প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জিয়া পরিবার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন এসব অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারা মুখে নানা কথা বললেও অভিযোগ প্রমাণে কোনো তথ্য উপস্থাপন করতে পারেননি। তাই আমরা আমাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।
সুপ্রীম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন গতকাল (মঙ্গলবার) খালেদা জিয়ার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বলেও জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিশেষ আদালতে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ বিশেষ আদালতে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে। আদালতে উপস্থিত আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার সোয়া ১১ দ্বিতীয় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। পুরান ঢাকার বকশিবাজারস্থ কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামানের আদালতে মামলা দু‘টির বিচারকাজ চলছে।
এর আগে সকাল ১১ টায় খালেদা জিয়া বিশেষ আদালতে পৌঁছেছেন বলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে বকশী বাজার আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন খালেদা জিয়া।
মামলা দুইটির মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটিতে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য ও অপর আসামিদের সাফাই সাক্ষ্যের জন্য আর জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অসমাপ্ত রয়ে যায়। গত ৫ ডিসেম্বর অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে দেয়া বক্তব্য শেষ হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়।
কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
rtnn