bnp_somabesh

গণজোয়ারে চাঙ্গা বিএনপি, আসছে নতুন কর্মসূচি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সোমবার এক টুইট বার্তায় রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্ত্মিপূর্ণ জমায়েত ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরে ব্যাপক জনসমাগমের পর ঢাকার জনসভায় গণজোয়ার হওয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা এখন অনেক চাঙ্গা। জনতার স্বতঃস্ফূর্থ সমর্থন দেখে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে না গিয়ে পরবর্তী সময়ে জনগণকে সামনে রেখেই দাবি আদায়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা করছে দলটি। সঙ্গত কারণে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে খালেদা জিয়ার একাধিক কর্মসূচি করার চিন্ত্মা-ভাবনা শুরম্ন হয়েছে।

২০১৪ ও ১৫ সালে দুই দফা আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের তেমন কোনো সুযোগ পায়নি। প্রতিটি সভা-সমাবেশ ছিল বিধিনিষেধে মোড়া। এমনকি ইনডোর প্রোগ্রামেও বাধা এসেছে। সর্বশেষ গত মাসে খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফরে ব্যাপক জনসমর্থন দলের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে। এরপর রোববার ঢাকার সমাবেশে লাখো জনতার ঢল নামায় কর্মীরা আরও চাঙ্গা হয়েছে। বলতে গেলে দীর্ঘদিন থেকে হামলা-মামলা ও গুম আতঙ্কের মধ্য দিয়ে আসা বিএনপি ক্রমশ জেগে উঠেছে।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচি সফল হলেও ঢাকায় এসে তা থেমে যাওয়ার অপবাদও অনেকটা ঘুচেছে। ঢাকায়ও বিএনপি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী তার প্রমাণ মিলেছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উলস্নাহ হাসান জানান, ঢাকা বিএনপি অনেক দিন বড় কর্মসূচি পালনের সুযোগ পায়নি। এবার সুযোগ পেয়ে ঢাকাতেও বিএনপি যে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী তার প্রমাণ দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে ঢাকার সব কর্মসূচিতে সাংগঠনিক শক্তির আরও প্রমাণ মিলবে।

বিএনপি সূত্রমতে, সম্প্রতি দেশব্যাপী বিএনপির ব্যাপক জনসমর্থনের বিষয়টি সামনে এলেও দাবি আদায়ের জন্য জ্বালাও-পোড়াও জাতীয় কোনো আন্দোলনে যেতে চায় না দলটি। এর প্রমাণ হিসেবে সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে বিএনপি প্রধান রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি প্রধান্য দিয়েছেন। একটি বারের জন্যও কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের কথা বলেননি। বিএনপি এখন শুধু জনগণকে সামনে নিয়ে জনমুখী দাবি আদায়ের পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করতে চায়। আর এই দাবি আদায়ে বিএনপির পক্ষের গণজাগরণের বিষয়টি জানান দিতে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কয়েকটি কর্মসূচি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের আসন্ন কয়েকটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি প্রধানের সড়কপথে দেশের বিভিন্ন স্থান সফর করার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র জানায়, আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ছয় সিটিতে যাওয়ার কথা ভাবছেন খালেদা জিয়া। সিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর। সড়কপথে এ সব সিটিতে সফর করে সারাদেশের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করাই মূল লক্ষ্য। এ সময় যাত্রাপথে যে সব জেলা পড়বে সেগুলোতে এক ধরনের জনসংযোগও সেরে ফেলবেন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া আগামী ২০ নভেম্বর বগুড়া বিএনপি তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যেতে পারেন খালেদা জিয়া।

বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, বিএনপির পক্ষে গণজোয়ারের কারণে দলের কিছু পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন ইসু্যতে ক্ষমতাসীনদের কিছুটা ছাড় দিয়ে সহায়ক সরকারের প্রস্ত্মাব দেয়ার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির। তা থেকে একেবারেই দলটি সরে এসেছে। সহায়ক সরকারের প্রস্ত্মাবনা আর দেয়া হবে না। এবার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বচন দেয়ার একদফা দাবি আদায়ে শান্ত্মিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। বিএনপির বর্তমান এই প্রক্রিয়া দেশে ও বিদেশে ব্যাপক প্রসংশিত হচ্ছে বলেও দাবি দলের এই নেতার।

বিএনপির আন্দোলনের পরবর্তী পরিকল্পনার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় জানান, সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্ত্মাবনা দেয়ার চিন্ত্মা থেকে সরে এসেছে বিএনপি। এখন একটাই দাবি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এ জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্ত্মিপূর্ণভাবেই দাবি আদায়ে বিশ্বাস করে বিএনপি। এর অংশহিসেবে রাজনৈতিক সমঝোতার ডাক দেয়া হয়েছে। এবার ক্ষমতাসীনদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলেও মনে করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

টুইটে খালেদা জিয়ার অভিনন্দন

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সোমবার টুইটে তিনি এই অভিনন্দন জানান।

টুইটে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, রোববারের জনসভায় সরকার ও তাদের দলীয়দের শত বাধা-বিঘ্ন উপেক্ষা করে তার দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয়ে সমাবেশকে সাফল্যম-িত করেছেন। শান্ত্মিপূর্ণ জমায়েত ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য তিনি সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

উৎসঃ   যায়যায়দিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin