তুর্কি প্রধানমন্ত্রীর সাথে কী নিয়ে আলোচনা খালেদা জিয়ার

বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদ্রিমের সাথে বৈঠক করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোয়া ৬টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনের জেরুসালেম ইস্যু নিয়েও বৈঠকে কথা হয় বলে জানা গেছে।

বৈঠকে বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও ড. এনামুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে কিভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায় সেই ইস্যুতে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং মিয়ানমারের সাথে কথা বলতে এখানে এসেছেন।

আপনারা জানেন যে- প্রথম থেকেই তুরস্কের সরকার ও জনগণ রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে অত্যন্ত সহানুভুতিশীল। রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে ফিরে যেতে পারে সেই জন্য তারা প্রথম থেকেই কাজ করেছেন। তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এখানে এসেছিলেন। তারপরই কিন্তু বিষয়টা গোটা বিশ্বে নাড়া দিয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি কেমন চলছে এ নিয়েও তাদের সাথে আলাপ হয়েছে। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে কী অবস্থা দাঁড়াবে? এই নির্বাচনে বিএনপির ভুমিকা কী থাকবে? সরকারের ভূমিকা কেমন আছে? দেশ কেমন চলছে? একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে জন্যে কি ভূমিকা পালন করছে সরকার? এই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পারস্পারিক আলোচনা হয়েছে।

আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কী ভূমিকার কথা তুরস্ককে জানিয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি। তারা তাদের মত বলেছে।

রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তুরস্ক আন্তর্জাতিকভাবে কী ভূমিকা রাখছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব জানান, তারা মনে করেন রোহিঙ্গাদেরকে সসম্মানে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য একটি স্থায়ী সমাধান করা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে তারা আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলোর সাথে কথা বলছে।

ফিলিস্তিনের জেরুসালেম ইস্যুতে কোনো কথা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ইস্যুতে তারা সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনের পক্ষে রয়েছেন।

প্রায় পৌনে এক ঘন্টা বৈঠক হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। বৈঠক চলাকালে হোটেল সোনারগাঁও এবং এর আশেপাশে কঠোর নিরাপত্তা চোখে পড়ে।

তিন দিনের সফরে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছান তুরস্কের প্রধানরমন্ত্রী। একটি বিশেষ বিমানযোগে তিনি ঢাকায় পৌঁছলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তাকে হযরত শাহজালাল (রহ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখার পাশাপাশি এ বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী এ সফরে এসেছেন।

আগামী বুধবার তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবেন। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় তুরস্ক এক লাখ ২৫ হাজার আবাসনের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সোচ্চার রয়েছে তুরস্ক। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানের স্ত্রী বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin