বাসে আগুন: সামনে যুবদল নেপথ্যে জামাত

আজ হঠাৎ করে ঢাকাশহর অশান্ত হয়ে উঠল। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে । এখন এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সময়ে ঢাকা শহরে নয়টি স্থানে বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। যদিও এ সমস্ত আগুনের ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি কেউ। কিন্তু এই ঘটনা জনমনে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সর্বশেষ প্রগতি সরণিতে বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। এই ঘটনা কারা করলো কিভাবে করলো তা নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।

প্রাথমিক যে তথ্য পাওয়া গেল তা হলো, যুব দলের ক্যাডাররা বাসে আগুনের মত নারকীয় তাণ্ডব ঘটিয়েছে। প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে যে, ঢাকা ১৮ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী ছিল যুবদলের নেতা জাহাঙ্গীর। সেই নির্বাচনের ফলাফলে কারচুপি হয়েছে এবং  ভোটাররা তাদের মতামত দিতে পারেননি।

এই অভিযোগেই তারা ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে বলা হচ্ছে।  সাদামাটাভাবে এটি নির্বাচনী ক্ষোভ বা অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করা হলেও গোয়েন্দারা মনে করছেন, এর নেপথ্যের কারণ আছে। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, যুবদল বাসে হামলা এবং আগুন লাগানোর মত ঘটনাগুলো ঘটালেও নেপথ্যে ছিল জামাত-শিবির চক্র। 

ঘটনার পেছনের কতগুলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে । দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি-জামাত জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ইস্যু খুজচ্ছে। কিন্তু কোনো ইস্যুকেই তারা কাজে লাগাতে পারছে না। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংকটের সময় তারা ধারণা করেছিল যে, এই সংকট ঘনীভূত হবে, প্রচুর মানুষ মারা যাবে ।

কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি বরং করোনা নিয়ন্ত্রণের সফল দেশগুলোর মধ্যে একটি রয়েছে বাংলাদেশ। আর এই পরিস্থিতিতে বিএনপি কিভাবে আন্দোলন করবে তার একটি উপায় খুঁজছিল। আর সে কারণে তারা বাসে অগ্নিসংযোগের পদটি বেছে নিয়েছে। এই অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে তারা ধারনা করছিল যে, অনেকগুলো লক্ষ্য তাদের অর্জিত হবে।

প্রথমত, এই ঘটনার ফলে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবে এবং তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনে উৎসাহী হবে। দ্বিতীয়ত, এই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে যাবে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত সে সমস্ত যুবদল জামাত-শিবিরের নেতাকর্মিদেরকে আইনের আওতায় আনবে।  

আর এটিকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি-জামাত জোট আন্দোলন করবে। তৃতীয়তঃ এর মাধ্যমে ঢাকা শহরে একটি অরাজক পরিস্থিতি এবং অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবে। আর এ কারণেই এ ধরনের ঘটনার জন্য তারা ঢাকাকে বেছে নিয়েছে।

বিএনপি জামাত সবসময় মনে করে যে, সারাদেশে আন্দোলন করে কোন লাভ নেই। বরং ঢাকাতে কিছু করতে পারলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা যাবে। আর এ কারণেই তারা আজ বিভিন্ন স্থানে বাসে আগুন দিয়ে জানান দেয়ার চেষ্টা করছে। এই ঘটনাটিকে অনেকে মনে করছে টেস্ট কেস। গত কিছুদিন ধরেই জামায়াত তাদের কর্মীদেরকে জমায়েত করছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি যুবদলটি জামাত অধ্যুষিত হয়ে পড়েছে ।

জামাতের নিয়ন্ত্রণে যুবদল চলছে। আর তাই যুবদলের মোড়কে আজকের যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে ঢাকা শহরে, সেই তাণ্ডবটি একটি নীল নকশার অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন যে, এই ঘটনার ফলাফলের ওপর তারা ভবিষ্যতে এরকম আরো কিছু ঘটনা ঘটাতে পারে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin