khaleda_zia

বেগম জিয়া ‘অযোগ্য’ হলেই নির্বাচন

আগাম নির্বাচন নয়, বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য হলেই নির্বাচন দেবে আওয়ামী লীগ। সরকারের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণাই পাওয়া গেছে। সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি বা কারও দাবিতে নয় বরং সরকার তার কৌশল হিসেবেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা ঠিক করতে চায়।

সংবিধান অনুযায়ী, ২০১৮র অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে সংসদ নেতা চাইলে যেকোনো সময় সংসদ ভেঙ্গে আগাম নির্বাচন দিতে পারেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমের কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘আগাম নির্বাচনের জন্য কমিশন প্রস্তুত।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এই মন্তব্যের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যেকোনো সময়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আওয়ামী লীগ।’ তিনি বলেছেন, ‘আগাম নির্বাচন প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারে।’

অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, বিএনপি আগাম নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুত।’

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘বর্তমানে সংসদের মেয়াদ চার বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এখন নির্বাচন হলে সেটা আর আগাম নির্বাচন বলা যাবে না।’ আবহাওয়া, ছুটি, রোজা ঈদে ইত্যাদি সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচনের সময় নির্ধারিত হয়, তাই ২০১৮ র যেকোনো সময়েই নির্বাচন হতে পারে।’ তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অক্টোবরের আগে নির্বাচন হলেই সেটা আগাম নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে।

সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বেগম জিয়া দন্ডিত হলে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অযোগ্য হবেন। ইতিমধ্যে তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং মামলায় দন্ডিত হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হয়েছেন। বিএনপির র্শীষ এই দুই নেতাকে নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার পর সরকার আর দেরি করতে চায় না, দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে চায়।

আওয়ামী লীগের একজন র্শীষ নেতা মনে করেন, জিয়া অরফানেজ এবং জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলা দুটোর রায় জানুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়া উচিত।’ তাঁর মতে এই মামলার রায়ের ওপর নির্বাচনের দিন তারিখ অনেকখানি নির্ভর করছে। আদালতও মামলা দুটো দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছে। গত বৃহস্পতিবার বেগম জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে না এলে, তাঁর জামিন বাতিল করে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

আইনজীবীরা বলছেন, এই গেপ্তারি পরোয়ানা বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করার জন্য নয়, বরং তিনি যেন আদালতে নিয়মিত হাজির হয়ে মামলা মোকাবেলা করেন সেজন্যই এটা করা হচ্ছে।

সরকার আশা করছে, এই মামলায় বেগম জিয়ার অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হবে। তিনি দন্ডিত হবেন। বিএনপি মনে করছে, এই মামলায় বেগম জিয়াকে দন্ডিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। আদালতে জবানবন্দিতে বেগম জিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, তাঁকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করার জন্যই এই মামলা। যে যাই চিন্তা করুক, এই মামলায় বেগম জিয়ার দুবছর বা তাঁর বেশি দন্ড হলে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।

আওয়ামী লীগ মনে করছে, বেগম জিয়া দন্ডিত হলে তার প্রতিবাদে বিএনপি আন্দোলনে যেতে পারে। এই আন্দোলনে মোকাবেলায় সরকার নির্বাচনী দাওয়াই দিতে চাইছে। সরকার দায়িত্বশীল নেতারা মোটামুটি নিশ্চিত, এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপির বড় একটা অংশ নির্বাচনে যাবে। আর বেগম জিয়া বিহীন বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে না-এমন চিন্তা থেকে সরকারের আগাম নির্বাচনের ভাবনা।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin