বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে তিনিই প্রথম নারী হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াই বাংলাদেশের প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী যিনি দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে। এখন আরেকটি বিষয়ে প্রথম হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করছেন খালেদা জিয়া।
আগামীকাল বুধবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগারে আদালত বসছে। দেশের ইতিহাসে কারাগারে আদালত বসার ঘটনা এই প্রথম। আর দেশের এমন ঐতিহসাহিসক মুহূর্তের আয়োজনের উপলক্ষটিও বেগম জিয়া।
আগামীকাল কেন্দ্রীয় কারাগারের আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে বেগম জিয়াকে উপস্থিত রাখার জন্যই কারাগারে এই আয়োজন। আর প্রথমবারের মতো দেশের কারাগারে স্থাপিত আদালতের শুনানিতে হাজির থাকবেন বেগম জিয়া।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের জন্য দণ্ডিত হয়ে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগারে আছেন বেগম জিয়া। আদালত সূত্র বলছে, বেগম জিয়ার কারাগারে থাকা এবং অসুস্থতার কারণে তাঁকে আদালতে হাজির করা যাচ্ছে না। এ কারণে বিলম্বিত হচ্ছে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতে ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে আবেদন করেন। কারাগারে স্থাপিত ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে আদালতে হাজিরা দেবেন অভিযুক্ত। এ বিষয়ে চিন্তাভাবনার পর আদালত আজ মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভিডিও কনফারেন্স নয়, অদালতই চলে যাবে কারাগারে। কারাগারেই বসবে আদালত এবং সেখানেই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি হবে।
কারাগারে আদালত স্থাপন করে মামলার কার্যক্রমের বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন হলেও বর্হিবিশ্বে বেশ পুরোনো। রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কিন্তু কারাগারে আছেন এমন ক্ষেত্রে আদালত সেখানে চলে যাওয়ার অনেক নজিরই আছে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী ও দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারির জন্যও কারাগারে আদালত বসেছিল। যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তার খাতিরেই অনেক অপরাধের বিচারের জন্য কারগারে আদালত বসে। আবার অনেকক্ষেত্রে কারাগার থেকে ভিডিও কনফারেন্সেও অনেক বিচারের কার্যক্রম চলে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপির অর্থায়নে একটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন চলছে, যার অধীনে কারাগার থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে বক্তব্য দিতে পারবেন কোনো আসামি। স্পর্শকাতর যেসব আসামিকে আদালতে আনা ঝুঁকিপূর্ণ মূলত তাঁদের জন্যই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে ইউএনডিপি।
বাংলা ইনসাইডার