করোনাকালীন সময়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকায় এসেছিলেন। তার এই আকস্মিক সফর নিয়ে কূটনীতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ সন্ধ্যায় ঢাকায় এসেছেন মার্কিন মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন-ই-বিগান।
তিন দিনের সফরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। করোনার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন তার নাগরিকদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিচ্ছে, ঠিক তখন বিগ্যানের তিন দিনের সফর নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাব গুটিয়ে ফেলা হচ্ছিল।
বাংলাদেশ নীতিতে ভারত নির্ভরতা প্রকাশ্য হয়েছিল। ভারত যেটা বলবে সেটা মেনে নিয়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কূটনৈতিক কৌশল সাজাচ্ছিল। বিশেষ করে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, মার্কিন কূটনীতিতে উপ-মহাদেশ গুরুত্বহীন হয়ে পরেছিল। ট্রম্পের কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য ছিলো মধ্যপ্রাচ্য।
কিন্তু গত কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ আবার বাড়তে শুরু করেছে। শুধু ভারতের উপর নির্ভর করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বস্তি পাচ্ছে না। এর কারণ বিশ্লেষন করতে গিয়ে কূটনীতিকরা বেশ কিছু কারন সামনে আনছে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. বাংলাদেশেচীনেরবানিজ্যিকআধিপত্য : বাংলাদেশে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ, উন্নয়ন প্রকল্প গুলোতে চীনের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করেছে? এজন্যই কি চীন অর্থনৈতিক আধিপত্য রুখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নড়ে চড়ে বসেছে?
২. ভারতেরসঙ্গেবাংলাদেশেরসম্পর্কেরটানাপোড়েন: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। বিশেষ করে পিয়াজ রপ্তানী বন্ধ, সীমান্ত হত্যা ইস্যু গুলো নিয়ে বাংলাদেশে একটা ভারত বিরোধী মনোভাব তৈরী হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু ভারতের উপর নির্ভর থাকতে চায় না, বলেই মনে করছেন অনেক কূটনীতিক।
৩. বাংলাদেশেবাজার : বাংলাদেশে এখন একটা বিরাট জনগোষ্ঠী তৈরী হয়েছে যাদের ক্রয়ক্ষমতা আছে। বাংলাদেশ এখন একটি বড় বাজার। এই বাজারের হিস্যা নিতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও।
৪. বাংলাদেশেবিনিয়োগ : বাংলাদেশে এখন বড় বড় বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সুযোগকে হাত ছাড়া করতে চায় না।
৫. বঙ্গোপসাগর: কৌশলগত কারণে বঙ্গোপসাগর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই বঙ্গোপসাগরের কর্তৃত্ব যেন চীন বা ভারতের কাছে না যায় সেটি মার্কিনীদের এক বড় উদ্বেগের বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার