যে কারণে ফখরুলের পরিবর্তে নজরুল!

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী পরিবর্তন করায় জোট নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, এ সিদ্ধান্তে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন হয়েছে।

গত ২৪ মার্চ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো কিছু বলা না হলেও জানা যায়, এতদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জোটের সমন্বয়কারী হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করতেন বৈঠকে তা পরিবর্তন করা হয়। নতুন দায়িত্ব পান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি বিলম্ব হতে পারে, দলটির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও বিএনপির রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ কিছু চাপ মোকাবেলা করতে হচ্ছে মির্জা ফখরুলকে। ফলে তিনি জোটে নেতাদের সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় করতে পারছেন না।

এছাড়াও জোটের শরিক নেতাদেরও দীর্ঘ দিনের অভিযোগ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাদের কাঙ্ক্ষিত সময় দিতে পারেন না। সমন্বয়ের অভাবে জোটের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ তৈরি হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ২০ দলের এ ক্ষোভকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।

সার্বিক পরিস্থিতিতে জোটের সমন্বয়কের পরিবর্তন আনা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নজরুল ইসলাম খানকে যথার্থ মনে করছেন জোটের অন্য নেতারা। তাদের প্রত্যাশা, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে না পারলেও নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করা যায়। নজরুল ইসলাম খান তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে সব পরিস্থিতি সামাল দেবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জোটের একজন শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জোটের সমন্বয়কারী পরিবর্তনে আমাদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। বিষয়টা শুধু আমাদের অবহিত করা হয়েছে। জোট নেতারা সেটার বিরোধিতা করেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে লক্ষ্যে জোটের সমন্বয়কারী পরিবর্তন করা হয়েছে, সে লক্ষ্য পূরণে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদেকে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দিলে ভালো হত।’

জোটের সমন্বয়কারী পরিবর্তন সম্পর্কে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘মূলত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের ব্যস্ততার কারণে সমন্বয়কারী হিসেবে নজরুল ইসলাম খানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

জোটের সমন্বয়কারী পরিবর্তনের কারণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ থাকায়, ২০ দলের কর্মতৎপরতা বাড়াতে, কর্মপরিধি বাড়াতে বিএনপি মহাসচিবের অনেক কাজ করতে হয়, অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। সব কাজ যথাযথভাবে করা সম্ভব হয় না। কাজটাকে গতিশীল করার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এ পরিবর্তনের ফলে জোটের কার্যক্রম আরও বাড়বে। চলমান আন্দোলনে জোট আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এখানে অন্য কোনো কারণ আমরা দেখি না।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin