আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীর সমর্থকদের দ্বারা নির্বাচনী প্রচারণাকালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, হুমকি-ধামকি এবং লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মহুয়া নূর কচি।
মঙ্গলবার দুপুরে বনপাড়া উপজেলা কম্পাউন্ডের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মাঝগাঁও ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল আলীমও একই অভিযোগ করেন।
মহূয়া নূর কচি বলেন, বনপাড়া পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণাকালে নৌকার সর্মথকদের দ্বারা আমি প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হচ্ছি এবং ধানের শীষের নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি, গালিগালাজসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছে।
ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী বলেন, ১৩ ডিসেম্বর ৫ নং ওয়ার্ডের গোয়ালপাড়া, ৬ নং ওয়ার্ডের দিয়ারপাড়া গুচ্ছগ্রাম, ১৪ ডিসেম্বর ১০ নং ওয়ার্ডের কালিকাপুর বেড়পাড়া, ১১ নং ওয়ার্ডের চক নটাবাড়িয়া ও ১২ নং ওয়ার্ডের আটুয়া মহল্লায় নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে বাধা প্রদানসহ ধানের শীষ প্রতিকের নেতা কর্মীদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়া হয়।
এর আগে গত ০৮ ডিসেম্বর বনপাড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মহিষভাঙ্গা গ্রামে প্রচারণায় গেলে আঃ রাজ্জাক, সন্ত্রাসী জিন্না, জামিল, রিকণ, রাপ্পু, সাকিব, মাহাবুব, সিরাজ, মতিউর সহ ৫০/৬০ জন মিলে হুমকি দেয়। তারা বিএনপি নেতা কর্মীদের ধানের শীষের পক্ষে কাজ করলে, তাদের অবস্থা নিহত বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুর মতই হবে বলে হুমকি-ধামকি প্রদান করে।
অন্যদিকে ১৬ ডিসেম্বর ৯ নং ওয়ার্ডের কালিকাপুর নতুন বাজার এবং ১২ নং ওয়ার্ডের আটুয়া মন্ডলপাড়া এলাকায় প্রচারণা কালে পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক , যুগ্ম আহ্বায়কসহ নেতাকর্মীকে নৌকা সর্মথকরা লাঞ্ছিত করে এবং প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয় ভীতি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
তাছাড়া একই দিন ২ নং ওয়ার্ডের মালিপাড়া রোডে বাবু মেকারের দোকানের সামনে মহিলা কর্মী রঞ্জনা, সুফিয়া, রেহেনাসহ বেশ কয়েকজন নারী কর্মীকে লাঞ্ছিত করে প্রচারণা বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় সন্ত্রাসী জিন্না, রিকন, পাপ্পু ও মাহাবুবের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন তাদের নির্বাচনী কাজে বাধা দেয় ও প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়। গত ১৮ ডিসেম্বর কালিকাপুর পূর্বপাড়া রসূল সরদারের বাড়ির সামনে গেলে সন্ত্রাসী পিয়াস ও সাকিবের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী প্রচারণা কাজে বাধা দেয়।
এসময় মুঠোফোনে রিটার্নিং অফিসারকে জানালে জেলা নির্বাচন অফিসার আবুল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেসময় নৌকা সমর্থকরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের গাড়িতে হামলা করে। এমনকি মুঠোফোনে স্থিরচিত্র ধারণ করার জন্য জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের গাড়ি চালকের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে।
তিনি আরও বলেন, উপরোক্ত সন্ত্রাসীরা তার স্বামী শহীদ সানাউল্লাহ্ নূর বাবু হত্যা মামলার আসামী এবং এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত জেনেই তারা পরিকল্পিতভাবে শান্তির্পূণ ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট করছে।
বিএনপি মনোনীত মেয়র পার্থী মহুয়া নূর কচি সংবাদ সম্মেলনে ভোটারদের শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট প্রদানের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করে নির্বাচনের কমপক্ষে ৫ দিন পূর্বে পর্যাপ্ত যোগাযোগ মাধ্যম, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ সেনাবাহিনী মোতায়নের দাবি জানান।
বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক নাটোর জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিনের সঞ্চালনায় উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল হক।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং নলডাঙ্গা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন, বড়াইগ্রাম পৌর বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, হেলেনা বেগম, আব্দুর রহিমসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
rtnn