‘ম্যাডাম বললেন জিয়া পরিবারের বিচার করবে কে?

বিএনপির এক সময়ের দাপুটে নেতা সাদেক হোসেন খোকা। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি শাসনামলে একাধারে মন্ত্রী এবং মেয়র ছিলেন। বিএনপির যে মুষ্টিমেয় কয়েকজন তারেক জিয়ার বশ্যতা স্বীকার করেননি, তাঁদের মধ্যে খোকা একজন।

বেগম জিয়ার নিজস্ব লোক বলে পরিচিত। এখন ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। তবে রাজনীতির খোঁজখবর রাখেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ আছে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং বিএনপির।

সম্প্রতি জ্যাকসন হাইটে এক চায়ের আড্ডায় ২১ আগস্ট ২০০৪ এর স্মৃতিচারণ করলেন, ঢাকার সাবেক মেয়র। কর্মীদের জানালেন, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ছিল তারেক জিয়ার মাস্টার মাইন্ড। ম্যাডাম ঘটনা ঘটার পর জেনেছেন।’ ঐ দিনের স্মৃতিচারণ করে তিনি, জ্যাকসন হাইটের আড্ডায় বলেন, ‘আমি সচিবালয়ে ছিলাম।

আমার ব্যক্তিগত একজন স্টাফ জানালেন যে, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় বোমা হামলা হয়েছে। তখনো আমি বুঝিনি যে, এত ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। এরপর টেলিফোনে খবর আসতে শুরু করল।’ খোকা জানান, ‘এসময় ফালু আমাকে ফোন করে বলেন ম্যাডাম কথা বলবেন। বেগম জিয়া আমাকে দ্রুত দলীয় কার্যালয়ে যেতে বলেন।

উনি আশঙ্কা করছিলেন, আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ লোকজন বিএনপি অফিসে হামলা করতে পারে। দ্রুত আমি লোকজনকে খবর দিয়ে পার্টি অফিসে আসি।’ বিএনপির ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি সাদেক হোসেন খোকা জানান, ‘পার্টি অফিসে পৌঁছাতেই দেখি, বাবর (তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর) হাঁপাতে হাঁপাতে আমার দিকে ছুটে আসছে।

বাবরই আমাকে সব ঘটনা বলে। তখন আমি একটি কথাই বলেছিলাম, ‘তারেক বিএনপিকে ডোবাল। এর চরম মূল্য দিতে হবে।’ একজন শ্রোতা জানতে চাইলেন, মামলার আলামত ধ্বংস করা, অন্য খাতে মামলাকে নিয়ে যাওয়া এগুলো কীভাবে হলো? জবাবে খোকা বলেন, ‘আমি আর মান্নান ভাই (প্রয়াত বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া) বলেছিলাম, যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদেরই যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।’

আমি ম্যাডামকে বলেছিলাম, ’আমরা কেন এই বর্বরতার দায় নিতে যাবো। কিন্তু ম্যাডাম সেদিন পুত্রের ব্যাপারে অন্ধ ছিলেন। এরপর তিনি আর দেশনেত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি, একজন অন্ধ মা হিসেবে হত্যাকারীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।’

খোকা জানান, ’২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার পর ম্যাডাম আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে বসেছিলেন। তখন সাইফুর ভাই (প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান) তারেক কে কিছুদিনের জন্য বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন ম্যাডাম অত্যন্ত ক্ষেপে যান। বলেন, ‘বাংলাদেশে জিয়া পরিবারের বিচার করবে কে?‘ খোকা দু:খ করে বলেন, ‘এই একটা ছেলে বিএনপিকে পথে বসিয়েছে।

তখন আমরা দু’একজন ছাড়া কেউই তারেকের এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করিনি। এখনো অবস্থা তাই।’ সাদেক হোসেন খোকা বলেন, ’২১ আগস্ট তারেকের ক্রিমিনাল অ্যাক্ট, এ নিয়ে কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। তবে ম্যাডামের অপরাধ শুধু এটুকুই পুত্রকে বাঁচাতে তিনি রাষ্ট্র-যন্ত্রকে যথেচ্ছ ব্যবহার করেছিলেন।’

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin