বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগে গয়েশ্বরের আহ্বান

দলীয় সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে নারী শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত ‘আর কতকাল বন্দী থাকবে খালেদা জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

গয়েশ্বর বলেন , ‘২৯ ডিসেম্বর রাতের অবৈধ ফসল হচ্ছে আজকের পার্লামেন্ট। রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে যদি আমরা পার্লামেন্টে যোগ দিয়ে থাকি তাহলে আজকে আমাদের দায়িত্ব, যারা আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে আছেন তাদের সর্বপ্রথম পার্লামেন্টে পদত্যাগ করে জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পার্লামেন্টে থাকব, আবার সরকারের পতন চাইব, এ শব্দটা কিন্তু জনগণ পছন্দ করবে না। অর্থাৎ আমরা যেটা চাই সেটা জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে হবে যে, আসলেই আমরা সরকারের পতন চাই। তখন জনগণ রাস্তায় রক্ত দেয়ার জন্য আপনার পাশে দাঁড়াবে। যতক্ষণ আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জনগণের কাছে স্পষ্ট করে বুঝাতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো আন্দোলন দানা বেঁধে উঠবে না।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘আজকে খালেদা জিয়ার জামিন হবে কি হবে না তা আদালতের ওপর নির্ভর করে না। এসকে সিনহার যে নির্মম বিদায় হয়েছে তাতে বর্তামানে যারা বিচারপতি আছেন তারাও সাবধান। তাদের পরিণতি এরকম হোক সেটাতো তারা চাইবে না। এসকে সিনহার পরে বিচার বিভাগের যে অবস্থা তাতে তারা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে না।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে কি হবে না, সেটা নির্ধারণ করে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা অনুমতি দেবে কি না সেটা নির্ভর করে আরেকটি দেশের ওপর। কোন দেশে আমরা বসবাস করি? যে দেশে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। যার স্ত্রী সন্তানরা পাকিস্তানের কারাগারে আটক ছিলেন।

সেই স্বাধীনতার প্রতীক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জনগণের নেত্রী আজকে কারাগারে। আর তার মুক্তি হবে কি হবে না তা নির্ভর করে অন্য একটি দেশের ওপর। তারপরও কি আমরা এ বদ্ধ ঘরের মধ্যে শুধুমাত্র কথার ফুলঝুরি ছেড়ে দায়িত্ব পালন করছি, সেটা প্রমাণ করতে পারব? সেকারণেই আমাদের বুঝতে হবে, আমরা জেলখানায় আছি। আমাদের জেলখানায় যাওয়ার ভয় পেয়ে লাভ নেই।

আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে সারাদেশ, আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে দেশের নির্যাতিত নারীরা, আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে নির্যাতিত মানুষেরা। তাই আমাদের এ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’

‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এটা ভারত মনে করে না’ এমন মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘যদি তারা সেটা মনে করত তাহলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গে গেছেন, কিন্তু তাকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়নি কেন? অথবা, সরকারের পক্ষ থেকে তার কোনো প্রতিবাদ হয়নি কেন? কেন তিনি অনুষ্ঠান বর্জন করে দেশে ফিরে আসলেন না

বুঝতে হবে, যারা ৭১-এ আমাদেরকে সাহায্য করেছে, ৪৭ বছর পরে তারা মনে করে তারা সেদিন বিনিয়োগ করেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে নিতে চায়, তাদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া করা দরকার আপনাদের কাছে আমাদের ঋণের পরিমাণ কত? এ পরিমাণ নির্ধারণ হলে প্রয়োজনে আমরা ১৬ কোটি মানুষ রক্ত বিক্রি করে সে ঋণ শোধ করব। তবুও এ দেশকে কারো দাসত্বের অধীনে থাকতে দিবো না।’

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সভাপতি বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম প্রমুখ।

সূত্র: জাগো নিউজ

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin