khaleda_03

‘আমাকে জেলে নিলেই সরকারের পতন হবে’

সপ্তাহে দুইদিন করে গুলশান থেকে বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আগে আদালতে যেতে বেগম জিয়ার দারুণ অনীহা ছিল। অন্তত দেড়শবার তিনি সময় নিয়ে আদালতে যাননি। ছয়বার মামলার বিভিন্ন দিক চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে গেছেন। বকশী বাজারের আদালত স্থাপন নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু এখন বেগম জিয়াই বকশীবাজারে যেতে উৎসাহী। মামলার কর্যক্রমেও তিনি অংশ নিচ্ছেন। বকশীবাজার আদালতের চারপাশে নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় তাঁকে আনন্দ দিচ্ছে। তার আদালতে যাওয়া এবং আসার পথে কর্মীদের উপস্থিতিও তাঁকে স্বস্তি দিচ্ছে। তাই আগামী সপ্তাহে তিনদিন শুনানি দিলেও বেগম জিয়া আপত্তি করেননি।

বেগম জিয়ার ‘আদালত যাত্রা’ ঢাকায় বিএনপি সংগঠনে নতুন প্রাণ দিচ্ছে বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করছেন। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এভাবে আর কিছুদিন বেগম জিয়া আদালতে যাওয়া আসা করলে মানুষের ঢল নামবে।

বৃহস্পতিবার আদালতে মধ্যাহ্ন বিরতির সময় আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপে বেগম জিয়া ছিলেন উৎফুল্ল। তিনি বলেছেন, ‘লোকজন রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। এটা আরও বাড়াতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের উপকারই করেছে, আমাদের আন্দোলনের প্রস্তুতি ভালোই হচ্ছে।‘এসময় ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বিএনপি চেয়ারপারসনকে বলেন, ‘শুধু বিএনপি কর্মী নয় সাধারণ মানুষও এখন আদালত প্রাঙ্গনে আসছেন। এখান থেকেই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হবে।’

বেগম জিয়া বৃহস্পতিবার আদালতে ছিলেন চনমনে। উপস্থিত আইনজীবীদের সঙ্গেও তিনি কথাবার্তা বলেছেন।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, বেগম জিয়ার নিয়মিত আদালতে যাবার ফলে ঢাকার বিএনপি চাঙ্গা হচ্ছে। এই ঢাকাই ছিল বিএনপির ব্যর্থতার প্রধান স্থান। এখন এই সুযোগে বিএনপি মহানগরী সংগঠন গুছিয়ে নিতে পারছে। কর্মীরাও আস্তে আস্তে মনোবল ফিরে পাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বেগম জিয়ার আদালতে যাওয়া আসার পথে কর্মীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে তাঁরা যেন সড়কের পাশে অবস্থান নেয়।

বিএনিপির একজন নেতা বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার এই চলাচল ঢাকায় গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তৈরি করেছে।’ বিএনপির অন্য নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, দেশে গণঅভ্যুত্থানের সব রসদই মজুত আছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, গুম-খুন, ব্যাংক ডাকাতি ইত্যাদি কারণে মানুষের দমবন্ধ অবস্থা।

এ অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসনের মামলা বারুদের স্তুপে একটা দেয়াশলাই এর মতো কাজ করতে পারে।’ বিএনপি নেতারা বলছেন তাঁরা রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের গন্ধ পাচ্ছেন। সেজন্যই মামলার রায়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ফুরফুরে বেগম জিয়া। বৃহস্পতিবারও আদালতে বলেছেন, ‘আমার কিছুই হবে না, আমাকে জেলে নিলেই সরকারের পতন হবে।’ বেগম জিয়া এটাও তাঁর আইনজীবীদের বলেছেন, ‘এই মামলা চালিয়ে সরকার নিজেই নিজের করব খুঁড়েছে।’

আগামী সপ্তাহেই দুই মামলার একটির কার্যক্রমে শেষ হতে পারে।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin