manna_nagorik_okko

কাজটা ঠিক করিনি, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি: মান্না

ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হককে নিয়ে মঙ্গলবার রাত ১০টা ২২ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক পেইজে দেয়া স্ট্যাটাসটি সরিয়ে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক পেইজে পুনরায় স্ট্যাটাস দিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না এই দুঃখ প্রকাশ করেন। আগের স্ট্যাটাসের বিষয়টি উল্লেখ না করে পুনরায় দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন-

SA Tv র খবর দেখে আবদুল্লা আমাকে জানিয়েছিল। হাসান সহ আমরা যারা একসাথে পড়তাম সবাই ভুল বুঝেছিলাম। তবুও মনে করি কাজটা ঠিক করি নি। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।

আবদুল্লা ফোন করে খবরটা দিল:

আমাদের উভয়ের বন্ধু সতীর্থ, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ( উ:) এর মেয়র আনিসুল হক মারা গেছেন। এত প্রান বন্ত, জীবন্ত একটা মানুষ নাই ভাবতেই পারছি না। গভীর শোক প্রকাশ করছি তার মৃত্যুতে। ভাবী এবং সন্তান-সন্ততি সহ পরিবারের সকলের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা।

তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক সাংবাদিকদের বলেন, সংক্রমণের কারণে আনিসুল হককে আবার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। গত ৪ অগাস্ট অসুস্থ হয়ে পড়লে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ভর্তির পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল আনিসুল হককে।

অবস্থার উন্নতি ঘটার পর গত ৩১ অক্টোবর তাকে আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশনে স্থানান্তরের খবর জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তার এক মাসের মধ্যে ফের আইসিইউতে নেওয়া হল ৬৫ বছর বয়সী আনিসুল হককে। নাতির জন্ম উপলক্ষে গত ২৯ জুলাই সপরিবারে লন্ডনে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন আনিসুল হক।

অসুস্থ বোধ করায় অাগস্টের মাঝামাঝিতে লন্ডনের একটি হাসপাতালে গেলে সেখানে পরীক্ষা চলার মধ্যেই সংজ্ঞা হারান তিনি। পরে তার মস্তিস্কের রক্তনালীতে প্রদাহজনিত সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিস শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা।

এদিকে আনিসুল হকের অসুস্থতা নিয়ে নানা গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বিবৃতি দিয়ে জানায়, তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

কোনো কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল মেয়র আনিসুল হক এবং তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা করে চলছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। রুবানা হকও সামাজক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বামীকে নিয়ে নানা খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন।

তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী আনিসুল হক ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।

আনিসুল হকের জন্ম চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালি জেলায় ১৯৫২ সালের ২৭ অক্টোবর। তার শৈশবের বেশ কিছু সময় কাটে তার নানাবাড়ি ফেনী জেলার সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে একই বিষয়ে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন আনিসুল হক।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০-এর দশকে দশকে টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পূর্বে বিটিভিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার মুখোমুখি একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনও করেছিলেন তিনি।

তবে পরে টেলিভিশনের পর্দায় মানুষ তাকে বেশি দেখেছিল ব্যবসায়ী নেতা হিসেবেই। ২০০৫-০৬ সালে বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ২০০৮ সালে তিনি হন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের সভাপতি।

মেয়র নির্বাচনে মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুল হক নিজের হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন, তার নিজের কোনো গাড়ি কিংবা বাড়ি নেই; যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার খোরাক ‍যুগিয়েছিল।

টিভি উপস্থাপনা থেকে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে ২০১৫ সালে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নগরকর্তার দায়িত্ব নেন আনিসুল হক। মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তার ভাষায়, এর মধ্য দিয়ে (তাকে মেয়র পদে সমর্থন) রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের এক সম্মিলন হল।

নিজের নির্বাচনী ইশতেহারে আনিসুল রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও ‘স্মার্ট’ নগরী হিসাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অনেকটা সে পথেই এগুচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ শরীরে মরণব্যাধি বাসা বাঁধে। দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

আরটিএনএন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin