পাবনা রণক্ষেত্র, বিএনপি-ছাত্রদলের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত

পাবনায় বিএনপি-ছাত্রদলের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপি ও ছাত্রদলের ২৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।

সোমবার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শোভাযাত্রার আয়োজন করে জেলা ছাত্রদল ও বিএনপি। শোভাযাত্রায় বাধা দেওয়ার জের ধরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের।

ওই সংষর্ষে পাবনা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা এবং তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

নেতাকর্মীরা জানান, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুর ১টায় জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করার চেষ্টা করে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় দলীয় কার্যালয়ের সামনেই পুলিশ ওই শোভাযাত্রায় বাধা দেয়। পরে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শোভাযাত্রা করতে গেলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও লাঠিপেটা এবং পরে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

সংঘর্ষে পাবনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার হাবিবুর রহমান তোতা দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান জাফির তুহিন, আবুল কাশেমসহ অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও অ্যাগ্রিকালচার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলঅদেশের (অ্যাব) মহাসচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে হেলিকপ্টারে করে রাজধানীর একটি হাসপাতালে এবং বিএনপিকর্মী আবুল কাশেমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা জানান, ৪৭ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ‘গুলিবিদ্ধ’ সাতজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের ছোট ভাই ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আহমেদ মোস্তফা নোমান বলেন, ‘আমার ভাই তুহিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিকেল সোয়া ৫টায় তাকে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ ও বুলেট নিক্ষেপ করে।’ তিনি বলেন, ‘৪১ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও সাত রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৬ নেতাকর্মীকে আটক করে।’ তবে তাদের নাম জানাতে অস্বীকার করেন তিনি। ওসি আবদুর রাজ্জাক দাবি করেন, সংঘর্ষের ঘটনায় নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইট-পাটকেলে ৯ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনকে পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর থেকে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিনা উসকানিতে পুলিশ গুলি বর্ষণ করে এবং লাঠিচার্জ করে, এটা খুবই দুঃখজনক।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin