ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচন নিয়ে সমঝোতা হয়নি জামাত-বিএনপির। শুক্রবার রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে জামাতের ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবর রহমানের আলোচনা কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়। ওই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন জামাত ঘোষিত মেয়র প্রার্থী সেলিম উদ্দিনও।
সেলিম উদ্দিন বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন ‘আশা করি ২০ দলীয় জোট মেয়র হিসেবে আমাকেই মনোয়ন দেবে। যদি আমাকে ২০ দল মনোয়ন না দেয় তাহলে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াব।’
মির্জ ফখরুল শুক্রবারের বৈঠকের ফলাফল দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবহিত করেছেন। আজ রাতে কোনো এক সময় সমঝোতার শেষ চেষ্টা করা হবে বলে বিএপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র পদ শূণ্য হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন। বিএনপির পক্ষ থেকে তাবিথ আউয়ালকেই আবার মেয়র পদে প্রার্থী করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এর মধ্যেই বিএপির প্রধান মিত্র জামাত মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর মহানগরীর আমীর সেলিম উদ্দিনের নাম ঘোষণা করে। সেলিম উদ্দিন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি। গত সপ্তাহে বেগম জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ২০ একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু জামাত মেয়র পদে নির্বাচনে অনঢ় অবস্থান নিয়েছে। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন ‘সরকারের ইঙ্গিতেই জামাত খেলছে। এজন্যই তারা আলাদা মেয়র প্রার্থী দিয়েছে।’ কিন্তু সেলিম উদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বরং তাবিথ আউয়ালকেই সরকারের ইঙ্গিতে দেওয়া প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন ‘তাবিথ কার আত্মীয় খোঁজ নিন।’
মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামাতের মখোমুখি অবস্থান নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মেয়র প্রার্থী: নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আ. লীগ?
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদপ্রার্থী নির্ধারণে নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে আওয়ামী লীগ। প্রাথমিক ভাবে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মো. আতিকুল ইসলামকে প্রার্থী করার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্ষমতাসীন দলটি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আতিককে মেয়র নির্বাচনে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পরিচালিত অন্তত তিনটি জরিপে দেখা গেছে, মো: আতিকুল ইসলামের জয়ী হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে অধিকাংশ ভোটার আতিকুল ইসলামকে চেনেই না। আনিসুল হকের যেমন ইমেজ ছিল এবং পরিচিতি ছিল, বিজেএমইএর সাবেক সভাপতির তেমনটি নেই। তিনটি সংস্থাই গোপন প্রতিবেদনে, প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত করা হবে।
জরিপ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন ‘আমাদের প্রার্থী এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দলীয় ভাবে ভালো প্রার্থী না পেলে আমরা অন্য কাউকে সমর্থন দিতে পারি।’
বাংলা ইনসাইডার