আর কতদিন শামীমের বোঝা বইবে আ. লীগ?

ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থক এবং পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় মেয়র আইভী, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়। ঘটনার জন্য একজনকেই বিশেষ ভাবে দায়ী করা হচ্ছে, তিনি হলেন শামীম ওসমান।

শুধু এ ঘটনাই নয়। গত কয়েক দশকে নারায়ণগঞ্জের অনেক সংঘাতের নেপথ্যের নায়ক শামীম ওসমান। এ সময়ে শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় পুরো বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইমেজে বারবার কালিমা লেপন করেছেন তিনি। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে আওয়ামী লীগে। পরবর্তী কালিমা লেপনের অপেক্ষায়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ভাষা আন্দোলনের সৈনিক এ কে এম শামসুজ্জোহার ছেলে শামীম ওসমান। পিতার পরিচয়ের বাইরে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের অন্যতম সংগঠক। তবে এসব পরিচয় ছাপিয়ে দেশজুড়ে আওয়ামী লীগকে লজ্জায় ফেলা নেতাদের তালিকা করা হলে শামীম ওসমানেরই শীর্ষে থাকারই কথা।

নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি রাজনৈতিক সংঘাতসহ নানারকম অপরাধে সংশ্লিষ্টতায় নাম আসে শামীম ওসমানের। তাঁকে নারায়ণগঞ্জের গডফাদারও বললেও কম করেই বলা হবে। আর আওয়ামী লীগে এমন গডফাদারদের আছর এই প্রথম নয়। এর আগে জয়নাল হাজারী, এইচ এম ইকবাল, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীও ভর করেছিল আওয়ামী লীগের ওপর।

তাদের অবস্থার যে পরিণতিই হোক না কেন, শুধু তাদের কারণেই ২০০১ সালের নির্বাচনে অনেক ভোট কমেছিল আওয়ামী লীগের। হাজারী, ইকবাল দুজন আওয়ামী লীগ থেকে বাদ পড়ে নিজেদের অস্তিত্বই হারিয়েছেন। আর মায়ার অবস্থা এখন নিভু প্রদীপের সঙ্গেই শুধু তুলনা করা যায়।

শামীম ওসমান নামক অছর এখনো রয়ে গেছে আওয়ামী লীগে। তাঁর কারণে আওয়ামী লীগ শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছেই নিন্দার পাত্র হচ্ছে না, দেশবাসীর কাছেও আওয়ামী লীগ নিয়ে বিরূপ মনোভাব তৈরি হচ্ছে।

একজন শামীম ওসমানের কারণে আওয়ামী লীগকে গডফাদারদের আশ্রয়দাতাও বলতে পারছে মানুষ। কিন্তু কেন? একজন শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের বাইরে চলে গেলে খুবই কি ক্ষতি হবে আওয়ামী লীগের? হাজারী, ইকবাল চলে যাবার পর কী হারিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ? নাকি তারাই হারিয়ে গেছে ইতিহাসের আস্তকুঁড়ে?

তাই শামীম ওসমানের বিষয়ে আওয়ামী লীগকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচনের এই বছরে জনগণের চক্ষুশূল শুধু পিতৃপরিচয়ের কারণে একজনকে দলে রাখা হবে। নাকি তাঁকে বহিস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে আওয়ামী লীগের জনসংশ্লিষ্টতার পরিচয় আরেকবার তুলে ধরা হবে। আওয়ামী লীগকেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং তা নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin