mossaraf_khon

‘বিরোধীদের দমনের সুদূর প্রসারি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘দেশের মানুষ নিরাপদে নেই। কথায় কথায় ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। গুম, খুন চলছে। হঠাৎ বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু হয়েছে মাদকের নামে। এর মাধ্যমে বিরোধীদের দমনের সুদূর প্রসারি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দিয়ে মাদক নির্মূল হবে না। এ দেশে আইন আছে। আইনের অধীনে বিচার করা য়ায়।’

মোশাররফের দাবি, মাদকের সম্রাটরা সবাই আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা। সরকারের এমপি, যাকে সারা দেশের মানুষ চেনে মাদকের সম্রাট হিসেবে। তাকে ধরার পরিবর্তে ফুলের মালা পরানো হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথ বলেন।

মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৩৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের আদর্শই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস’ শীর্ষক আলোচনা সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

মোশাররফ বলেন, চুনোপুঁটিদের না মেরে মাদকের মূল নায়কদের নাম প্রকাশ করে বিচারের মুখোমুখি করেন।

এসময় তিনি বলেন, ‘এদেশে কোনো ইয়াবা তৈরি হয় না। বাহির থেকে আসে। সরকার যদি আন্তরিক হতো তাহলে সীমান্ত দিয়ে দেশে মাদক প্রবেশ করতো না। এর সাথে মূলত সরকারে এমপিরা জড়িত। আগে তাদের ধরুন।’

সরকার তাদের ধরবে না দাবি করে মোশাররফ বলেন, ‘এটি আসলে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের মাঝে ভয় ভীতি সৃষ্টি করাই লক্ষ্য।’

খন্দকার মোশাররফ অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি, খালেদা জিয়া ও জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচন করাই সরকারের টার্গেট। কিন্ত, সরকারের এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যাবে না। জনগণ তা মানবে না।’

মোশাররফ বলেন, ‘এই স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। তা করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করে তবেই আমরা একটি নির্বাচন করবো এবং সে নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি বিজয়ী হয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো। সময় আসছে। যদি সরকার ২০১৪ এর মতো নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে জনগণ রাস্তায় নেমে তাদের সামনে দাঁড়াবে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

জানুয়ারি পর্যন্ত ক্ষমতায় শেখ হাসিনা: দুদু

‘আজকের এই স্মরণ সভায় উপস্থিত আপনারা (নেতাকর্মীরা) যদি দিন-তারিখ নিতে চান আমি বলে দিতে পারি খুব বেশি হলে ডিসেম্বর আর না হলে জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি (হাসিনা) ক্ষমতায় থাকবেন। এক আল্লাহ ছাড়া তার ক্ষমতা রক্ষা করার আর কেউ নাই, কোনো শক্তি নাই, তার পতন হবেই। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে কোনো কাজ হবে না’ বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক বিএনপি নেতা এম. শামসুল ইসলাম ও জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের স্মরণসভায় তিনি প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহিদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ

সরকার পতনের দুটি পথের কথা উল্লেখ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সরকার পতনের দুটি পথ আছে একটি হলো নির্বাচন, আরেকটি গণঅভ্যুত্থান। সরকার যদি মনে করেন নির্বাচন ভণ্ডুল করে আবারও ক্ষমতায় থাকবেন তা হবে অসম্ভব। কোনো ভাবেই এবার তারা (সরকার) ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আন্দোলন করতে হবে বেগম জিয়ার জন্য, বেগম জিয়া তিনি তাঁর কাজ করেছেন। তিনি দেশের জন্য ভাবেন, মানুষের জন্য ভাবেন, সংগ্রামের কথা ভাবেন। তিনি অপ্রতিরোধ্য মানুষ হিসেবে জেলে গেছেন।’

এসময় তিনি শেখ হাসিনার পতনের কারণ উল্লেখ করে বলেন, ‘তার (শেখ হাসিনার) পতন হবে এই কারণে যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার স্বার্থে। গণতন্ত্রের প্রশ্নে, স্বাধীনতার প্রশ্নে, ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছে, দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত হানি হয়েছে আমাদের দেশে। গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতার জন্য যে দেশ স্বাধীন হলো সেটা আপনি (শেখ হাসিনা) কেড়ে নেবেন আর বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে এটা হয় নাকি? এটা প্রত্যাশার কোনো বিষয়?’

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আজকে যে পুলিশ ভাইয়েরা উলঙ্গ ভাবে তাদেরকে (সরকার) সমর্থন করছে, এর সংখ্যা ১০ ভাগ, ৯০ ভাগই এর বিরুদ্ধে। এদেশে সৎ মানুষের সংখ্যা বেশি, দুর্নীতিযুক্ত মানুষের সংখ্যা খুব কম।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin