জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতি মামলা বা অন্য কোন মামলায় সাজা হলে ‘জেলে যেতে হতে পারে’ -এমন ‘ইঙ্গিত’ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
শনিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতি হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আমি যেখানেই থাকি না কেন, আপনাদের সঙ্গেই আছি। আপনাদের সঙ্গেই থাকব।
তিনি বলেন, আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোনও লাভ নেই। কিছু করতে পারবে না। অতীতেও আমাকে ভয়-ভীতি লোভ দেখিয়ে কোনও লাভ হয়নি।
প্রায় সোয়া এক ঘন্টার বক্তব্যে খালেদা জিয়া এনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। পুরো বক্তব্যের প্রথম অংশে সরকারের সমালোচনার নানা দিক তুলে ধরেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া আগামী দিনে দলের সঙ্গে বেঈমানী না করতে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যারা এক পা এদিকে, আরেক পা অন্যদিকে, তাদের বলছি, একবার ক্ষমা করেছি। আর না। ক্ষমা বারবার না। সকলের বিপদে সকলে একসঙ্গেই মোকাবিলা করতে হবে।
আস
নির্বাচনে অংশ নিতে ছয় শর্ত দিলেন খালেদা জিয়া
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ছয়টি শর্ত দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় খালেদা জিয়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে শর্তগুলো তুলে ধরেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন হতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে।
নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শর্তগুলো হলো:
* ভোট হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে * জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আসার মতো পরিবেশ তৈরি করতে হবে * ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে * নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে * ভোটের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে, সেনাবাহিনী মোবাইল ফোর্স হিসেবে কাজ করবে * যন্ত্রে ভোটের জন্য ইভিএম/ডিভিএম ব্যবহার করা যাবে না
সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি যেখানেই থাকি না কেন, আপনাদের সঙ্গে আছি। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ নেই। দলের নেতা ও এ দেশের মানুষের সঙ্গে আছি।’ তিনি দলের নেতাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ-প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ঐক্যবদ্ধ থাকতে নেতা–কর্মীদের পরামর্শ দেন।
সভায় ছয় শর্ত দেওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্বাহী কমিটির সদস্যদের কাছে জানতে চান, তাঁরা এর সঙ্গে একমত কি না। এ সময় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উচ্চ স্বরে বলেন, একমত।
সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের প্রয়োজনে এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। তিনি দলের নেতাদের বলেন, ‘একবার ক্ষমা করেছি। কিন্তু ক্ষমা বারবার করা যায় না। তাই দল ভাঙার যত চেষ্টাই হোক, কেউ ফাঁদে পা দেবেন না। যাঁরা দলের প্রতি অনুগত থাকবেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা হবে। যাঁরা থাকবেন না, তাঁদের আর ক্ষমা করা হবে না।’
‘সরকার আবার বিএনপিকে বেকুব বানাবে’
২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ মনে করেন ‘সরকার আবার বিএনপিকে বেকুব বানাবে। আবারও ধোঁকা খাবে দলটি। এবার গর্তে ফেলে বিএনপির কোমরটাও ভেঙ্গে ফেলবে।’ বিএনপি নেতৃবৃন্দকে পার্থ এভাবেই সতর্ক করেন। বিএনপির দুজন নেতাকে শুক্রবার পার্থ আরও বলেন, ‘সরকারের কৌশল না বুঝেই আপনারা (বিএনপি) চূড়ান্ত সংগ্রামে ঝাঁপ দিয়েছেন।
শিগগিরই চোরাবালিতে আন্দোলন আটকে যাবে।’ ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বিএনপির ওই দুই নেতার কাছে ভবিষ্যতবাণী করে বলেছেন, ‘৮ ফেব্রুয়ারি সম্ভবত বেগম জিয়া নির্দোষ ঘোষিত হবেন। ফলে আন্দোলনের বেলুন চুপসে যাবে।
বিএনপি বিজয় মিছিল করবে। ন্যায় বিচার হয়েছে বলে বিবৃতি দেবে।’ পার্থ বলেছেন, ‘দ্বিতীয় মামলায় আদালত খালেদা জিয়াকে দণ্ডিত করলে কারো কিছু বলার থাকবে না। জনগণও বিশ্বাস করবে ন্যায় বিচার হয়েছে। বিএপি একূল ওকূল দুকূলই হারাবে।’
বাংলা ইনসাইডার
নৌকা এমন ডোবা ডুবেছে যে তারা ভয়ে আছে: খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশে ডিজিটাল আইনের নামে কালাকানুন করা হয়েছে। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে এত আগে প্রচারণা চালাচ্ছে কারণ নৌকা এমন ডোবা ডুবেছে যে তারা ভয়ে আছে।
শনিবার সকালে হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় স্বাগত বক্তব্যে একথা বলেন খালেদা জিয়া। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে নির্বাহী সদস্যরা রাজধানীর বিলাসবহুল হোটেল লা মেরিডিয়ানে সভাস্থলে আসেন।
খালেদা জিয়া আরো বলেন, নির্বাহী কমিটির সভায় অনেক সদস্য আসতে পারেনি, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, দেশে গণতন্ত্র নেই। আগের মতো আবারো গুম খুন করা হচ্ছে।
সভায় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। উপস্থিত নির্বাহী সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যেসব নেতা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
কমিটি গঠনের ২২ মাস পর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কয়েক দফায় ভেন্যু পরিবর্তনের পর শেষ পর্যন্ত হোটেল লা মেরিডিয়ানে হচ্ছে এ বৈঠক।
সবশেষ ২০১৬ সালের ১৯ মার্চে বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসঃ চ্যানেল আই