ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৮ জানুয়ারি, যাচাই বাছাই ২১ ও ২২ জানুয়ারি, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৯ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনের মিডিয়া সেন্টারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা এ তফসিল ঘোষণা করেন।
এর আগে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম আসাদুজ্জামান আরজু জানান, মেয়র পদে উপনির্বাচনের তফসিলের পাশাপাশি মঙ্গলবার ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে সংযুক্ত নতুন ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলন নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হবে।
২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আড়াই বছরের মাথায় ৩০ নভেম্বর মারা যান উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক। এরপর ১ ডিসেম্বর থেকে তার পর শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী মেয়র বা কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের আগে যদি কোনো পদ শূন্য হয়, তবে ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচন হবে। এই হিসেবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেখানে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।
জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন একটি বাস্তবতা : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন একটি বাস্তবতা। বিবিসির প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাৎকারে মি. হুদা বলেন, ‘আগে নির্বাচনগুলোতে সেনা মোতায়েন হয়েছে। সুতরাং এবারের নির্বাচনগুলোতে যে সেনা মোতায়েন হবে না সেটা বলা যাবে না। আমরা তো সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে কিছু দেখি না।’
জাতীয় নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে কিনা এ নিয়ে বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক হয়। সে প্রেক্ষাপটে মি. হুদা এসব কথা বলেন।
তিনি মনে করেন, কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন বয়কট করার আশঙ্কা নেই। আর যদি বয়কট করে, সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক যে প্রক্রিয়া আছে সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘সংবিধানের বাইরে তো কিছু করা যাবে না। তবে আমি শতভাগ আশাবাদী সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে,’ বলেন মি. হুদা।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি মনে করে একটি নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে আশ্বস্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশন কী করতে পারে?
এমন প্রশ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি বলতে পারি নির্বাচন কমিশন যে পরিবেশ-পরিস্থিতি হোক না কেন, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। কোন ধরনের সরকার হবে এটা নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করতে পারে না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সে সংলাপের উদ্দেশ্য ছিল সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং সংলাপের মাধ্যমে সবগুলো রাজনৈতিক দল আশ্বস্ত হয়েছে।
‘তারা সবাই বিশ্বাস করেছেন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব’।
তিনি দাবী করেন, বর্তমান কমিশনের অধীনে ৬০০’র বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি।
মি. হুদা বলেন, ‘আমরা যে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি সেটা জাতির কাছে আমরা প্রমাণ করেছি।’
সূত্র: বিবিসি