ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। ওআইসি’র বৈঠকের আগে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন এই দুই নেতা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলি রাজধানী ঘোষণার করায় জরুরি বৈঠকে বসেছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। বিশ্বের ৫৭ মুসলিম দেশের এই সংস্থার প্রতিনিধিরা বুধবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠকে বসছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির দৈনিক ডেইলি সাবাহ বলছে, দুই দেশের এ দুই রাষ্ট্রনেতা মঙ্গলবার রাতে বেলারবেয়ি প্যালেসে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে তারা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
গত ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দেয়ায় জরুরি বৈঠকের ডাক দেন ওআইসির সভাপতি রাষ্ট্র তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। বুধবার ইস্তাম্বুলে এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নিতে ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার প্রতিবাদে ইসরাইলি নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। গাজা উপত্যকা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে দফায় দফায় রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে অন্তত দুই হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুসলিম বিশ্বেও জোরালো প্রতিবাদ দেখা গেছে।
১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিন-ইসরাইল উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জেরুজালেম। পূর্ব জেরুজালেমে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে বলে প্রত্যাশা করছেন ফিলিস্তিনিরা।
গত বছর মার্কিন নির্বাচনে জয়ের পরপর তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
জেরুজালেম নিয়ে ওআইসির সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আজ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থা ওআইসি শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছে। বুধবার তুরস্কের রাজধানী ইস্তান্বুলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন। এতে জেরুজালেম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই সম্মেলনে যোগ দিতে ইতোমধ্যে ইস্তান্বুলে পৌঁছেছেন। বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় ইস্তান্বুল কংগ্রেস অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে ওআইসির এ বিশেষ সম্মেলনে তিনি জেরুজালেম বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে একতরফাভাবে ‘ইসরাইলের কথিত রাজধানী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্বের মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করায় মুসলিম বিশ্বের পরবর্তী পদক্ষেপের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ওআইসি-এর এই বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
জেরুজালেম ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইলি বাহিনী দখল করে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমকে (আল-কুদস আশ-শরিফ) ‘ইসরাইলের কথিত রাজধানী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সেখানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে।
ওআইসি এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আল কুদস (জেরুজালেম) নগরীকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যে স্বীকৃতি দিয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় আলোচনা করার জন্য একটি বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনের আহ্বান করেছে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভা। তারা এই বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে আল-কুদস এবং তার ঐতিহাসিক, আইনগত ও রাজনৈতিক অবস্থা ও ঘটনাবলি নিয়ে একটি সমন্বিত আলোচনা করবেন।
rtnn