সিরিজ নির্ধারণী শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের অভিষেক ও দু’ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। সিরিজের শেষ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এর আগে সিরিজের দু’দলের মধ্যকার প্রথম ম্যাচে মিরপুরে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস (১৯৩/৫) করার পরও বোলারদের ব্যর্থতায় ২০ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে লঙ্কানদের কাছে ম্যাচটি হারতে হয় স্বাগতিকদের।
ঐ পরাজয়ের ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে অবস্থান বাংলাদেশের। যার ফলে সিরিজ বাঁচাতে আজকের ম্যাচে জয় অত্যাবশ্যকীয় টাইগারদের জন্য। অন্যদিকে আজকের ম্যাচে জয় পেলে ত্রিদেশীয় ও টেস্ট সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিয়ে দেশে ফিরবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
সিলেটে বাংলাদেশ দলে চার পরিবর্তন!
বাহুর পেশির সমস্যা মুক্ত হয়ে তামিম ইকবাল ফিরছেন শেষ টি-টোয়েন্টিতে। সিনিয়র পার্টনার ও এক ওপেনার সুস্থ হয়ে দলে ফেরত আসা মানেই তার বিকল্প হিসেবে আগের ম্যাচ খেলা জাকির হাসানের আবার বাইরে চলে যাওয়া।
এ তরুণ ঢাকায় প্রথম ম্যাচে রান পেলে হয়ত একাদশে থাকতে পারতেন; কিন্তু তা যেহেতু পাননি। তাই তার জায়গা ছেড়ে দেয়া ছাড়া আসলে পথ নেই। তরুণ হার্ডহিটার কাম উইকেটরক্ষক জাকিরকে তাই রোববার ড্রেসিং রুমে বসেই কাটাতে হবে।
শুধু কি ওই একটিই রদবদল হলে কথাই ছিল। জয়ের পথ খুঁজে পেতে মরিয়া টাইগারদের আগামীকালের টিম কম্বিনেশন কি হবে? সাত ব্যাটসম্যান, তিন পেসার আর দুই স্পিনার ফর্মুলাই কি বহাল থাকবে? নাকি পরিবর্তনের ছোয়া লাগবে?
ভক্ত-সমর্থকরা তা জানতেই উন্মুখ। আজ সিরেঠে প্র্যাকটিসের পর রাতেও একাদশ চূড়ান্ত করা হয়নি। কাল মাঠে গিয়ে উইকেট দেখেই ১১জন ঠিক করা হবে। এমন খবরই মিলেছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সংবাদ সম্মেলনেও এমন কথা বলে গেছেন।
তবে এটা নিশ্চিত যে ১১ জনই খেলুন না কেন, দলের গঠনশৈলি প্রথম ম্যাচের মতই থাকবে। অর্থাৎ কাল সিলেটে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টাইগারদের একাদশে তিন পেস বোলারের দেখাই মিলবে। সাথে দুই জেনুইন স্পিনার খেলানো হবে। যেহেতু একাদশ ঠিক হয়নি, কাল হবে। তাই দল নিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন আগাম কোন মন্তব্য করেননি।
তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম ম্যাচে অভিষেক হওয়া চার তরুণের দুজন হয়ত বাদ যাচ্ছেন কাল। আগেই জানা তামিম ফিরছেন। তাই জাকির এমনিতেই বাদ যাচ্ছেন। এর বাইরে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কাম অফস্পিনার আফিফ হোসেন ধ্রুবকেও সম্ভবত ড্রপ করা হবে। তার বদলে অফ স্পিনার মেহেদিকে খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, যেহেতু আফিফ প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও চরম ব্যর্থ হয়েছেন, তাই তাকে পরপর দুই ম্যাচ খেলানোর বিপক্ষে টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ অফ স্পিনার আফিফ জায়গামত বল ফেলতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রচুর শর্ট বলও করেছেন। তাই তার জায়গায় আরেক অফব্রেক বোলার মেহেদির খেলা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে আগের ম্যাচে জতীয় দলের হয়ে প্রথম খেলতে নামা চার তরুণের বাকি দু’জন নাজমুল অপু আর আরিফুল কালও একাদশে আছেন।
বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল অপু (প্রথম ম্যাচে চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট) স্পিনার কোটায় প্রথম সুযোগেই নিজেকে মেলে ধরেছেন। শতভাগ ব্যাটিং উইকেটে অন্য বোলাররা যেখানে বেদম মার খেয়েছেন, সেখানে বাঁ-হাতি নাজমুল অপু বুদ্ধি খাটিয়ে ভাল জায়গায় বল ফেলে রানের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি দুটি উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। তাই কালকের ম্যাচে বোলার ও স্পিনার কোটায় নাজমুল অপু ফার্স্ট চয়েজ। স্পিনার কোটায় তার সাথে সংযুক্ত হতে যাচ্ছেন বিপিএলে নজর কাড়া অফস্পিনার মেহেদি।
এ ছাড়া কাল আরও একজনের অভিষেকের সম্ভাবনা প্রচুর। তিনি পেস বোলার আবু জায়েদ রাহি। রুবেল হোসেনের জায়গায় রাহিকে খেলানোর চিন্তা চলছে। ভিতরের খবর, কাল লাল সবুজ জার্সি গায়ে হয়ত প্রথম নামতে যাচ্ছেন এ পেস বোলার। বলার অপেক্ষা রাখে না, রাহিও এবারের বিপিএলে দারুণ বোলিং করেছেন। এর বাইরে আরও একজনের দলে আসা এক রকম নিশ্চিত; তিনি মোহাম্মদ মিঠুন। বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে দায়িত্বপূর্ণ ও বুদ্বিদীপ্ত ব্যাটিং করা মিঠুন সম্ভবত অফফর্ম সাব্বির রহমান রুম্মনের জায়গা নেবেন।
আগের ম্যাচে চরম ব্যর্থ সাব্বিরের একাদশে জায়গা পাবার সম্ভাবনা প্রায় শুন্যের কোঠায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও কারো কারো ধারনা, সাব্বিরের ওপর নাকি আরও আস্থা রাখতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট; কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অন্য কথা। সাব্বিরের ফর্ম ও মাঠে পদচারনায় যারপরনাই হতাশ টিম ম্যানেজমেন্ট। কাজেই তার কালকের ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আরিফুল আগের ম্যাচে মাত্র দুটি বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তাই তাকে বাদ দেয়ার কথা ভাবতে নারাজ টিম ম্যানেজমেন্ট।
এর বাইরে আর শুধু মাত্র সাইফউদ্দীনকে খেলানো নিয়েই খানিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে; কিন্তু ভেতরের খবর, এ পেস বোলিং অলরাউন্ডারকে আরও একটি সুযোগ দেয়া হচ্ছে। যেহেতু তার ব্যাটিং আছে। তাই তাকে বাদ দিলে একটি অলরাউন্ডার অপশন কমে যায়। সে কারণেই প্রথম ম্যাচে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের হাতে নাকাল সাইফউদ্দীন কালও দলে থাকছেন।
তাহলে আসুন সম্ভাব্য একাদশ মিলিয়ে নিই…
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু জায়েদ রাহি, নাজমুল অপু ও মেহেদি হাসান।
মাহমুদউল্লাহর জন্য জিততে চাইবে বাংলাদেশ
একে তো ঠেকার নেতৃত্ব এসে ভর করেছে কাঁধে। তার ওপর মাঠও ছাড়তে পারছেন না হাসিমুখে। চট্টগ্রামের ‘মরা’ পিচের টেস্ট থেকে তবু ড্র নিয়ে ফেরা গেছে। এর পর থেকেই ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ পরাজিত দলের অধিনায়ক। তাঁর ক্লান্ত-বিধ্বস্ত চেহারাই দেখছে সবাই।
সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অভিষেকটা অন্তত জয়ের রঙে রঙিন হয়ে উঠুক-অধিনায়কের কথায় কাল বারবার ফুটে উঠেছে এই আকুতি। সিরিজের সব ম্যাচই জেতার জন্য খেলেছেন, খেলবেন আজও। সেই জয় বাংলাদেশ দলের জন্য তো বটেই, ক্লান্ত মাহমুদউল্লাহর জন্যও হবে বড় প্রাপ্তি। অধিনায়ক হিসেবে নয়তো যে তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হবে!
কাল সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটা উঠলেও এ নিয়ে মাহমুদউল্লাহর ভাবনা একটু ভিন্ন বলেই মনে হলো। যেটা পাননি সেটা নিয়ে না ভেবে যেটা পেয়েছেন সেটা নিয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ অধিনায়কের, ‘যখন আমার জন্য কোনো সুযোগ আসে, আমি সেটা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকি। আমি মনে করি, এটাও দারুণ একটা সুযোগ, দারুণ গর্বের বিষয়। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জীবনেই এটা দারুণ সুযোগ। আমি সুযোগটা পেয়েছি এবং আশা করি, আমার সেরাটা পরের ম্যাচে আরেকবার দিতে পারব।’
সব ঠিক থাকলে সাকিব আল হাসান ফিরছেন শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফিতে। সে বিচারে ‘অধিনায়ক’ মাহমুদউল্লাহর অধ্যায় এ দফা এখানেই শেষ। তাঁর শেষটাকে স্মরণীয় করে রাখার উপলক্ষ হতে পারে আজকের ম্যাচ। বিপিএলের অভিজ্ঞতা বলছে, সিলেটের উইকেটে রান তাড়া করাটাই সহজ।
তবে মাহমুদউল্লাহ উইকেটের ব্যাপারে কালই কোনো উপসংহারে যেতে চাননি, ‘সব নির্ভর করছে উইকেট আমরা কেমন পাচ্ছি তার ওপর। উইকেটের অবস্থাটা বিবেচনা করব। টসটাও গুরুত্বপূর্ণ। টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যেকটি বিভাগেই আপনাকে ভালো করতে হবে। ব্যাটিং করেন আগে বা বোলিং করেন। কন্ডিশন যদি একটু ভিন্ন থাকে তাহলে টসের ইস্যুতে বিবেচনার বিষয় থাকে।’
মিরপুরে যেদিন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদউল্লাহর অভিষেক হলো, সেদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই অভিষেক হয়েছে চারজনের। কিন্তু এক নাজমুল ইসলাম অপু ছাড়া অধিনায়ককে ভালো কিছু উপহার দিতে পারেননি কেউই। অমিত সম্ভাবনার ফানুস উড়িয়ে ‘বড়দের ক্রিকেট’-এ এসে প্রথম সুযোগে দাগ কাটতে পারেননি আফিফ হোসেন-জাকির হাসানরা। আরিফুল তো বলতে গেলে ব্যাটিংয়েরই সুযোগ পাননি।
তবু প্রকৃত নেতার মতো মাহমুদউল্লাহ ছাতা মেলে ধরলেন নতুনদের ওপর, ‘আন্তর্জাতিক মঞ্চে এসে পারফরম করা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। তবে তাদের সামর্থ্য আছে। আমি যদি এখন ওই বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করি, মনে হয় না এটা তাদের জন্য ঠিক হবে। ইনশা আল্লাহ, ওরা আরও অনেক বছর ক্রিকেট খেলবে, বাংলাদেশকে দেওয়ারও অনেক সময় আছে। এ জন্যই ওরা দলে জায়গা করে নিয়েছে।’
শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি এখন সান্ত্বনার উপলক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের সামনে। টেস্ট এবং ত্রিদেশীয় সিরিজের জ্বালা জুড়ানোর জন্যই একটা জয় আজ বড় বেশি প্রয়োজন বাংলাদেশের। নতুনদের জন্য সে উপলক্ষটা তো আরও বড়। অধিনায়কের কথাগুলো প্রমাণ করে দেখানোর আরেকটা সুযোগ যে করে দিচ্ছে এই ম্যাচ! ম্যাচটা বিশেষ উপলক্ষ হতে পারে মাহমুদউল্লাহর জন্যও। অধিনায়কত্বের শেষ ম্যাচে একটা জয় তো পেতেই পারেন তিনি!
শেষ ম্যাচে মান রক্ষা হবে তো!
সিলেট লাক্কাতুরা চা-বাগানের পূর্ব কোণে যে টিলাটি ঠায় দাঁড়িয়ে, তার ওপর থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটাকে অপূর্ব দেখায়। বসন্তের শুরুর শান্ত-স্নিগ্ধ সকালে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের খাঁজকাটা ছাদে কিংবা সবুজ ঘাসের বুকে আলোর নাচন নিসর্গের নতুন উপমার জন্ম দিয়ে যায়। কাল সকালে সেই সবুজ যেন আরও ঘন হয়ে অপেক্ষায়। লাল-সবুজ বাংলাদেশ দলকে প্রথমবারের মতো স্বাগত জানাতে হবে যে!
পরশু পড়তি বেলায় বাংলাদেশ দল যখন সিলেটে পা রাখে, তাঁদের বুকে ব্যর্থতার জমাট হতাশা। সিরিজের শেষ দৃশ্যে এসে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশাও কি ছিল না! ত্রিদেশীয় সিরিজ গেল, টেস্ট সিরিজ গেল; টি-টোয়েন্টি ড্র করে যদি মান বাঁচানো যায়। প্রকৃতির সযত্নে জমানো রূপ দেখে ‘আহা-উঁহু’ করার অবসর কোথায় তাঁদের? তা ছাড়া বিপিএলের সৌজন্যে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য তো দেখা হয়ে গেছে আগেই।
শ্রীলঙ্কার সে সুযোগটা আছে। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে এই বাংলাদেশ সফর তো এক অর্থে দুহাত ভরেই দিয়েছে। তাই ‘এখানে আগে কেন আসিনি’ স্বগতোক্তি হাথুরুকে মানায়। কাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সাবেক কোচের কণ্ঠ থেকে মুগ্ধতা ঝরে পড়ে, ‘এটা খুব সুন্দর একটা মাঠ। অবাক হচ্ছি, সাড়ে তিন বছরে (বাংলাদেশের কোচ থাকাকালে) আমি কেন এখানে আসিনি?’
বাংলাদেশের জন্য আজকের ম্যাচই শেষ সুযোগ। সিরিজে সবই হারানোর পর ‘শেষ ভালো যার সব ভালো’য় বিশ্বাসী হওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। সিলেটে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে আসা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ এখন সেই ভালোর খোঁজে, ‘টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজেও আমরা আশাবাদী ছিলাম, কিন্তু আশানুরূপ ফল পাইনি। প্রথম ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা ভালো পারফর্ম করেছে, কিন্তু বোলাররা হয়তো ঠিকমতো পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারেনি।
কিন্তু এখনো একটা ম্যাচ আছে। আমরা সেটার জন্য খেলব। অনুপ্রাণিত হওয়ার চেষ্টা করছি যেন আমরা সিরিজটা অন্তত ড্র করতে পারি। প্রত্যেকটা ম্যাচই আমরা খেলেছি জেতার জন্য। চেষ্টা থাকবে এটাই, যেন আমরা ভালো একটা ফলাফল করতে পারি।’
মাহমুদউল্লাহর জন্য সাহস হতে পারেন তামিম ইকবাল। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের কথায় নিশ্চিত, দলে ফিরছেন সবচেয়ে ভরসার ব্যাটসম্যান, যিনি জিতলে জিতে যায় বাংলাদেশ, ‘তামিমের অবস্থা এখন অনেক ভালো। আশা করি, ফিট হয়ে যাবে। সে আগামীকাল (আজ) খেলবে ইনশা আল্লাহ।’
কিন্তু বাংলাদেশকে যে সবই নিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে আছে শ্রীলঙ্কা! শেষ ম্যাচেও জয়টা তাঁদের খুবই দরকার বলে জানালেন কোচ হাথুরুসিংহে, ‘আমরা এখানে ম্যাচ হারতে আসিনি। আমরা এসেছি জিততে। জয় দিয়ে শেষ করাটা আমাদের মনোবলকে আরও বাড়িয়ে দেবে। সিরিজটা জেতা আমাদের জন্য খুবই দরকারি এবং তারপর অন্য চিন্তা। আমাদের কাজটা আমরা ঠিকঠাক করতে পারলে র্যাঙ্কিং আপনাআপনি ওপরে যাবে।’
এক মাস আগে শ্রীলঙ্কা দল ঢাকায় পা রাখার বহু আগে থেকেই একটা দ্বৈরথ নিয়ে কথা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুয়ে থাকলেও যেন তৃতীয় দলের নিয়ম রক্ষার জন্যই ছিল। হয়ে পড়েছিল শুধুই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার এবং সেটির সবচেয়ে বড় যোগসূত্র হয়ে ছিলেন হাথুরু। এ নিয়ে সেই শুরু থেকে নানা কথা-নানা তর্কের ঝড়। আর বিতর্ক ছিল যাকে ঘিরে, তার নাম ‘পিচ’।
শেষবেলায়ও সেটা পিছু ছাড়ে কী করে? সিলেটেও তাই আলোচনায় আছে উইকেট, আছে দুই দলের দুশ্চিন্তাতেই। যদিও দুই দলেরই দাবি, উইকেট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে তাঁরা অপেক্ষা করবেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, তারপর নিশ্চিত হবে একাদশ।
তা ছাড়া উপায়ই বা কী? শেষ টি-টোয়েন্টির জন্য সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে দুটি ভিন্ন চরিত্রের উইকেটই যে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এটা না বললেও চলে যে, স্বাগতিক টিম ম্যানেজমেন্টের ইশারায়ই চূড়ান্ত হবে উইকেটের চরিত্র। অবশ্য সেটিতেও যে জয়ের নিশ্চয়তা নেই, তাই এই সিরিজেই দেখা গেছে কয়েকবার।
শঙ্কাটা তাই থাকেই-মিরপুর টেস্টের মতো যদি নিজেদের পাতা ফাঁদেই আটকে যায় বাংলাদেশ!