ঢাকা থেকে লন্ডন ফিরে গিয়ে বিএনপি ভাঙ্গার আশঙ্কা করলেন সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। সিঁথি প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী। গত ১৬ আগস্ট তিনি তাঁর বন্দী শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে ঢাকায় আসেন।
কারান্তরীণ বেগম জিয়ার সঙ্গে সিঁথি এবারের সফরে দুবার সাক্ষাৎ করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পর এটা ছিল তাঁর দ্বিতীয় সফর। এবারের সংক্ষিপ্ত সফরে সৈয়দ শর্মিলা রহমান বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়াও বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন।
লন্ডনে ফিরে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন। এতে সিঁথি বলেছেন, যতই দিন যাচ্ছে বিএনপিতে হতাশা এবং বিভক্তি বাড়ছে।
আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপিতে বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা করেছেন বেগম জিয়ার এই পুত্রবধু। বিএনপির একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সিঁথির মতে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মধ্যে জনপ্রিয় নন, কিন্তু দলের বাইরে তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। নির্বাচনের ব্যাপারে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট নয় বলেও সিঁথি মন্তব্য করেছেন।
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে সরকারের ভালো যোগাযোগ রয়েছে বলে সিঁথির ধারণা। কোকোর স্ত্রীর মতে, বিএনপির একটি বড় অংশ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। অনেক সিনিয়র নেতাসহ অধিকাংশ মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন।
এই নির্বাচনে ইচ্ছুকদের এবার নির্বাচন থেকে দূরে রাখা কঠিন কাজ হবে বলেও সিঁথি মনে করেন। তাঁর মতে, যারা নির্বাচনে প্রার্থী নন এমন বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী আবার বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনের বিপক্ষে।
শর্মিলা রহমান জানিয়েছেন, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতার সঙ্গে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের গোপন যোগাযোগ আছে। গ্রেপ্তার এড়াতে এবং মামলা থেকে রক্ষা পেতে এরা সরকারের পরামর্শ অনুযায়ীই কাজ করে, কাজেই এদের নেতৃত্বে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা অসম্ভব ব্যাপার।
সিঁথি তাঁর সঙ্গে বেগম জিয়ার সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেছেন, তিনি মানসিকভাবে ক্রমাগত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। বেগম জিয়াও মনে করছেন, বিএনপি নির্বাচনে না গেলে তাঁর কারাবাস দীর্ঘায়িত হতে পারে। যে কারণে নির্বাচনের ব্যাপারে তিনিও আগ্রহী। কোকোর স্ত্রীর মতে, ‘জামাত’ এখন বিএনপির নতুন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জামাত থাকায় অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জোটে আগ্রহী নয়। আবার বিএনপির অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন, জামাতকে ছাড়া হবে ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সিঁথি তাঁর ব্যক্তিগত মতামতে, যে কোন মূল্যে প্রয়োজনে সরকারের সাথে দেন দরবার করে হলেও বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক জিয়াকে। সিঁথি বলেছেন, ’ওনার দিকে তাকানো যায় না।’
বাংলা ইনসাইডার