পুরান ঢাকার বকশীবাজারের বিশেষ আদালত থেকে গুলশানের বাসভবনে ফেরার পথে হাইকোর্টের ভেতরে আটকে পড়া নেতাকর্মীদের মুক্ত করে বাসায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বুধবার দুপুর পৌনে ২টায় দিকে ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আদালত থেকে রওয়ানা করার সময় সকাল থেকে হাইকোর্টের ভেতরে অবস্থানরত দলটির হাজারও নেতাকর্মীকে পুলিশ আটকে দেয়। ভেতরে অবস্থানরত নেতাকর্মীরা যাতে রাস্তায় বের হয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে -এ জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হাইকোর্টের গেটে তালা মেরে দেয়।
তবে হাইকোর্টের ভেতরে দলের নেতাকর্মীরা আটকা পড়েছেন এ সংবাদ পেয়ে মাজার গেটের সামনে এসে অবস্থান নেন খালেদা জিয়া। এ সময় নেতাকর্মীদের জন্য প্রায় ১২ মিনিট গাড়িতে অবস্থান করেন তিনি। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখেই এক পর্যায়ে গেট দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা।
মাজার গেট থেকে হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপি নেতাকর্মীদের গতিরোধ করার চেষ্টা করে। তবে এ সময় কোনো হতাহত বা অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর সামনে অগ্রসর হতে সহযোগিতা করেন।
এর আগে বকশীবাজারের আদালত থেকে বেরিয়ে দলের নেতাকর্মীদেরকে সঙ্গে নিয়ে এক ঘণ্টায় কাকরাইল মোড়ে পৌঁছান বেগম জিয়া। দলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া গাড়ি বহরের সঙ্গে রুপসী বাংলা হোটেল পর্যন্ত অগ্রসর হন। পরে নেতাকর্মীদেরকে বিদায় জানিয়ে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওয়ানা দেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে সকালে খালেদা জিয়ার জন্য অপেক্ষমান নেতাকর্মীদের মধ্যে ২৫ জনকে শাহবাগ থানা পুলিশ আটক করেছে। তাদেরকে অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখানো হতে পারে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
শেখ হাসিনা ভয় পান না : আওয়ামী লীগ
বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে নিয়ে দেয়া বক্তব্যে মানহানির অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে বিএনপি।
উকিল নোটিশের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনা এগুলো ভয় পান না। এ উকিল নোটিশ চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। আইন তার নিজের গতিতে চলবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা উকিল নোটিশ, জেল এগুলো ভয় পান না। যেটা সঠিক, যেটা বাস্তব সে কথায় তিনি বলেছেন। যদি উনি (খালেদা জিয়া) উকিল নোটিশ দিয়ে থাকেন, তাহলে আইন তার নিজের গতিতে চলবে। সেটা আদালতে প্রমাণ হবে।
উকিল নোটিশের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, এতেও খালেদা জিয়ার শেষ রক্ষা হবে না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এফবিআই সাক্ষী দিয়েছে, বিদেশ থেকে টাকা আনা হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে দণ্ডিত আসামি। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে টাকা আত্মৎসাতের মামলা চলছে।
এরপরও কি তাদেরকে আমরা বলবো, উনারা ভালো মানুষ? এরপরও যদি বলা হয় তারা দুর্নীতিবাজ না, তাহলে দেশে দুর্নীতিবাজ ছাড়া কোনো মানুষই পাওয়া যাবে না। তারা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, এগুলো তাদের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। প্রমাণিত দুর্নীতিবাজ।
jagonews24