বিএনপি কি তাহলে নিষিদ্ধ হচ্ছে?

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে কি বিএনপি নিষিদ্ধ হবে? রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং আদালত পাড়ায় এই প্রশ্ন এখন আলোচনার শীর্ষে। দীর্ঘ শুনানির পর এই মামলা এখন শেষ পর্যায়ে। মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি তর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাদের সমাপনী বক্তব্য রাখবেন।

এর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে, এই চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার পর্ব। আদালত তার রায় ঘোষণার তারিখ ঘোষণা করবে। আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ইতিমধ্যেই বলেছেন যে, ‘সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ২১ আগস্ট মামলার রায় হতে পারে।’ ঐ মামলার প্রধান আসামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ তৎকালীন বিএনপি জামাত জোটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এ মামলার আসামী।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌশলী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেছে, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিলো একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন বিএনপি জামাতের প্রত্যক্ষ মদদে এই হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে।’

প্রবীণ এই আইনজীবী বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, দল হিসেবে বিএনপি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিএনপি এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটাতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে।’ তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই আদালতের কাছে বিএনপি সম্পর্কে একটি অবজারভেশন চাইবো। কারণ গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনায় বিশ্বাসী কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা ঘটাতে পারে না।’

সৈয়দ রেজাউর রহমান মনে করেন, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাই এই ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’ তিনি জানান, ‘ আমাদের সংবিধানের ৩৮(গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠন থাকতে পারবে না।

তাই যদি আদালতের কাছে আমরা তথ্য প্রমাণ দিয়ে প্রমাণ করতে পারি বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন তাহলে সংবিধানের ওই ধারা অনুযায়ী বিএনপি তার সাংগঠনিক অস্তিত্ব হারাবে।‘ নির্বাচন কমিশন তখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করে দেবে।‘

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রবীণ আইনজীবী এবং সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে সংগঠনের স্বাধীনতা কিছু শর্ত সাপেক্ষে দেওয়া হয়েছে। তাতে (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়।’ তিনি বলেন, ‘আদালতে যদি প্রমাণ করা যায় যে, বিএনপি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত তাহলে তা সংবিধানের ঐ ধারার আওতায় আসবে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, ‘বিএনপি যদি আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ বা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয় সেক্ষেত্রে তারা তাদের ধানের শীষ প্রতীকও হারাবে। সম্ভবত এ কারণেই কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ’২১ আগস্ট গেনেড হামলা মামলার রায়ের পর  বিএনপির অস্তিত্ব সংকটে পরবে।‘ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে, সেটা হলে তা হবে নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে সব থেকে বড় টুইস্ট।

বাংলা ইনসাইডার/

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin