বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপি’র হাল ধরবেন তারেক রহমান। লন্ডনে বসেই তিনি দল চালাবেন বলে জানালেন শীর্ষনেতারা। তবে রায়ের অপেক্ষায় থাকা মামলাটিকে ভিত্তিহীন দাবি করে তারা বলেন, বেগম জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হলে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ঝড় উঠবে দেশে। এটি সরকারের জন্য বুমেরাং হলেও বিএনপি’র জনপ্রিয়তা বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বিএনপি’র নীতিনির্ধারকরা।
২৩৬ কার্যদিবসের বিচারিক কার্যক্রম শেষে আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরা এ মামলায় খালাস পাবেন বলে তাদের আইনজীবীরা আশা করলেও সবোর্চ্চ সাজার প্রত্যাশা করছে দুদক।
খালাস নাকি সাজা, এ নিয়ে আলাপ-আলোচনায় সরগরম রাজনৈতিক অঙ্গন। আগামী নির্বাচনে বেগম জিয়ার অংশগ্রহণ সম্ভব হবে কিনা তা-ও অনেকটাই নির্ভর করছে এ রায়ের ওপর। এ কারণেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছেন দলের শীর্ষনেতারা।
মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের আগে এমন ষড়যন্ত্র মূলক বিচার ও রায় এদেশের গণতন্ত্রকে আরোও দূরে ঠেলে দিবে। খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা এখনো বিশ্বাস করি যদি দেশে আইনের শাসন থাকে ন্যায় বিচার থাকে তাহলে এই মামলায় কোন অবস্থায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া সম্ভব না।
বেগম জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়া হলেও বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে পড়বে না বলে মন্তব্য শীর্ষনেতাদের। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে দল চালাবেন তারেক রহমান।
মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া না থাকলে তার পরবর্তী ব্যক্তি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল চালাবেন। বর্তমান ডিজিটাল যুগে বাইরে থেকেও দেশ পরিচালনা করা সম্ভব।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আছে, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আছেন। ঘাবড়াবার কিছু নেই। নেতৃত্বের অভাব হবে না।
এ অবস্থায় দল ও বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে বলে মন্তব্য এই নেতাদের। গণ-প্রতিরোধ সৃষ্টির পূর্বাভাসও দিচ্ছেন তারা।
মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, অন্যায় ভাবে সাজা দিলে অদূর ভবিষ্যতে দেশে গৃহযুদ্ধ বাধবে। খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বিরুদ্ধে আইনের শাসনের জন্যে তারা রুখে দাঁড়াবে। এবং সরকারের জন্যে এটা বুমেরাং হতে পারে।
এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলের কর্মসূচি কেমন হবে দল সেই পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করছে বলে জানালেন বিএনপি’র শীর্ষনেতারা।
উৎসঃ সময় টিভি
হঠাৎ উত্তপ্ত দেশ, পেছানো হতে পারে খালেদার রায় ঘোষণা
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ৮ ফ্রেব্রুয়ারি ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ মামলাটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অনেক আগ থেকেই বিতর্ক চলে আসছে। খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতারা বরাবরই বলে আসছে মামলাটি ভিত্তিহীন। রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করতেই সরকার হাতিয়ার হিসেবে ভিত্তিহীন এ মামলা বেছে নিয়েছে।
যদিও সরকার বলছে আদালতের উপর তাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। মামলাটি আইন অনুযায়ীই চলছে। তবে, মামলার রায় নিয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর মন্তব্যে মানুষের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, খালেদা জিয়ার এ মামলা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার মামলার রায়ের দিন ধার্য করার পর থেকে এ উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শুক্রবার বলেছেন, সরকার যদি এ রায় নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চায় তাহলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় রায় হলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে।
বিএনপি নেতাদের কাউন্টারে পাল্টা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। রায় নিয়ে বিএনপি কোনো আন্দোলনে গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সরকারের মন্ত্রীরা।
সরকারের মন্ত্রী ও বিএনপি নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে পরিস্থিতি এখন জটিল আকার ধারণ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতরাও খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
অপরদিকে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য হলেও সরকারের উচ্চমহলও পরিস্থিতিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
অসমর্থিত একটি সূত্রে অ্যানালাইসিস বিডি জানতে পেরেছে, মামলার রায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেই যাবে। তাই, ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকার দেখবে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। রায়ের ঘোষণার কারণে যদি বড় ধরণের কোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাহলে রায় ঘোষণা পিছিয়েও যেতে পারে। আর সরকার যদি মনে করে যে রায়ের পর যেকোনো সৃষ্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে তাহলে নির্ধারিত সময়েই রায় ঘোষণা হবে। এখন রায় ঘোষণার বিষয়টি নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর।
অ্যানালাইসিস বিডি