Youtube এ ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করুন, খেলা দেখুন সরাসরি LIVE ↓
Click Youtube button & Subscribe then watch LIVE ↓
Youtube এ ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করুন, খেলা দেখুন সরাসরি LIVE ↓
সাকিবের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশ দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে। সাকিবের ৪ উইকেটের বিনিময়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৭৪ রান। দলের উইকেট পড়েছে ৫টি। সাকিব ছাড়াও একটি উইকেট নেন তাইজুল।
এদিকে গতকাল বোলারদের দারুণ বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশের সকালটা সুন্দর ছিল। ৪ উইকেটে ২৯৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ৩৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিয়ারে চতুর্বার পাঁচ উইকেট নেন মিরাজ। আর সুইং বোলিংয়ের দারুণ প্রদর্শনীর পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন আবু জায়েদ চৌধুরী। আর তাই লাঞ্চের আগেই টাইগারদের মুখে হাসি।
কিন্তু কে জানত টাইগার ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং দৈন্যতার আরেকটি প্রামাণ্য চিত্র দেখাবে তার পড়েই। একই সঙ্গে মিরা-রাহীরাও কি আঁচ করতে পেরেছিলেন এদিনই আবার বল হাতে নিতে হবে তাঁদের। এই কথা বলার কারণ- ক্যারিবীয়দের ৩৫৪ রানের জবাবে মাত্র ১৪৯ রানেই যে গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়- বাংলাদেশ উইকেট হারিয়েছে জোড়ায় জোড়ায়। ২০ রানে প্রথমটি দুইটি। ৭৯ রানে তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট। ১১৭ রানে পঞ্চম উইকেট, পরের বলেই আরও একটি। সপ্তম আর অষ্টম উইকেটও পর পর দুই বলেই পড়েছিল।
তবে জেসন হোল্ডার নো বল করায় বেঁচে যায় ব্যাটসম্যান। অবশ্য জোড়া ধাক্কা ঠিকই লেগেছে। পরের ওভারেই হারাতে হয়েছে উইকেট। চক্র পূরণ হয়েছে শেষে। ১৪৯ রানেই পড়েছে শেষ দুই উইকেট!
বাংলাদেশের সামনে আরো একটি লজ্জার শঙ্কা
গর্বের ক্রিকেট বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে এখন হাসির পাত্র। আর এই পাত্রটা তৈরী করেছেন সয়ং বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাই। টানা একের পর এক লজ্জা উপহার দিয়ে যাচ্ছেন দর্শকদের। অথচ একটু দায়িত্বশীল হলেই ভালোবাসায় সিক্ত হতেন তামিম-সাকিবরা। এবার ক্যারিবীয় উপকূলে যে সময়টায় বাংলাদেশের খেলা হচ্ছে, তা দর্শকদের জন্য তৃপ্তি নিয়ে দেখার একটা সুযোগ ছিল। কারণ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় এই খেলা শুরু হয়। অথচ এই খেলা দেখার জন্য দর্শক থাকেন টিভির সামনে।
শুক্রবার কিংস্টনের দ্বিতীয় দিনটা একটু অন্য রকম ছিল। ক্যারিবীয় উপকূল থেকে বাংলাদেশকে ‘শুভ সকাল’ জানিয়েছিলেন আবু জায়েদ-মিরাজরা। সকালের সেশনেই পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে বাকি ৬ উইকেট। কিন্তু সাফল্যস্নাত সকাল যে সব সময় গোটা দিনের পূর্বাভাস দেয় না, সেটি আবার বোঝা গেছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট-ভক্তদের মনে একটা শঙ্কা ছিলই। ‘শঙ্কা’ বলতে অ্যান্টিগা টেস্টের বিভীষিকা। ব্যাটসম্যানরা দুই ইনিংসেই আসা-যাওয়ার কী খেলটাই না দেখিয়েছেন! এই ভয়টুকু উগরে বের না হওয়ার কারণ কিংস্টনের দ্বিতীয় দিনে বোলারদের ফিরে আসা।
প্রথম সেশনেই ৫৯ রানের মধ্যে বাকি ৬ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বোলাররা। ভক্তদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তাহলে এবার বোধ হয় ব্যাটসম্যানদের ফেরার পালা। হ্যাঁ, তারা ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু সেটা ড্রেসিং রুমে। জোড়ায় জোড়ায় কে কার আগে ফিরতে পারে!
বোলাররা আশা জাগিয়েছিলেন বলেই হয়তো রাত জেগে দ্বিতীয় দিনের খেলা দেখতে বসেছিলেন এ দেশের ক্রিকেটভক্তরা। ২০ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারানোর পর সাকিব-তামিমের ৫৯ রানের জুটি ভক্তদের রাত জাগার ধকলকে পুষিয়ে দেওয়ার পথেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ দলে যে একটা ‘গোপন রোগ’ বাসা বেঁধেছে, তা কি দলের চিকিৎসকেরা জানেন? বোধ হয় খেলোয়াড়দেরও অজানা। আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত থাকলে কি আর স্কোরবোর্ডে তাকানোর সময় থাকে!
রোগের সংক্রমণটা হয়েছে দেশের মাটি থেকে। শ্রীলঙ্কা এসেছিল সফরে। ফেব্রুয়ারিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নিজেদের দুই ইনিংসে ১১০ ও ১২৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর তো অ্যান্টিগা ‘হরর শো’। প্রথম ইনিংসে ৪৩, দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৪। আর কাল কিংস্টনে ১৪৯। কিছু বুঝলেন? টেস্টে এ নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে ১৫০ রানের নিচে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। বুঝলেন তো ফেরার তাড়নাটা কত বেশি!
সাকিব-মুমিনুলরা সামর্থ্যের এই তাড়নাটুকু বারবার নিংড়ে দেওয়ায় পরিসংখ্যানবিদদের কিন্তু ঘাম ছুটে গেছে। টানা ৫ ইনিংসে দেড় শ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার নজির যে সাম্প্রতিক কালে নেই। সাম্প্রতিক কেন, গত দুই-তিন যুগেও টেস্ট ক্রিকেট এমন নজরানা দেখেছে কি না সন্দেহ! তো, পরিসংখ্যানবিদেরা এই সন্দেহটুকুই দূর করেছেন। কীভাবে? তারা ক্রিকেটের নথিপত্র ঘেঁটে দেখেছেন, টেস্ট ক্রিকেটে গত অর্ধ শতাব্দীতে বাংলাদেশের মতো এমন নজির গড়তে পারেনি আর কোনো দলই। একদম সঠিক হিসেব অনুযায়ী সময়টা ৬০ বছর—এই সময়ের মধ্যে প্রথম দল হিসেবে টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে ১৫০ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার কীর্তি (!) গড়েছে বাংলাদেশ।
এই ধরনের কীর্তি গড়ার প্রতি আরেকটু নিবেদন থাকলেই কিন্তু একটি রেকর্ড ছোঁয়া যেত। সেই রেকর্ডে জড়িয়ে আছে একসাথে চারটি দেশ—দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। টেস্টে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি (৬) ‘ডাক’ মারার রেকর্ড এই চার দেশের। কাল সেই রেকর্ড ছুঁতে ছুঁতে ছোঁয়া হয়নি। ‘ডাক’ যে মাত্র পাঁচটি! অবশ্য হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দ্বিতীয় ইনিংস এখনো বাকি। আর সেখানেও কিছু না হলে পথ তো পড়েই আছে…।