AL_BNP_IMAGE

নির্বাচন ঘিরে জোট-মহাজোটে ভিন্ন প্রস্তুতি, অস্তিত্বের লড়াইয়ে হুঙ্কার বিএনপির

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র চার মাস বাকি। ফলে ভেতরে ভেতরে দুই শিবিরেই চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দিক থেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও দুশ্চিন্তামুক্ত নয়। একদিকে বিরোধী জোটের আন্দোলনের হুমকি অন্যদিকে জোটের ভেতর প্রার্থী বাছাইয়েও রয়েছে নানা জটিলতা। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে মনোনয়ন নিয়ে দল ও জোটে কোন্দল ততই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।

এদিকে রাজনৈতিকভাবে বেশ অসুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশাপাশি নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। একদিকে নির্বাচনি নিরপেক্ষ সরকার গঠনে আন্দোলনের প্রস্তুতি অন্যদিকে জোটের মধ্যে মনোনয়নে প্রার্থী বাছাই।

রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, একাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দুই ধরনের প্রস্তুতি চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে মহাজোট আর না নিলে ১৪-দলীয় জোটগতভাবেই অংশ নেবে ক্ষমতাসীন দলটি। এজন্য এখন থেকে চলছে জোট-মহাজোটের প্রার্থীর সম্ভাব্যতা যাচাই। জাতীয় পার্টিসহ ১৪-দলীয় শরিক দলের নেতারা তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি খসড়া তালিকা জোটের প্রধান দলের কাছে জমা দিয়েছেন। জোটের প্রধান দলের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষ নাগাদ এ বিষয়ে দফারফা করা হবে। এদিকে ইসলামী দলগুলোও এখন আওয়ামী লীগের জোটে ভিড়ে ক্ষমতার ভাগীদার হতে তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা সরাসরি আওয়ামী লীগে যোগ না দিলেও প্রধান মিত্র জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে এরশাদকে ‘ইমামতির’ দায়িত্ব দিয়েছেন। ২০০৮ সালের মতো এবারও মহাজোটেই ভোটযুদ্ধে নামবে আওয়ামী লীগ।

সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এজন্য দলের পক্ষ থেকে তৎপরতাও চালানো হচ্ছে। দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যে জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল সিপিবি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, এলডিপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাসদসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে এক বা একাধিকবার বৈঠক ও ফোনে কথা বলেছেন। তাদের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। তবে জোট গঠনের ব্যাপারে সিপিবি আওয়ামী লীগকে জানিয়েছে, তারা আলাদাভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো জোটে না এলেও এবার নির্বাচনে অংশ নেবেÍ এমনটাই জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা মনে করেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে যে ভুল করেছিল এবার তা করবে না। যে কোনো ফরমেটে এবার তারা অংশ নেবে। সে কারণে এবারের নির্বাচন হবে আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জিং। সে কারণে ২০০৮ সালের মতো এবারও মহাজোটগতভাবেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে দলটির। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহাজোটে থেকেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ১৪-দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ (আম্বিয়া), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, জাতীয় পার্টি-জেপিসহ জোটের অধিকাংশ দলই তালিকা তৈরি করে আওয়ামী লীগের কাছে জমা দিয়েছে। আবার কিছু দল সেপ্টেম্বর মাসে জমা দেবে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ শরিকদের প্রস্তাব সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গেই বিবেচনায় রাখছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা মহাজোটগতভাবেই অংশ নেব। ইতিমধ্যে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ঘোষণা দিয়েছেন তারা আমাদের সঙ্গে থেকেই নির্বাচনে যাবেন।’ তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এক থেকে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে দেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব। এজন্য আমাদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।’

আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আসন ভাগাভাগি নিয়ে আমরা এখনো ফাইনাল কোনো ডিসিশন নেইনি। তবে আমাদের দলের ও জোটের প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। যেখানে যাকে দিয়ে জয়লাভ সম্ভব সেখানে তাকেই প্রার্থী করা হবে। অর্থাৎ আমরা উইনএবল প্রার্থী দেব।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে এক রকম আর না করলে আরেক রকম নির্বাচনী কৌশল অবলম্বন করবে জাতীয় পার্টি। আমাদের দল বিগত সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী ও জনপ্রিয়। আগামী নির্বাচনের জন্য ক্লিন ইমেজের একটি সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ইতিমধ্যে পার্টি চেয়ারম্যান তৈরি করেছেন। মহাজোট নির্বাচন করলে আমরা অনেক আসনেই ছাড় পাব বলে আশাবাদীÍ বললেন বাবলু।

এ ব্যাপারে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘আমাদের মনোনয়ন বোর্ড একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পলিটব্যুরোর বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জোটগত ও এককভাবে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের সম্ভাব্যতা খুঁজে দেখছি।’ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (আম্বিয়া) সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘আমাদের দলের যেসব এলাকায় শক্তিশালী সাংগঠনিক শক্তি আছে, সেসব এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা জোট প্রধান আওয়ামী লীগের কাছে জমা দিয়েছি। আওয়ামী লীগ থেকে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি। আশা করি আগামী সেপ্টেম্বরে ফয়সালা হবে।’

তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউর হক চাঁদপুরী বলেন, আমাদের ৩০ জন প্রার্থী এবার জোটগতভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। এ তালিকা আমরা জমা দিয়েছি। আমরা জোটে আছি, জোটেই নির্বাচনে অংশ নেব।’

গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ডা. সহিদুল্লাহ শিকদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে অটুট রাখতে হলে ১৪-দলীয় জোটের ঐক্যের বিকল্প নেই। আমরা ঐক্য ছিলাম, আছি-আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থেকে জোটগতভাবে নির্বাচন করে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে নির্বাচনে পরাজিত করে মুুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশকে এগিয়ে নেব। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৫ জন প্রার্থীর তালিকা তৈরি করেছি। জোটের কাছে কমপক্ষে ১০টি আসন চাই।’

কঠিন চ্যালেঞ্জে বিএনপি
একাদশ জাতীয় নির্বাচন দোরগোড়ায়। প্রতিকূল পরিবেশেও ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জন করা দল বিএনপি। দলপ্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী আবহ সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। এজন্য ভিতরে ভিতরে প্রার্থী বাছাই ও নির্বাচনী ইশতেহারও তৈরি করছে দলটি। জোটের শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের জন্যও বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বেশ কয়েকটি আসন। এ ব্যাপারে তাদের অনেককে সবুজ সংকেতও দেওয়া হয়েছে। তবে শরিক দলগুলোর চাওয়া-পাওয়াও সব পূরণ করতে পারবে না বিএনপি। তারা বিএনপির কাছে চায় অন্তত দেড় শ আসন।

এ ছাড়া যুক্তফ্রন্টসহ ড. কামাল, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীদের সঙ্গে নির্বাচনী জোট তৈরি হলে তাদেরও সর্বোচ্চ ছাড় দেবে বিএনপি। এ নিয়ে হাইকমান্ড কাজ করলেও দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নাখোশ। সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে এলেও বিএনপিকে আসন বণ্টন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বিএনপি নির্বাচনে গেলে তারা সর্বোচ্চ ছাড় দেবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য সব ধরনের চেষ্টাই চালিয়ে যাবে দলটি। আসন্ন ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি চলছে।

এ নিয়ে শুক্রবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা করবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমেই দলটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের আন্দোলন রাজপথে নিয়ে যেতে চায়। কোনো কারণে জনসভা করতে না দিলে বিএনপি দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা সব সময় নির্বাচনের পক্ষে। কিন্তু নির্বাচনের আগে গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিয়ে অনুকূল পরিবেশও তৈরি করতে হবে। সব রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে হবে। বিরোধী দলের মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। তবে সরকার জিয়া পরিবারকে ছাড়া নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাব না। তাকে কারামুক্ত করার পর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হলেই নির্বাচনের কথা ভাবব।’

জানা যায়, ভিতরে ভিতরে পুরোদমেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ঈদুল আজহায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ সংসদীয় আসনে গণসংযোগ চালিয়েছেন। জনগণকে জানান দিয়েছেন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তারা লড়তে প্রস্তুত। গত ছয় মাসে দলের অন্তত অর্ধশত সম্ভাব্য প্রার্থী পৃথকভাবে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাদের অনেককে ভোটের পক্ষে মাঠে থাকতে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন তিনি। কারান্তরিন বিএনপি চেয়ারপারসনও ভোটের পক্ষে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের নির্ভরশীল নেতারা।

সূত্রে জানা যায়, ৩০০ আসনে বিএনপিরই সহস্রাধিক প্রার্থী প্রস্তুত রয়েছেন। এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী-এমপি যেমন রয়েছেন তেমনই একঝাঁক তরুণ নেতা-নেত্রীও ভোটযুদ্ধে লড়তে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। দলের হাইকমান্ডের সংকেত পাওয়া মাত্রই তারা ভোটের মাঠ গরম করবেন। বিএনপিতে অন্তত ১০০ আসনে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এসব আসন তরুণ নেতারা ছাড়াও জোটের শরিক ও অন্যদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। ২০-দলীয় জোট সূত্র জানায়, শরিকরা বিএনপির কাছে অন্তত দেড় শ আসন চান। এতেও খুশি নন তারা। তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে বিএনপির কাছ থেকে কোনো আশ্বাসই মিলছে না। শরিক দলের একাধিক নেতা এখন প্রকাশ্যেই বলাবলি করছেন, সরকারি দলের পক্ষ থেকে নানা ‘প্রলোভন’ এমনকি ‘ভয়ভীতি’ও তাদের টলাতে পারেনি। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেই তারা বিএনপি জোট আঁকড়ে রয়েছেন। কিন্তু আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই বলছে না বিএনপি। তবু কারাবন্দী জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে তারা ২০ দল ছাড়ার কথাও ভাবছেন না।

সূত্রমতে, বিএনপির কাছে জোটের প্রধান শরিক দল জামায়াতে ইসলামী চায় অন্তত ৫০টি আসন। জোটের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও খেলাফত মজলিশ চায় অন্তত ৩০টি করে আসন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ১৬টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১০টি, বিজেপি ৩টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও লেবার পার্টি চায় ৬টি করে আসন। বাংলাদেশ ন্যাপ ৫টি, এনডিপি ২টি, জাগপা ও এনপিপি চায় ৪টি করে আসন। ডেমোক্রেটিক লীগ ও ন্যাপ চায় ২টি করে আসন এবং সাম্যবাদী দল চায় ১টি আসন। বিএনপি অবশ্য শরিকদের আশ্বস্ত করে বলছে, সময়মতো সবারই মূল্যায়ন হবে। এখন তারা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তিনি মুক্তি পেলে তার নেতৃত্বেই ২০ দল নির্বাচনে যাবে। তখনই জোটের মধ্যে আসন বণ্টন হবে। তা ছাড়া ভিন্ন প্লাটফরমে জোটের পরিধি আরও বাড়তে পারে। সেই প্রচেষ্টাও চলছে। জোট, যুক্তফ্রন্টসহ কয়েকটি দল নিয়ে ভিন্ন প্লাটফরমে নির্বাচনে গেলে বিএনপি অর্ধশতাধিক আসন ছেড়ে দেবে। তবে এ নিয়ে ক্ষুব্ধও বিএনপির একাংশ।

দলের স্থায়ী কমিটিরি এক সদস্য জানান, বিএনপিরই সহস্রাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তাদেরই প্রতীক দেওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া জোটের দু-চারটি ছাড়া অধিকাংশ দলই নামসর্বস্ব ও প্যাডসর্বস্ব। জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতের নিবন্ধনও স্থগিত। ধানের শীষ প্রতীকের বাইরে নির্বাচন করে কোনো দলের জিতে আসাও কঠিন। বিএনপি-প্রধান এখন জেলে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই আন্দোলনে জোটের শরিকদের তেমন কোনো গরজ নেই। তারা সবাই এখন চান নিজেদের আসনের নিশ্চয়তা। জোটের শরিক দল এলডিপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘বিগত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে নানা প্রতিকূল পরিবেশেও জোটের শরিক দলগুলো বিএনপি ছেড়ে যায়নি। এখনো আমাদের নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই শরিক দলগুলোকে অবমূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin