দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আদালতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর সুপ্রিম কোর্টে এসে আইনজীবীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের কনফারেন্স রুমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তবে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে রাজি হননি তিনি। ‘এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করবো না’ বলে সভাস্থল ত্যাগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাভোকেট জয়নুল আবেদীন, সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদলসহ ২০ জনের মতো বিএনপিপন্থি আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন রুদ্ধদ্বার বৈঠকের বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে আছে জোর করে কাউকে আদালতে আনা যাবে না, বিশেষ করে অসুস্থ মানুষকে। অথচ খালেদা জিয়াকে জোর করে কারাগারে স্থাপিত আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ সমস্ত বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনা করেছি। দলের মহাসচিব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) এসেছিলেন এ নিয়ে আমাদের মতামত নেয়ার জন্য। এখানে অন্যকোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জন্য যে আদালত গঠন করা হয়েছে তা আইনগত কি না সে বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। আমরা আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, এই যে আদালত করা হয়েছে এটা বেআইনি আদালত। তাই এ বিষয়ে পরবর্তী কি পদক্ষেপ হবে তা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো এবং আপনাদের জানাবো।’
উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বুধবার সকালে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের ভেতরে বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস বসিয়ে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার বিচারকার্য চালানো হয়।
আদালতে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করে বিচারককে বলেন, ‘আপনার যত দিন ইচ্ছা সাজা দিন, আমি এ অবস্থায় আসতে পারবো না। এ আদালতে আমার ন্যায়বিচারও হবে না।’
এসময় বেগম জিয়া আদালতকে আরও বলেন, ‘আমি অসুস্থ। আমি বারবার আদালতে আসতে পারবো না। আর এভাবে বসে থাকলে আমার পা ফুলে যাবে। আমার সিনিয়র কোনও আইনজীবী আসেনি। এটি জানলে আমিও আসতাম না।’
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাকে জেলে রাখতেই এ আয়োজন করা হয়েছে। আমার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমার আইনজীবীদেরও আদালতে আসতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের যথাযথভাবে নোটিশ দেয়া হয়নি। যে প্রজ্ঞাপন গত রাতে করা হয়েছে, তা সাত দিন আগে কেন করা হয়নি?’
আধা ঘণ্টারও কম সময় আদালতের কার্যক্রম চলার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা না থাকায় শুনানি মুলতবি করে আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামান।
ব্রেকিংনিউজ