শাহ মোয়াজ্জেমের দরকার ‘ম্যাজিক’ টুথ পাউডার

ম্যাজিক টুথ পাউডারের বিজ্ঞাপনের কথা মনে আছে? শাশুড়ী পুত্র বধুকে নোংরা ভাষায় গালি দেয়। পুত্রবধু বলেন ‘আপনার মুখে এতো দুর্গন্ধ কেন? এই নেন ম্যাজিক টুথ পাউডার।’ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যদি কারো ‘দুর্গন্ধ’ মুক্তির জন্য ম্যাজিক টুথ পাউডার লাগে তাহলে সেই তালিকার শীর্ষে থাকবেন ‘পতিত’ রাজনীতিবীদ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। এক সময় স্বৈরাচারের এই পদলেহী নোংরা বক্তব্যের জন্য আলোচিত হয়েছিলেন।

সময়টা ১৯৯০ সাল। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন তীব্র। এসময় শাহ মোয়াজ্জেম এক বক্তৃতায় বললেন ‘ দুই মহিলা মিলিত হলে কিছুই উৎপাদন হয় না।’ সেসময় এরশাদের বিরুদ্ধে দুই নেত্রীর ঐতিহাসিক ঐক্যের প্রেক্ষাপটে শাহ মোয়াজ্জেম এই কদর্য মন্তব্য করেছিলেন।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে নোংরা উক্তি। এই উক্তির মতোই নোংরা, কদর্য এবং দুর্গন্ধময় শাহ মোয়াজ্জেমের রাজনৈতিক জীবন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন এই পতিত রাজনীতিবিদ।

৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর খুনী মোশতাকের ঘনিষ্ঠদের তালিকায় তার নাম ছিলো উপরের দিকে। খুনী মোশতাকের মন্ত্রী সভায় ঠাই পান এই বহুরূপী রাজনীতিবিদ। এরপর এরশাদের পদলেহীতে পরিণত হন। এরশাদকে খুশী করতে এমন কিছু নেই, যা শাহ মোয়াজ্জেম করেননি। তবে সবথেকে আলোচিত ছিলো একটি ঘটনা।

এরশাদের মা মারা গেছেন। পারিষদসহ এরশাদ গেলেন রংপুরে। মায়ের কবরে দোয়ার সময় কান্নার প্রতিযোগিতা হলো কাজী জাফর আর শাহ মোয়াজ্জেমের। কান্নার তীব্রতা দেখে এরশাদও অবাক হলেন। তারপর বললেন ‘এই মোয়াজ্জেম তোমার মা মারা যায় নি।’ এরশাদের পতনের পর আর বেশী দিন জাতীয় পার্টি করেননি।

ডিগবাজী দিয়ে যোগদেন বিএনপিতে। এখন তার মতো ডিগবাজী রাজনীতিবীদের কদর কমে গেছে। আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। খুনীর দোসরের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা তো চিরদিনের জন্য বন্ধ। জাতীয় পাট্টিও এই আপদকে আর নিতে চায় না। আর তাই বিএনপিতে উপেক্ষিত হয়ে, সেখানেই আছেন।

আদর্শহীন রাজনীতির এক বড় উদাহরণ হলেন এই ব্যক্তিটি। এক সময় খালেদা জিয়াকে নোংরা ভাষায় আক্রমন করা ব্যক্তিটিই এখন বিএনপির নেতা। বিএনপির রাজনীতিতে যেমন আদর্শের বালাই নেই তেমনি শাহ মোয়াজ্জেমেরও।

কিন্তু এখন আলোচনায় আসতেই আবার বিএনপির সমালোচনা করছেন। বিএনপি নেতারা বলেন, যে পাত্রে খায়, সেই পাত্রে মল ত্যাগই শাহ এর রাজনীতি। আওয়ামী লীগ করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেঈমানী করেছে। জাতীয় পার্টি করে এরশাদের সঙ্গে বেঈমানী করেছে, এখন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও গাদ্দারী করছে।’

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin