ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিবাদ করলেন খালেদা জিয়া

গতকাল রোববার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বেগম জিয়া এখনও গৃহবন্দী। তাকে স্বাধীনভাবে কিছু করতে দেয়া হচ্ছে না’। বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। আজ সোমবার বেগম জিয়া তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দারকে ফিরোজায় ডেকে পাঠান।

শামীম ইস্কান্দারকে বেগম জিয়া বলেন, ‘ফখরুলকে এসব কথা বলতে কে বলেছে? আমাকে নিয়ে কথা বলার অধিকার ওকে কে দিলো? কোত্থকে সে এই সাহস পায়?’ বেগম জিয়া বলেছেন, ‘ফখরুল কি আমাকে আবার জেলে নিতে চায়’?

বেগম জিয়ার পারিবারিক সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। বেগম জিয়া, শামীম ইস্কান্দারকে নির্দেশ দেন, ফখরুলকে ফোন করে যেন এর ব্যাখা চাওয়া হয়। বেগম জিয়ার সামনেই শামীম ইস্কান্দার ফোন করেন বিএনপি মহাসচিবকে। শামীম ইস্কান্দার বলেন, ‘বেগম জিয়ার ইস্যু নিয়ে কেন কথা বললেন?’

জবাবে ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম সাত মাস ধরে মুক্ত। অথচ তিনি দলীয় কোন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন না। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন না। তার নামে আমরা কোন বিবৃতিও দিতে পারছিনা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর ফলে নেতা-কর্মীরা হতাশ হচ্ছে। তাদের হতাশা দূর করতেই এ ধরণের কথা বলেছি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো আসলে জানি না, কোন শর্তে কিভাবে তাকে বাইরে এনেছেন। কিন্তু জামিনে থেকে একটা বিবৃতিও দিতে পারবেন না, এটা কি করে হয়? কর্মীরা এটা মেনে নিতে পারছেন না।’

এবার শামীম ইস্কান্দারও ক্ষেপে যান ফখরুলের উপর। তিনি বলেন, ‘উনি কত অসুস্থ আপনারা জানেন না। ২৫ মাস উনি জেলে ছিলেন। তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? একটা আন্দোলনও তো করতে পারেননি।

আমি আপনাক বলেছিলাম, ওনার জামিনের বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখেন। কিন্তু সেটাও পারেন নাই। এখন উনি অন্তত বাসায় আছেন, ভালো মন্দ খেতে পারছেন। মানসিক শান্তিতে আছেন, এটা আপনাদের সহ্য হয় না।’

শামীম ইস্কান্দার বলেছেন, ‘উনি অসুস্থ। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়া বা মাথা ঘামানোর মতো অবস্থা তার নেই। তাছাড়া এসব টেনশন নিলে, তার শারিরীক অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে।’ বেগম জিয়ার ভাই বলেন, ‘আপনারা কি ওনাকে (বেগম জিয়াকে) মেরে ফেলতে চান? এখন এসব ব্যাপারে ওনাকে বিরক্ত করবেন না।’

শামীম ইস্কান্দার বলেছেন, ‘বেগম জিয়া গৃহবন্দী নন। অসুস্থতা এবং সারাদেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি চুপচাপ আছেন। এ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টির কোন দরকার নেই।

উল্লেখ্য, ২০১৮ ‘র ৭ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বেগম জিয়া কারাগারে যান। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাতেও তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। দুটি মামলায় তার মোট ১৭ বছরের কারাদন্ড হয়েছে।

২৫ মাস কারাভোগের পর গত ২৫ মার্চ তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পায় বিশেষ বিবেচনায় জামিন পান। গত সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় দফায় তাকে আরো ৬ মাস জামিন দেয়া হয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin