এক সিটি ও দুই উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা রাতে

বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপ-নির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন আগামী ২৯ মার্চ হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। এ তিন নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকের পর প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে ছয়জন, বগুড়া-১ উপ-নির্বাচনে ৯ জন ও যশোর-৬ উপ-নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দলীয় ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বাংলানিউজকে বলেন, যারা ফরম জমা দিয়েছেন সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। পরে প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন দলীয় মহাসচিব।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য যারা ফরম সংগ্রহ করেছেন তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের নাম সবার শীর্ষে। ধারণা করা হচ্ছে কোনো চমক না থাকলে ডা. শাহাদাতই এবার পেতে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন।

জানতে চাইলে দলের যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলানিউজকে বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি যতদূর জানি ডা. শাহাদাত হোসেন মনোনয়ন পেতে পারেন। চসিক থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আরও যারা আগ্রহী তাদের মধ্যে আছেন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ, মহানগর বিএনপির বর্তমান যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খান, নগর বিএনপির সহসভাপতি আজম উদ্দিন ও নগর বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা. লুসি খান।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দলীয় হাই কমাণ্ডের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে অনেক আগেই মাঠে কাজ করছেন। তিনি চট্টগ্রামকে প্রাধান্য দিয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে সরে দাড়ান। ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ডা. শাহাদাত হোসেন। 

তখন তিনি কারাগারে থেকেই নির্বাচন করেন। সেই নির্বাচনে কারাগারে থেকে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে হেরে যান বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে। এরপর থেকে তিনি সিটি নির্বাচন সামনে রেখে কাজ শুরু করেন।

জানা যায়, চসিক নির্বাচন সামনে রেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিন তিনি সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথাও বলেন।

উপ-নির্বাচন 
যশোর-৬ আসন

যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এখানে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে ফরম সংগ্রহ করেছেন পাঁচজন প্রার্থী। তারা হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তরুণ নেতা অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফিজুর রহমান, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম বিশ্বাস ও মো. নূরুজ্জামান তপন। 

এই আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন আবুল হোসেন আজাদ। এবারও তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইসমাত আরার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। 

বগুড়া-১ আসন

আওয়ামী লীগের তিনবারের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন কে পাবেন সেটি জানা যাবে সোমবার রাতে। এদিন দলীয় মনোনয়ন বোর্ড আগ্রহীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর একজনের নাম ঘোষণা করবেন। এরই মধ্যে এই আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যশায় দলের নয়জন নেতা ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য একাদশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম এবার ফরম সংগ্রহ করেননি। ফরম নিয়েছেন তার ভাই কাজী এরফানুর রহমান। 

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, কাজী রফিকুল ইসলাম অসুস্থতার কারণে এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। অপরদিকে যারা ফরম নিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, সোনাতলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির, জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক শিশুবিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) বগুড়া জেলা কমিটির আহ্বায়ক শাহ মো. শাহজান আলী, সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, বিএনপি নেতা মো. শহীদ উন নবী সালাম, এসএম রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল আলম ও  বেলাল হোসেন।

ঢাকায় বসবাসকারী কাজী রফিকুল ইসলাম ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলের প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন। এবার তিনি দলীয় ফরম সংগ্রহ না করায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল তৈয়ব জাকির মনোনয়ন পেতে পারেন বলে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন।

সূত্র: বাংলা নিউজ ২৪

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin