসেন ভুঞা জানান, অপারেশনের মাধ্যমে শিশু রাদিয়াতুল জান্নাতকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কিন্তু এই অপারেশন করতে অন্তত ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। শিশুটি’র বাবা দোয়া আর্থিক সহযোগীতা চেয়েছেন দেশবাসীর কাছে মোবাইল নং ০১৭৮৯-৬৭৬৮৮০।
rtnn